সেদিন এমার্জেন্সি নাইট চলছিলো। তখন মধ্যযাম। বাইরে বৃষ্টি পড়ে চলেছে মুষল ধারাতে। মেইন গেটটা আলতো ক’রে ভেজিয়ে রাখা। তার ঠিক পাশটিতে বসে বসে গল্প করছেন চতুর্থ বর্গের কর্মীরা। মোবাইলের স্পিকারে আগাজ ছেড়েছেন সাজন-এর শানু – “ক্যায়সে কঁহু, বিনা তেরে, জিন্দেগী ইয়ে কেয়া হোগি/ জ্যায়সে কোই সজা, কোই বদ্দুয়া হোগি।”
এইঘরে মাথার উপরে চারখানা ফ্যান। বাইরের প্যাসেজে রয়েছে আরো চারখানি। তাদের সমবেত ঘূর্ণন ধ্বনি, যোগ্য সঙ্গত করে চলেছে রাত্রির এই মেহফিলের।
আমার সম্মুখস্থ টেবিলটির ওপরে ‘কাঠ’ রঙের সানমাইকা। তাইতে ইতিউতি দাগ কলমের। এক্কেবারে কোণার দিকে একখানি অপটু হস্তে রচিত কেশবতী কন্যে। তার মেঘবরণ চুলগুলিকে কে জানি মুছে দিয়েছে বড় নির্দয় ভাবে। মন্দ দ্যাখাচ্ছে না তা’তে যদিও। বেশ একটা স্মাজড এফেক্ট এসেছে ঘষাকাঁচ মার্কা রহস্যের। “এবার, অবগুন্ঠন খোলো” টাইপের ব্যাপার স্যাপার। আর রয়েছে একখানি স্টেথো, একটি আলপিনের কৌটো, একটা হ্যান্ড-রাব এর বোতল এবং একটি বই। রবিশংকর বলের ‘ছায়া পুতুলের নাচ’। এ বই বড় প্রিয় পুস্তক আমার এ জগতের। এ বই আমি ফিরে ফিরে পড়ি বারে বারে বুঁদ হয়ে হয়ে। আপাতত সেই বুঁদ নেশার জাবর কাটছি চোখ খুলে রেখে । আর বইটির বুকের ভিতর একফালি কাগজ গুঁজে রেখে দিইছি পেজমার্ক হিসেবে। কাগজটা আদতে হাসপাতালের ‘গেট-পাস’। পুরোনো। কেউ ফেলে টেলে চলে গেছে বোধহয় ভুল ক’রে।
বৃষ্টির দমকা-টা কমে যাচ্ছে মাঝে মধ্যে। বরিষন শব্দ ছাপিয়ে, সেই সময়গুলোতে তীব্র হয়ে উঠছে রেইন ওয়াটার পাইপের ছড়ছড়াৎ। এবং পেশেন্ট ঢুকছে ট্রলিতে চেপে। সঙ্গে টর্চ হাতে পুরুষ। মাথায় ঘোমটা টানা নারী। সে ঘোমটা যদি কপালের ওপর দিয়ে গিয়ে, কানের পিছন দিয়ে চলে যায়, তবে এঁয়ারা মুসলিম। আর যদি হয় স্রেফ সংস্কারগত কারণের ‘এলো-ঘোমটা’, তয় হিন্দু।
এইখানে বলে নেওয়া ভালো, জাতি ধর্ম অনুসারে আমার চিকিৎসা পদ্ধতির ফারাক হয় না। এসব আমি দেখি, মানুষকে লক্ষ্য করার অভ্যাসে। আমার ভালো লাগে, চরিত্র পড়তে। সেদিনই যেমন ফিরছিলাম রিক্সা চেপে। একা থাকলেই আমি রিক্সাতে চাপি। টোটোর চক্করে, এরা ক্রমে ক্রমে উধাও হয়ে যাচ্ছে দুনিয়া থেকে। আর বড়োজোর বছর পাঁচ দশেক। তারপর বঙ্গীয় ইতিহাস বইয়ের পাতায় এদের স্থান হবে হাঙরমুখী নাও, গয়না-নৌকা আর ডাকহরকরার পাশাপাশি। সময় থাকতে থাকতে তাই চাট্টি চেপে নিই আমি। আরাম করে গল্প জুড়ি প্যাডেলরত “ওয়ালা”র সাথে। এটা একপ্রকার রইসি। বাবুয়ানি।
বাজার ফেরতা বাবু চলেছেন রিক্সাসীন হয়ে। পা-দানিতে কেৎড়ে পড়ে আছে একখানা পেট মোটা থলে। কচি লাউয়ের ডগা আর ঢেঁকিশাকের আকর্ষ উঁকি মারছে সে থলের মুখটি থেকে। বাবুটির হাতে সাবধানে ঝুলছে, আরো একখানি থলে। থলে না ব’লে, একে থলি বলাই সমীচিন। কারণ এইটি সাইজে ছোট্ট। ওর মধ্যে আছে কানকো তুলে পরখ করে নেওয়া টাটকা রুই মাছের রক্ত-শ্লেষা মাখা খন্ড। কিংবা সিনা রাং আর গর্দানের কচি পাঁটার দেহাংশ। তেমন তেমন ভাবতে চাইলে, পাৎলা খোলার ‘আসাম চিংড়ি’ বা তেল চপচপে রুপোলি শস্য হতেও বাধা নেই খুব একটা। কল্পনাকে আটকাচ্ছেটা’ই বা কে! মোটমাট কথা, বাবুটি আমাদের এইবারে, ঘর-দুয়ারে, পাজামা সামলে নামলেন। কুড়িটাকার উপরে আরো একখানা খয়েরি দশ গুঁজে দিয়ে বললেন–“ঠিকাচে? খুশি?” এটাও, একপ্রকার রইসি।
