ট্রাফিক সিগন্যালের নিচে দাঁড়ানো
জগমগে মেয়েটার
বুকের খাঁজে চেসমীর গন্ধ —
চোখের নিচে গভীর কালিমা।
অন্যমনস্ক ভাবে তাকিয়ে —
সামনে ধর্মতলার চলমান জনস্রোত।
হঠাৎ টান পড়ে সস্তা শিফনের আঁচলে।
বছর পাঁচেকের এক বৃদ্ধ বালক,
খড়ি ওঠা গা, মাথায় লালচে জট —
এক হাত দিয়ে দেখাচ্ছে পেট আর হাঁ করা মুখের গহ্বর।
মেয়েটা চোখ ফেরাতে যাবে,
এমন সময় কানে বাজল ডাক —
“মা! কিছু দে না মা, সকাল থেকে কিচ্ছু খাইনি মা, জানিস —“
ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে দু’আঙুলে বার করে আনে একটা দুমড়োনো দশ টাকার নোট, ওর সর্বোচ্চ উদারতা।
নাচতে নাচতে ধাবমান ট্রাফিক গলে ছুটে যায় ন্যাংটো শৈশব —
সেই মুহূর্তে মেয়েটার চোখাচোখি হয়ে যায়
পাশেই দাঁড়ানো এক বৃহন্নলার সাথে।
মিঠে হাসি, সামান্য উৎকন্ঠ দৃষ্টি বিনিময় —
সিগন্যাল লাল হয়েছে,
রাস্তা পেরোতে পা বাড়ায় প্লাস্টিক জননী।
প্লাস্টিকের চটিটায় ব্যথা লাগে,
জানান দেয় বুড়ি আঙুলের পুরোনো কড়াটা।
জনস্রোতে ভেসে যেতে যেতে,
মেয়েটা ভাবতে থাকে,
একবার ফিরুক সে,
চুমু খাক ব্যথার
কড়াতে —
যত্নে মুছিয়ে দিক টুটাফাটা সব ইতিহাস,
আরো একবার ঘাম আর বিড়ির গন্ধে
ছত্রাকের মতো গজাক বিশ্বাস।
একবার,
শুধু একবার।
(পুরোনো লেখা, ২০২০)