১৩ই নভেম্বর, ২০১৩
সকাল সাড়ে দশটা, হাওড়ার একটা নার্সিং হোমে
– হ্যালো ম্যাডাম?
– হ্যাঁ বলো, তুমি ওকে অ্যাডমিট করে দিয়েছ তো?
– হ্যাঁ করেছি, বলছি অপারেশনের আগে কি ওর একটা চেস্ট এক্সরে করানোর দরকার ছিল?
– তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে অনির্বাণ? এই অবস্থায় মেয়েটার এক্সরে করবে? খুব বেশি টেনশন করছ। সব ঠিক থাকবে, আমি একটু বাদে ঢুকছি।
সত্যিই সিজারিয়ান সেকশনের আগে গর্ভবতী মহিলার এক্সরে করে নাকি কেউ! এতে তো গর্ভে থাকা সন্তানের ক্ষতি। সার্জারির ডাক্তারবাবু এটা বইতে পড়েছিল। কিন্তু নিজের স্ত্রী যখন তাদের প্রথম সন্তানকে জন্ম দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে তখন সেও একজন খুব সাধারণ মানুষ, কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাবা হতে চলেছে। তাই ডাক্তারি জ্ঞানটাও তার লোপ পেয়েছে। তাই অবস্টেট্রিশিয়ান ডাঃ মৌসুমি নন্দীকে এরকম বোকার মতো প্রশ্ন করে বসে।
ফোনের উল্টোদিকের মানুষটি কিন্তু সেই আমার উৎকন্ঠাটি ধরতে পেরেছিলেন। জয়িতার প্রেগনেন্সির প্রথম দিন থেকে সেই মায়ের মতো মানুষটি ওকে আগলে রেখেছিলেন। বাচ্চা কেন কম নড়ছে, কেন বেশি নড়ছে, কি খাব, কি খাব না, কেন পিঠে ব্যথা হচ্ছে..সময়ে অসময়ে জয়িতার ছোট বড় সব প্রশ্নের উত্তর হাসি মুখে দিয়ে গেছিলেন।
১৩ই নভেম্বরের সেই দিনটাতে সেই মৌসুমি ম্যাডামের হাতেই আমার বেটুর জন্ম হয়। তারপরেও অনেক কারণে অকারণে দরকারে অদরকারে অনেক জ্বালিয়েছি ওনাকে। কিন্তু কখনও বিরক্ত হতে দেখিনি। নিজের দিদির মতোই মনে হয়, বিদেশে আসার পরেও এখনো যোগাযোগ আছে। এমন একটা মানুষকে জীবন থেকে আলাদা করা যায় নাকি?
২১শে নভেম্বর, ২০১৩
আটদিনের বেটুকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করতে হল। জন্ডিস হয়েছে। এমন অনেক সদ্যোজাত বাচ্চারই হয়, এতে ভয়ের কিছু নেই। ভয়ের হল বেটুর শরীরে হয়ত কোথাও একটা ইনফেকশনও আছে, রক্তের রিপোর্ট তেমনই বলছে।
বেটু জন্মানোর পরে যে পেডিয়াট্রিশিয়ান ডাক্তারবাবু ওকে প্রথম দেখেছিলেন ফোনে তার সাথেই যোগাযোগ করা হল। ওনার কথা মতো হাসপাতালে ভর্তিও করে দিলাম। কিন্তু ডাক্তারবাবুটি মেয়েকে দেখতে এলেন না। হাসপাতালে জয়িতা রাত জেগে বসে রইল, বাড়িতে আমি। সারারাত ফোন করলাম ওকে, ডাক্তার এলেন? দেখলেন মেয়েকে? নাহ, সারারাতেও এলেন না। এলেন ভর্তি হওয়ার প্রায় কুড়ি ঘন্টা পরে।
দিন তিনেকের মধ্যে বেটু সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে আসে। তবে সেই পেডিয়াট্রিশিয়ান ডাক্তারবাবুর কাছে আমরা আর কখনো যাইনি।
||
ডাক্তার, শিক্ষক, পুলিশ এরা এমন পেশায় জড়িত যেখানে সাধারণ মানুষের সরাসরি সংস্পর্শে আসতে হয়। তাই এদের কাছ থেকে ঠিকঠাক পরিষেবা না পেলে মানুষের ঊষ্মাও বেশি হয়। এটা স্বাভাবিকও। কিন্তু কতটা ক্ষেত্রে এটা সঠিক?