তো সেইরকমই সব ভেবে নিতে নিতে রিক্সা চাপি আমি আজও। সেদিনও চাপলাম। এই রিক্সাটি স্ট্র্র্যাটেজিক্যালি বেছে নেওয়া। এর পিছনে লালবর্ণ মসিতে লেখা আছে–“চল গোরি। আশ্চর্যের প্রতীক।” এইরকম অদ্ভুত বাক্য আমি শুনিনি জীবনে। রিক্সায় উঠে কি উঠেই তাই বললাম–“চল গোরি কী জিনিষ কাকা? আশ্চর্যের প্রতীক?”
কাকা দেখলাম জবাব দিচ্ছে না। প্যাডেল চালাচ্ছে পাছা উঁচিয়ে। অথচ…মুখ দেখে তো ভালোমানুষই মনে হয়েছিলো। কাঁচুমাচু গোছের ভালোমানুষ। তয়, রা কাড়ে না ক্যান? আমি, প্ল্যান বি তে চলে গেলাম।
–বাড়ি কোথায় কাকা?
এবার উত্তর মিললো। এক শব্দের।—“দেবনগর।”
হোক গিয়ে এক শব্দ। আমি মুহুর্মুহু প্রশ্নবাণে ছ্যাদড়া ভ্যাদড়া করে দিলাম কাকার আপাত গাম্ভীর্যের ডিফেন্স। জেনে গেলাম কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কাকার বাড়ি নেই। কাকা থাকে উঠোনে। লোকের বাড়ির উঠোন। পরিচিতর বাড়ি। দেবনগর এলাকায়। কাকার বউ বাচ্চা সবই ছিলো। এখন নেই। কেন নেই জানি না। হয় মরে গ্যাছে, নয় পালিয়ে গেছে। উভয়ই সমান। মোটমাট কথা –নেই। এ বিষয়ে বেশি খোঁচানোটা ঠিক হবে না। বেমক্কা আঘাত লাগতে পারে। হয়তো বউয়ের আশনাই ছিলো পরপুরুষের সাথে। কিম্বা হয়তো পুণ্যবতীর মতো মরেছে চওড়া সিঁদুর নিয়ে। কিংবা হয়তো কাকা-ই মদ টদ খেয়ে পিটিয়ে মেরেছে নেশার ঘোরে। সকালে উঠেই ক্যাচ কট কট। হাতে স্টিলের হাতকড়া। আর খোঁয়ারি কাটা চোখদুটি জুড়ে অনুশোচনার অশ্রু —“ক্যান বাইচা থাকলাম! বউডা আমার বড়ো ভালো ছিলো গ”।
এরকমই হাজার কিসিমের ঘটনা থাকতে পারে এই সামান্য “নেই” নামক শব্দটির পিছনে। থাকুক গে। আসল ইনফারেন্স এইইই যে, কাকা এখন ‘উঠোনে থাকে’। বাড়ি ফেরার আগে লাইটারে গ্যাস ভরাবে বলছিলো একটু আগেই। তার মানে বিড়ি খায়। অথবা গাঁজা। মধ্যরাতে খুকখুকিয়ে কাশতে কাশতে বেবাক চেয়ে থাকে তারার দিকপানে। হাতে, নিভন্ত-জ্বলন্ত আগুণ-ফুলকি।
হয়তো কাকার তখন “ভর” হয়। ধুনকি আসে। এক্কেবারে একলা থাকে যে মানুষটা সমস্ত দিনভর আর একলাটে রাত কাটায় উঠোন শয্যাতে, সে মানুষ যে কম কথা বলতে ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে উঠবে, এতে আর এমন আশ্চর্যের কী! বরং এইটেই তো স্বাভাবিক। কাকা আমাদের তাই মধ্যরাত্তিরে কথা বলে ঈশ্বরের সাথে। অ্যাম সিওর। পাক্কা।
সেসময় কাকা বাহ্যজ্ঞান রহিত। চোখে মুখে কাকার তখন নক্ষত্রের আলো। হাতে পায়ে জমাট রাত্রি। কাকা বলে ওঠে – “আ..আহঃ, বেশ হাওয়া ছাড়সে তঃ। বিষ্টি নামবে অ্যাবারে….ভিত্রের দিকে সইরা শুই …
লাইটারটা শালা কই গ্যাল্?”
এসব কথার উত্তর দ্যায় না কেউ। বরং আরেকটু রাতে, বিষ্টি যখন শুরু হয় সত্যিসত্যিই, একটা হলদেটে রঙের কুকুর এসে শুয়ে পড়ে একপাশে। লোমগুলো, গন্ধ-গন্ধ ভেজা ভেজা। এসবের কিছুই চর্মচক্ষে দেখতে পাওয়া যায় না অবশ্য। শব্দ শুনে ঠাহর করতে হয় মনশ্চক্ষে। আমার নয়। কাকার।
ক্রমে ভোর হয়। ফজরের আল্লাহ। নদীর সুবাস। ভোরের প্রথম বাতাসে, ঠাকুরের পরশ থাকে। বাতাস ভর ক’রে, সংসারের সর্বত্র মায়ার পরশ বুলিয়ে দিয়ে যান ‘তিনি’। ভোরের বাতাস তাই সর্বদাই বড় প্রাণজুড়ানো। ঠান্ডা। হালকা। মিছরি ভেজানো জলের মতো পাতলা মিষ্টি। এইসময়েই উঠোনোর দুই কোণায় কুন্ডলী পাকায় আধোঘুমঘোরে দুইটি প্রাণী। কুকুরটির লোম আছে। কাকার আছে–চাদর। সেসবের উপরেও “পরশ তব” ছুঁয়ে যায় আলগোছে। আর ঠোঁটের কোণাতে আলগা হাসি নিয়ে কাকা, স্বপ্নাদ্য বাক্য পায় দুইখানি।
“চল গোরী। আশ্চর্যের প্রতীক।”
কিংবা গল্পটা হয়তো এক্কেবারে আলাদা। তবে সে গল্প আমি জানি না। কাকার থেকে টুকরো টাকরা পাওয়া তথ্য জুড়ে জুড়ে, এই গল্পটিই আমি গড়ে নিই মনে মনে। আমার লাইব্রেরিতে ফাইল বন্দী হয়ে থাকে আরো একখানি মুখের কাহিনী।
আমি এভাবেই মানুষ আঁকতে ভালোবাসি। নইলে, একটা মাথা, দুটো হাত , দুটো ঠ্যাং… অমনটা সবাই পারে। ওতে, মজা নেই তেম্নি।
তো বরিষন মুখর সেদিনের এমার্জেন্সিতে, এমনই সব গল্পওয়ালা মানুষ-পত্তর আসছে যাচ্ছে। একটি মেয়ে এলো। মনের কষ্টে হাতের সামনে যা পেয়েছে, খেয়ে নিয়েছে। আত্মহত্যা করবে। তেমন কিছু পায় নি যদিও। একপাতা আয়রন ট্যাবলেট। চারটে বমির ওষুধ। নিয়েছে ঝোঁকের মাথায় খেয়ে। তারপর একরাশ লোকলজ্জা। মরা হলো না কিছুতেই। উল্টে গল্প শুনিয়ে গেলো আরেকখানি অদেখা জীবনের।
সরকার থেকে পাওয়া টাকায় মোবাইল কিনেছিলো জোর ক’রে। রাত দিন তাই নিয়ে খুটুর খাটুর। আজকে, মা দিয়েছে পিট্টি। আর তাই মেয়ে খেয়েছে– বিষ।
মেয়েটা খুব খানিক কাঁদলো। বোঝালাম। বুঝলোও। বললো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে –”আর করুম না।” যাওয়ার আগে জিজ্ঞেস করলাম–“কোন কোম্পানির ফোন?”
–“লাভা”
–“টাচ স্ক্রিন?”
