চলভাষ
———–
নিজে নিজে সরে যাই অন্ধকারে … গভীর গোপন
শীতলতা মেখে নিয়ে। স্বেচ্ছাচারী সে উদাসীনতা
ভাঙবে বলেই বুঝি প্রগলভ এই মুঠোফোন
মাঝে মধ্যে বলে ওঠে … কথা আছে … দরকারি কথা
বিস্মৃতি
———–
সদরে দিয়েছি তালা, অন্যদিকে খিড়কি যে খোলা
বহুদিন পরিচিত তাই এখবর তার জানা
কোথায় রয়েছে পিঁড়ি … হাঁড়িকুরি … কোথায় বিছানা
কেন এলোমেলো সব … দরজায় ও কার মেখলা?
বাৎসরিক
—————
বরফের দেশ থেকে ফি বছর উড়ে এসে পাখি
প্রথামত ঘোরে ফেরে আমাদের নদী ও জলায়
আমি যে বদলে গেছি, এখবর সে জেনেছে নাকি?
তাই বুঝি বিচ্ছেদের গান সেই পাখিরও গলায়
প্রেম অপ্রেম
——————
বাতাসের কাছে কিছু ঋণ ছিল বিবাগী মেঘের
তাই সে বিদ্যুৎচিহ্ন এঁকে দিল আকাশের ফ্রেমে
ঋণমুক্ত হয়ে মেঘ সমতলে নেমে আসে ফের
অযথাই ঘোরে জল প্রেম চক্রাকার প্রেমে অপ্রেমে
চেতাবনি
————–
উত্তুরে বাতাস লাগলে বাসন্তী রঙের আঁচলে
গুটি কেটে প্রজাপতি হয়ে যাবি যতেক বালিকা
লোভী পৃথিবীর হাত ছোঁবে তোকে। বাড়িতে যা চলে …
অনভিজ্ঞতার বশে বাড়াস না ভুলের তালিকা
প্রাকৃতিক
————–
আসলে ফিজিওলজি লোকে যাকে ভাবে অনুরাগ
কৌতুহল মিটে গেলে বলা যায় … যাও চলে যাও …
ছেড়ে যাওয়া কঠিন না, শুধু আসবার সেই দাগ
থেকে যাবে কিছুদিন। ক্রমশ মিলিয়ে যাবে তাও
অভ্যাস
————
সুরঙ্গের মধ্যে সাপ। গুহামুখে অপেক্ষায় বসে
তুষার দাঁতের শীত। সাপ তার এতটা বয়সে
সার কথা জেনে গেছে দীর্ঘ নিদ্রায় যেতে হবে।
বছরে বছরে গ্রীষ্ম খোঁজ নেয় … ঘুম ভাঙ্গবে কবে …
বন্ধ্যাকরণ
—————
রন্ধ্রপথে মৃত্যু আসে … বন্ধ কর এখন … এখুনি
বৈদ্য নিদান দিল … দেরি নয় আর একদমই
প্রতিমাসে নিয়মিত জ্বলে তবু ঘন লাল চুনি
যদিও বন্ধ্যা আজ, তুমি ছিলে দোফসলা জমি।
আশ্রয়
———-
ছাদে পিঠপোড়া রোদ … ঘরে এলে শীতল আঁধার …
দুজনই দংশন করে। তবে আমি কার কাছে ফিরি?
দংশনের সুখজ্বালা অসহ্য লেগেছে আমার
ঘর নয় … ছাদও নয় … আশ্রয় তাই আজ সিঁড়ি
নিয়ম
———
অলীক বর্শা বুকে বিঁধে গেছে এফোঁড় ওফোঁড়
রক্তপাত নেই তত। বেঁচে গেছে প্রধান ধমনী।
দাহভরা বিষ ছিল বর্ষার ফলার ওপর
বাঁচিয়ে রেখেই মারবে, সে বিষের নিয়ম অমনই
ঋণশোধ
————–
প্রবল খরার মধ্যে মেঘরঙ বর্ণমালা এসে
ভাসিয়ে দিয়েছে ভেলা … ভাসিয়েছে সব বৃষ্টিদিন
এবার সময় হল। ভুলে যাওয়া শব্দদের ঋণ
তোমাকে ফেরত দেব সে’ মেঘের গোপন আদেশে