আমি নিজে ডাক্তার হয়েই বলছি। ডাক্তারদের মধ্যে ভাল, খারাপ সত্যিই আছে। আমি নিজেই সেটা বুঝেছি। কিন্তু এই ভাল খারাপের ভেদাভেদটা পরিষ্কার নয়। ধূসর, আপেক্ষিক। কয়েকটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টাটা করলাম। আগেই বলে রাখি, এগুলো কোন কম্যান্ডমেন্টস নয়। এই লেখাতে অনেক ডাক্তারের খারাপ লাগতে পারে, অনেক সাধারণ মানুষও রাগ করতে পারেন। কিন্তু আমি নিজের পেশার প্রতি দুর্বল না হয়েই লিখলাম,
কোনও ডাক্তার ভাল, আর কোনও ডাক্তার খারাপ।
||
ধরুন আপনার খুব অম্বল হচ্ছে, পেটে ব্যথা হচ্ছে। আপনি গেলেন পাড়ার ডাক্তার বাবুর কাছে। উনি আপনাকে পেটের আলট্রাসোনোগ্রাফি করতে দিলেন। তাতে ধরা পড়ল আপনার গলব্লাডারে পাথর আছে। অপারেশন করতে হবে। এবারে তো তাহলে একজন সার্জেনকে দেখাতে হয়।
আপনার পাড়ায় একজন সার্জেন বসেন। বছর দুয়েক হল এম.এস পাস করেছেন। আবার আপনার অফিসের কলিগ খবর দিল কোলকাতার মাল্টিস্পেশিয়ালিটি হাসপাতালের একজন নাম করা সার্জেনের। বছর ষাটেক বয়স।
#১. আপনি গেলেন সেই বয়ষ্ক ডাক্তারটিকে দেখাতে।
কেন? কারণ ওনার বয়স বেশি, অভিজ্ঞতা বেশি।
আপনি হয়ত এখানে একটা ভুল করলেন।
ডাক্তারিতে বয়স বেশি হলেই জ্ঞান বেশি হবে এটা খুব মারাত্মক একটা ভুল ধারণা। আপনার পাড়ার বছর তিরিশের সার্জেনটি ষাট বছরের সার্জেনের মতোই হয়ত অপারেশনটা করতে পারতেন। কোন কোন ক্ষেত্রে হয়ত আরো ভাল ভাবে করতে পারতেন। তার কারণটা খুব সোজা। সার্জারিটা একটা স্কিলের মতো। কম বয়সে সেটা অনেক বেশি থাকে। আমি বয়স্ক ডাক্তারবাবুটিকে কোন ভাবে ছোট না করেই বলছি, কিছু ক্ষেত্রে এমন হয় যে এঁরা বইয়ের কাছে আর ফিরে যান না। প্র্যাকটিস তো ভালই চলছে, তাহলে নিজেকে আপডেটেড রেখে আর কি লাভ। অথচ ডাক্তারীর জগতে চিকিৎসা করার পদ্ধতি প্রতি পাঁচ ছয় বছরে ব্যাপক ভাবে বদলে যাচ্ছে। যার সাথে কম বয়সীরা খুব বেশি ভাবে ওয়াকিবহাল।
#২. আপনি সেই নামকরা ডাক্তারবাবুকে দেখাতে গেলেন তাঁর চেম্বারে। আপনার নাম তিরিশ নম্বরে। যখন ওনাকে দেখাতে গেলেন তখন উনি মিনিট দুয়েক দেখেই ছেড়ে দিলেন। উলটে ফিজ নিলেন বারোশো টাকা!
খারাপ ডাক্তার?
আমার মনে হয় না।
প্রথমত, আপনি নিজেই এই ডাক্তারবাবুকে পছন্দ করে গেছেন। তিনি আপনাকে আসতে বলেননি।
দ্বিতীয়ত, ডাক্তারবাবুটি নিজেই নিজের ফিজ ঠিক করেছেন। আপনি সেটা দিতে সক্ষম তাই গেছেন। এবারে আপনার খারাপ লাগছে এই ভেবে যে মাত্র দুমিনিটের জন্য আপনাকে দেখলেন উনি। মানে বলতে গেলে মিনিটে প্রায় ছ’শো টাকা নিলেন! যদি দশ মিনিট ধরে দেখতেন তাহলে কি গায়ে লাগত টাকাটা?
হয়ত না।
একটা খুব সত্যি কথা বলি, শুনতে খারাপ লাগলেও বলি। আমাদের সব রুগীকে দেখতে সমান সময় লাগতে পারে না। কারোর সাথে মিনিট দুয়েক কথা বললেই বুঝি রোগটা কোথায়, কি করতে হবে। আবার কাউকে মিনিট পনেরো পরীক্ষা করার পরেও আমরা নিজের মনের মধ্যে মাথা চুলকোই। প্রতিটা রোগ আলাদা, প্রতিটি রুগী আলাদা। কিন্তু সবার জন্য আলাদা পারিশ্রমিক তো আর নেওয়া যায় না।
এবারে এখানে ডাক্তারবাবুটিরও দোষ আছে বই কি। আমার চেম্বারের সময় দু’ঘন্টা। তার মধ্যে আমি যদি তিরিশ জনকে দেখতে চেষ্টা করি সেখানে সবাইকে সমান পরিষেবা দেওয়াটা সম্ভব নয়। আবার কুড়িজনকে দেখলে বাকি দশজনের টাকা কম পাব। এই ভেবে অনেকে রুগীর লিমিট রাখেন না।
এমন ডাক্তারকে এড়িয়ে চলুন। আবার একই কথা বলছি, নাম করা ডাক্তার মানেই ভাল ডাক্তার নয়। আর আপনার ডাক্তার আপনি নিজেই পছন্দ করেন। তাই তাঁকে দেখানোর পরে দোষারোপ করাটাও অন্যদিকে বোকামি।
#৩. আপনার ডাক্তারবাবুর ব্যবহার খুব খারাপ। আপনাকে পাত্তাই দিলেন না। খসখস করে লিখে দিলেন কি করতে হবে। অপারেশনের দিন অপারেশনও দারুণ ভাবে হয়ে গেল।
আপনার এই ডাক্তারবাবুটিও ভাল নন। ডাক্তারিটা তো আর সীমান্তে প্রাণ বাজি রেখে পাহারা দেওয়ার মতো নয়। তাই এতে গর্বিত হওয়ার বা উন্নাসিক হওয়ার মতো কিছু নেই। আপনার ডাক্তারের ব্যবহার খারাপ হলে তাঁর কাছে আর যাবেন না। তা তিনি যত ভালই চিকিৎসা করুন না কেন। কারণ সে মানুষটা ভাল না, চিকিৎসায় কোন বিভ্রাট হলে এঁকে আর পাশে পাবেন না।
#৪. আপনার ডাক্তারবাবুকে দেখানোর পরে মনে হল অনেক বেশী পরীক্ষা করতে দিলেন। এক গাদা অপ্রয়োজনীয় অসুধ লিখলেন। আপনি তাই ক’দিনের মধ্যেই অন্য আরেকজন সার্জেনকে দেখালেন।
আপনি একটা খুব বড় ভুল করলেন।
নিজের ডাক্তারের চিকিৎসা মনের মতো না হলে আরেক জনকে সাথে সাথে দেখানোর অভ্যেসটা এখন মহামারীর মতো হয়ে গেছে। একটা কথা বলি, ডাক্তার দেখানো আর দোকানে শাড়ি কেনা কিন্তু এক জিনিস নয়। এই কথাটা তেতো হলেও সত্যি যে আপনার ডাক্তারি বিষয়ে জ্ঞান শূন্যের কাছাকাছি। এটা এমন একটা জ্ঞান যেটাকে আয়ত্ত করার জন্য একজন মানুষকে ছয় বছর মাথা নিচু করে পড়াশোনা করে যেতে হয়। তারপরে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করলে আরো তিন বছর। তারপরেও পড়াশোনাটা আজীবন চলতেই থাকে। তাই আপনার ডাক্তারটির চিকিৎসা সঠিক কিনা সেটা যাচাই করার যোগ্যতা আপনার নেই। যেমন আমি কোনদিন বুঝতে পারবো না আমার গাড়ির মেকানিক্স, ল্যাপটপ খারাপ হলে আমাকে দোকানেই ছুটতে হয়, কারণ নিজে সারাবার মতো জ্ঞান আমার নেই। চুল বড় হলে আমাকে নাপিতের কাছেই মাথা পাততে হয়। কারণ সেই স্কিলটাও আমার নেই। সুতরাং এদের ওপরে বিশ্বাসটা রাখতেই হয়। তাই আপনার ডাক্তারের ওপরেও বিশ্বাস রাখুন। তাদের কেউ আপনার ব্যক্তিগত শত্রু নন। সুতরাং আপনার ক্ষতি করার কোন প্রশ্নই আসছে না।
#৫. আপনি দ্বিতীয় যে ডাক্তার বাবুটির কাছে গেলেন তাঁর ফিজ কম, ব্যবহার অনেক ভাল, আরো কম টাকায় অপারেশন করে দেওয়ার কথাও বললেন। আর বললেন যে আগের ডাক্তার বাবুটি ভুল চিকিৎসা করেছেন।
এদের মতো ক্ষতিকারক ডাক্তার আর হয় না। কোন ডাক্তারকে যদি দেখেন তাঁর পেশার অন্য কারোর নামে নিন্দা করতে তাহলে তখনই চেম্বার থেকে দৌড় লাগান। ইনি আপনার চিকিৎসা ভাল ভাবে করতে অক্ষম।
#৬. আপনি বিচক্ষণ মানুষ, তাই প্রথম ডাক্তারবাবুক দেখিয়েই থিতু হয়েছেন। উনিই আপনার অপারেশন করবেন। কিন্তু মুশকিলটা হল উনি বেশিরভাগ সময়তেই ফোন ধরেন না। একদিন রাত দশটার সময় পেটে ব্যথা হচ্ছিল, ওনাকে ফোনে পাওয়াই গেল না।
দোষটা কিন্তু আপনারই এখানে।
এই ডাক্তারবাবুটি কিন্তু বাড়িতে আর ডাক্তার নন। নিশ্চয়ই তাঁর রুগীর ওপরে তাঁর একটা দায়িত্ব আছে। কিন্তু সারাদিনের কাজের শেষে তিনি যদি ফোনটাকে দুরে সরিয়ে রেখে ডিনার করতে করতে দাদাগিরি দেখেন তাহলে তাকে দোষ দেওয়া যায় না।
আপনার ডাক্তার আপনার ইচ্ছা মতো ফোন রিসিভ করবেন এটা ভাবাটা অন্যায়। একবার কল করুন, না পেলে একটা মেসেজ করে নিজের অসুবিধার কথা জানান, উনি হয়ত কিছুক্ষণ পরে নিজেই তার রিপ্লাই দেবেন। সেটা না দিলে আপদকালীন ব্যবস্থা হিসাবে নিজের স্থানীয় ডাক্তার বাবুকে দেখান, অথবা কাছের হাসপাতালে যান।
#৭. আপনার ভায়রা ভাই আপনার রোগের খবর পেয়েছেন। তিনি আপনাকে ফোনে বললেন ধুস ওসবে আবার অপারেশন লাগে নাকি! ওনার কোন এক আত্মীয় নাকি মেথি ভেজানো জল খেয়ে পাথর গলিয়েছেন। অতএব আপনিও তাই করা শুরু করলেন। এতে কিন্তু পাথর গলল না, মাস কয়েক পরে আবার গল ব্লাডারে ইনফেকশন হল, আপনিও ছুটলেন ডাক্তারের কাছে।
অসুখে পড়লে সবার আগে যেটা বন্ধ করুন সেটা হল আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের উপদেশ শোনা। সবার বাড়িতে বাড়িতে এখন ছোটখাটো এক আধ জন ডাক্তার আছেন। এঁদের অনেকের জন্য আমি মানুষকে মারা যেতেও দেখেছি।
ওষুধের দোকানের টোটকাতেও অনেকের ভরসা থাকে। জ্বর, কাশি, পেটের গন্ডগোলের জন্য কেউ ডাক্তারের কাছে ছুটতে চায় না। কিন্তু সেগুলো দিন তিনেকের মধ্যে না সারলে একবার পাড়ার ডাক্তারবাবুর কাছে ঘুরে আসুন।
#৮. আপনি যে সার্জেনকে চেম্বারে দেখিয়ে এলেন তিনি আপনাকে বললেন অমুক জায়গা থেকেই পরীক্ষাগুলো করাতে হবে। নয়ত তিনি দেখবেন না।
কি করা যায়?
যদি সেই ল্যাবরেটরীগুলো বিশ্বাস যোগ্য হয় যেমন ধরুন ইকো বা রায় অ্যান্ড ত্রিবেদি বা সুবীর দত্ত তাহলে চোখ বুজে ওনার কথা শুনুন। যদি না হয় তাহলে ওনাকেই সরাসরি জিজ্ঞাসা করুন যে ওই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকেই কেন করাতে হবে টেস্টগুলো। কোন সদুত্তর না পেলে ওঁর কাছে আর না ফেরাই ভাল।
কোনও ডায়গনোসটিক সেন্টার মোটামুটি ভরসাযোগ্য সেটা বলা যায় যদি সেটার NABL accriditation থাকে। সেই সেন্টারের রিসেপশনে একটা ফোন করলেই খবরটা পেয়ে যাবেন।
#৯. আপনার অপারেশন হল, কিন্তু অপারেশন চলাকালীন আপনার খাদ্যনালীর একটা অংশে ফুটো হয়ে গেল। সেটা সারাই যদিও করে দিলেন আপনার সার্জেন, কিন্তু বেশ কয়েকটা দিন আপনাকে হাসপাতালে কাটাতে হল।
রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু অমূলক।
আগেই বলেছি, প্রতিটা রুগী আলাদা। প্রতিটা শরীর একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। যে কোন চিকিৎসার, তা সে যত ছোটই হোক না কেন, বিভ্রাট হয়, কমপ্লিকেশন হয়। কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের ভুলেই হয়। সেটাও স্বাভাবিক। দিনের শেষে সে একজন মানুষই। ভুল হতে পারে। সেটা ঠিক করারও আপ্রাণ চেষ্টা আমরা করি। এই সময় আপনার ডাক্তারের আরো বেশি করে প্রয়োজন হয় আপনার সহযোগিতার।
#১০. সবার শেষে একটা কথা বলি, আমি আমার আগের লেখাতেও এটা বলেছি বারবার। ডাক্তারিটা একটা পেশা ছাড়া আর কিচ্ছু না। ডাক্তার মানেই ভগবানের রূপ, এরকম ভেবে আমরা এই পেশাকে এতদিন অনেক গ্লোরিফাই করে এসেছি। নিজের লজ্জা পেলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি অনেক ডাক্তার নিজেও এতে বিশ্বাস করেন। কিন্তু এই চিন্তাধারাটাই এখন ডাক্তার আর রূগীর সম্পর্কের ক্ষতি করছে।
আপনার ডাক্তারকে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের চেয়ে একদম বেশি কিছু ভাববেন না। জানবেন সে সর্বান্তকরণে আপনাকে ভাল করার জন্যই বসে আছে। আপনার ক্ষতিতে তাঁর বিন্দুমাত্র লাভ নেই। তাঁর ওপরে বিশ্বাস রাখুন।
অবিশ্বাস ডাক্তার আর রুগীর মধ্যে দূরত্ব বাড়ায়। অবিশ্বাসী হওয়াটাও একটা রোগ। এটার চিকিৎসা কিন্তু আপনার ডাক্তার জানেন না। আপনাকেই এটা সারিয়ে তুলতে হবে।
ভালো লেখা। এটা মেনে নেওয়া উচিত।
আপনার ১৪ ই জুলাই এর লেখার শেষ দুটি ধাপ অসাধারন লেখা। গভীর অনুভূতি না থাকলে এটা লেখা যায় বলে আমি মনে করিনা। আমি আপনার এই লেখাটি আমার বিদেশে কর্মরত বহু বন্ধু কে পাঠিয়েছি। আমি আপনার ও আপনাদের এই মাধ্যমে র নিয়মিত পাঠক। আপনাকে বিরক্ত করবো না খুব প্রয়োজন ছাড়া, যদি একটু ফোন নম্বর টা দেন।