–“এহঃ, অতো পাইসা নাই। এম্নি ফুন। ছোটো” হাসলো এই প্রথমবার মেয়েটি। কিশোরীর হাসি। তীক্ষ্ণ ওর বাঁশির মতো নাক। এ নাকে হীরের নাকছাবি থাকলে মানাতো দুর্ধর্ষ। ঝিকিয়ে উঠতো ঝকঝকে গৌরবে। কিন্তু নেই। এমনকি একটা ফুটো পর্যন্ত করা নেই নাকের পাটাতে। ধুস ! বর বেচারিকে ক্লিপ লাগানো ‘নোস-পিন’ কিনে দিতে হবে বাজার ঢুঁড়ে বেছে।
ওদের সুখী দাম্পত্য জীবনের কথাখানি মন-লাইব্রেরির ফাইলে লিখতে লিখতে চেয়ারে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লাম কেতরে। আহা! জমিয়ে বৃষ্টি পড়ছে বাইরে। কি দাপট! যেন শরক্ষেপ করছেন কৌন্তেয়। যেন গলা সাধছেন বড়ে গুলাম আলি। যেন,বাটনা বাটছেন সেকেলে সাধ্বী গিন্নীমা।
দিব্যি ঘুম ঘুম এসে গিছ্লো। হাতে দেখি কী একটা সুড়সুড় করছে। চোখ খুললাম। উরিত্তারা। এ যে পিপীলিকা। হ্রস্ব ই, দীর্ঘ ই, হ্রস্ব ই। পিপীলিকা ডানা মেলে মরিবার তরে। ইহারও দেখিলাম ডানা গজাইয়াছে। পাৎলা পাৎলা ফিনফিনে। ইহা, ডেঁয়ো প্রজাতিভুক্ত। সম্মুখে, ভয়াল দুইখানি দাঁড়া। দংশিলে, বিষময় জ্বলন অবধারিত। টানিয়া ছিঁড়িয়া ফেলিলেও, মস্তকখানি কামড়াইয়া ধরিয়া থাকিবে গাত্রচর্মকে। উহাকেই হয়ত বা মরণ-কামড় কহে। অতএব, ইহাকে সত্ত্বর সরাইয়া ফেলাটাই সমীচিন।
ঝাড়া দিলাম। পিঁপড়েটা এট্টুখানি উড়ে গিয়েই টেবিলে গিয়ে বসলো। সর্বনাশ করেছে। এ তো দেখছি গিজগিজ করছে ডানওয়ালা পিঁপড়ে। এদিক সেদিক টেবিলে-মেবিলে। বৃষ্টিতে ঘর ভেঙেছে বোধহয় ব্যাটাদের। আসপাশেই বোধহয় পিঁপড়ে কলোনী আছে দস্তুর রকম। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ জায়গাটা এককালে জঙ্গুলেই তো ছিলো। শ্মশান পেরিয়ে বাঁক নিলেই নদী। নদীর উপরে ব্রীজ। ব্রীজ পেরিয়ে টিবি হাসপাতাল। আর সেই হাসপাতালের ইন-চার্জ আমি। এখানে তখন সব স-ব ছিলো। বেজি, গোখরো, বসন্তবৌরি, প্যাঁচা, পিঁপড়ে, কাঠঠোকরা।
একটা শিমুল গাছ ছিলো…এখনো আছে…কিন্তু গাছে আর শুঁয়োপোকা নেই। কিন্তু তখন ছিলো। হাওয়া দিলেই ভাসতে ভাসতে এসে পড়তো এদিক সেদিকে। দক্ষিণের জানালাটা তাই বন্ধ থাকতো ওয়ার্ডমাস্টারের ঘরে। তখন তো ভূতও ছিলো। টোকা দিতো ভর দুপুরে। বাইরে তাকাও। কেউ নেই। ঘুর্নি বইছে মাঠের মাঝে। জিপসি রমণীর ন্যায় পাকে পাক দিয়ে ধুলোর ঝড় তুলছেন প্রকৃতি ঠাকরুণ।
তারপর তো এখানে দশ তলা সুপার স্পেশালিটি হলো। ভাতের হোটেল হলো। সাইকেল স্ট্যান্ড, যাত্রী নিবাস, লটারির কাউন্টার, অষ্টধাতুর সর্বরোগহরা আংটির দোকান…সব হলো। হোক হোক। লে শালারা লুটেপুটে। এলোমেলো করে দে সবটুকু।
হাওয়ার তুর্কী নাচন থেকে শুরু করে শুঁয়োপোকার বাতাস-ভ্রমণ, সবটাই এখন উধাও। পিঁপড়েগুলোই যা দেখছি…টিকে রয়েছে এখনও। বর্ষা রাতে রোঁদে বেরিয়েছে সবান্ধব। এদেরও নিশ্চয়ই গল্প আছে একটা। ভিটে কামড়ে পড়ে থাকার গল্প।
“……যাই নাই কত্তা…পলাই নাই মাটিটুক ছাইড়ে….বাপ পিতেমোর আবাস…যাই নাই। আছি। থাকুম। গপ্পো শনবেন? এগ্বার, বাদলার দিনে… কর্লা নদীতে জল উঠসিলো স্যাবার খুব…….”
আমাকে গল্প শোনাতে থাকে এইবারে পিঁপড়েরাও। আমি, ফাঁকা এমারজেন্সিতে কল্পাশ্ব ছোটাই কাঁটাতার পেরিয়ে…।