এটা স্বাভাবিক যে যীশু খ্রিস্ট-এর কোনও ছবি ছিল না। এটাও স্বাভাবিক যে “আপন মনের মাধুরী মিশায়ে” তাঁর প্রতিকৃতি রচনার সময়ে শিল্পীরা অবাধ স্বাধীনতা উপভোগ করেছেন। ক্লাসিক্যাল হেলেনিস্টিক মডেল অনুযায়ী যীশুকে আঁকা হয়েছিল খাড়া নাক, পাতলা ঠোঁট, নীল চোখ, সোনালী চুল এর এক দিব্যকান্তি পুরুষ হিসেবে, দীর্ঘদেহী, চওড়া কাঁধ।
রেমব্রা প্রথম এই মডেলের বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেন। তাঁর যীশুর চুল গাঢ় বাদামি বা কালো, কাঁধ এত চওড়া নয়, কিছুটা গোল, নাকও অত তীক্ষ্ণ নয়। কিন্তু তার যীশুর গায়ের রঙ কালো নয়, বা গাঢ় বাদামি নয়, বড়জোর তামাটে।
আমরা ভুলে যাই যে যীশু একজন এশীয় সেমেটিক ফিলিস্তিন ছিলেন। তাঁর চুল কালো ও নাক চওড়া, চোখ কালো, গায়ের রং বাদামি হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। রেমব্রার এই চেষ্টা সত্ত্বেও কিন্তু সারা বিশ্বের যত যীশুর ছবি আছে, মূর্তি আছে তাদের অধিকাংশই সোনালী চুল নীল চোখের যীশু। এটাই ডমিনেটিং কালচার।
আফ্রিকার কালো মানুষরা, ভারতের বাদামি মানুষরা আজ গির্জায় গির্জায় যখন সমবেত হবেন তখন তাদের সামনে সোনালী চুলের সেই রূপবান যুবকের ছবিই টাঙ্গানো থাকবে। হায় ! কে যেন বলেছিলেন- “আমি রূপে তোমায় ভোলাবো না, ভালোবাসায় ভোলাব।”
কালো চুল, চোখ, থ্যাবড়া নাক, পুরু ঠোঁট এর মানুষও ভালোবাসতে জানে, ভালোবাসার কথা বলতে জানে। আমাদের মতো করে আমাদের যীশু। সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা।