দেশের পাঁচটা রাজ্য এই মুহূর্তে কোভিড অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গে টালমাটাল। এরাজ্যেও গত দুসপ্তাহে নতুন কেসের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। আমরা দেখেছি পশ্চিমের দেশগুলো অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গে কতটা বিপর্যস্ত। গত শতাব্দীর স্প্যানিশ ফ্লু অতিমারীতেও দ্বিতীয় তরঙ্গ সবচেয়ে বিধ্বংসী ছিল। এইসময় সামনে এল নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশন সমস্ত নির্বাচনকর্মীদের কোভিড ভ্যাকসিন দেবার কথা ঘোষণা করেছে, সে কাজ শুরুও হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকর্মীদের একটা বড় অংশের মধ্যে ছদ্ম-নিরাপত্তাবোধ কাজ করছে। কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন, উভয় ক্ষেত্রেই একমাস অন্তর দুটো ডোজ। আর দ্বিতীয় ডোজ নেবার মাসখানেক বাদে প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিকঠাক গড়ে ওঠে। যতজন টীকা নেবেন, তাঁদের সকলেরই যে যথেষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠার আগেই তাঁদের ডিউটি পড়বে।
নির্বাচনকর্মীদের সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশী সংখ্যায় রাজনৈতিক কর্মী প্রচারের কাজ করবেন, বেশীদিন ধরে। তাঁদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশী। নির্বাচকমন্ডলীরও ঝুঁকি থাকবে, বিশেষতঃ ভোটের দিনে, ভোটের লাইনে, বুথের ভিতরে ও ইভিএমে।
বিশ্বের অর্ধেকের বেশী দেশ এখনো টীকা পায়নি। আফ্রিকা মহাদেশে অন্ততঃ স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে সত্বর টীকা পায়, তাই প্রত্যেকটা উন্নত দেশের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছে নিজেদের বরাদ্দ থেকে পাঁচ শতাংশ ডোজ ওদের দান করতে। সুতরাং চাইলেও সবাইকে টীকা দেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়।
তাই যা করণীয় –
১) আপনার পালা এলে টীকা নিয়ে নিন। কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন বাছবিচার করবেন না, সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দুটো টীকাই নিরাপদ।
২) দূরত্ববিধি মেনে মিটিংয়ের মাঠ বাড়ান, মিছিল লম্বা করুন।
৩) একটার বদলে দুটো মাস্ক একসাথে পরুন। কানে ঝুলিয়ে বা থুতনিতে নয়, নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরুন।
৪) নেতা ও সংগঠকদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে সব কর্মী এগুলো মেনে চলেন, বুথে যাওয়া অব্দি এবং তারপরেও সকলে সুস্থ থাকেন।
৫) কমিশন সর্বাধিক পাঁচজনকে বাড়ি-বাড়ি প্রচারের অনুমতি দিয়েছে। নিজেরা মেনে চলুন, অন্যদের মানতে বাধ্য করুন।
৬) ভোটার স্লিপ, লিফলেট ইত্যাদির বিকল্প হিসেবে যেখানে সম্ভব, হোয়াটসঅ্যাপ বা এসএমএসের মত ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন।
৭) কমিশন যাতে প্রত্যেক বুথে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখে তা দেখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলি পোলিং স্টেশনের বাইরে তাদের ক্যাম্পেও এসবের ব্যবস্থা রাখুক।