– না, না। এভাবে মাস্ক পরে থাকার চেয়ে না পরাই ভালো।
– কেন স্যার?
– আপনি আমার সামনেই হাত না ধুয়ে মাস্ক পরলেন। মাস্কের বাইরে-ভেতরে দুদিকেই হাত লাগিয়ে দিলেন। তারপর যদিও বা পরলেন, বারবার মাস্কের বাইরের দিকটায় হাত দিচ্ছেন..
– কেন? মাস্কের বাইরের দিকে হাত দিলে কী হবে?
– ধরুন, আপনার সামনে কেউ হেঁচে বা কেশে দিলেন। তখন ওই জীবাণু ভরা থুতু-কফের ছোট্ট ছোট্ট বিন্দু মাস্কের বাইরের দিকটায় লেগে গেল। তারপর সেখান থেকে আপনার হাতে। এবার ওই হাতেই আবার মাস্কের ভেতরের দিকটা স্পর্শ করলে জীবাণু আপনার নাকের কাছাকাছি চলে এলো..
– তাইতো.. এতসব তো বুঝিনি.. তাহলে খুলে দিই দাঁড়ান..
– আরে, আরে.. করেন কী? আবার ভুল করলেন। সেই বাইরের দিক ধরেই খুললেন। খুলতে হবে মাথার পেছন দিক থেকে। মাস্কের বাইরের দিকের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে। আর যদি বা হাত লেগেই যায় সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। আর এই যে মাস্কটা দিব্যি পকেটে চালান করে দিলেন, এতে কিন্তু জীবাণু আপনার শার্টেও ছড়ালো..
– এ তো আচ্ছা মুশকিল হ’ল দেখছি.. কতো খুঁজেপেতে একটা মাস্ক জোগাড় করলাম..
– হুঁ.. (মুচকি হাসলেন ডা. ঘোষ) এত খুঁজেপেতে যেটা জোগাড় করেছেন সেটায় বড়জোর মশা-মাছি-পোকা আটকাতে পারে, করোনা আটকানো মুশকিল..
– কী করবো স্যার? ওই যে N95 না কী.. ওটা তো কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না..
– জানি। হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরাও পাচ্ছেন না। অগত্যা যা পাওয়া যায়, তাই দিয়েই কোনোভাবে..
– তাই? এ তো ভয়ানক ব্যাপার..
– আমি একটা ব্যাপার করছি, যদিও এর কোনও প্রমাণ আমার কাছে নেই। জানিনা, ভুল করছি কিনা। বাজারচলতি মাস্কের ভেতর একটা টিস্যু পেপার ভাঁজ করে ঢুকিয়ে নিচ্ছি। তারপর সেটা বারবার বদলে নিচ্ছি। যদিও তাতে সত্যিই লাভ হচ্ছে কিনা, আমি জানিনা। আসলে আমাদের কিছু করার নেই। অন্তত বারবার হাত ধোওয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, দূরত্ব বজায় রাখা, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনো.. এগুলোই মেনে চলুন।
চেম্বারের দরজা অল্প খুলে এক প্রৌঢ় ভদ্রলোক উঁকি দিলেন..
– ডাক্তারবাবু মনে হয় ওই ভিডিওটা দেখেন নি।
– কোন..কোনটা বলুন তো?
– আরে দেখুন, দেখুন.. ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, মাস্ক-ফাস্ক না হলেও চলবে। বাড়ির সাধারণ গামছা-ই যথেষ্ট। গামছা তো সবার বাড়িতেই গন্ডা গন্ডা। আমার কী মনে হয় জানেন? সবই এইসব মাস্ক বানানোর কোম্পানিগুলোর ব্যবসা বাড়ানোর ছক। এখন লোকে কেনার জন্য পাগল..
– ওহো.. ওটা? হ্যাঁ। দেখেছি বইকী। শুনুন, নেহাত চেয়ারটাকে সম্মান করতে হয় তাই। নইলে বলতাম, উনি একটি আস্ত..
– এইটিই আপনাদের দোষ, জানেন তো.. কোনোকিছু বিশ্বাস করতে চান না। আরে, এত বড় কেউ বলছেন মানে নিশ্চয়ই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েই বলছেন..
– এরকম কোনও প্রমাণ দেখাতে পারলে..
– আপনার সবকিছুকেই সন্দেহ করা বাতিক। শোনেন নি? ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু..’
যে গামছা দিয়ে মুখ ঢাকা ছিলো তাতেই নাক খুঁটতে খুঁটতে ভদ্রলোক বেরিয়ে গেলেন।
চেম্বারে আর পেশেন্ট ছিলো না। একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডা. ঘোষ টিভিটা চালু করতেই দেখলেন সাংবাদিকমশাই বারবার মাস্কের বাইরের দিকে হাত দিয়ে মাস্ক নেড়েচেড়ে ঠিক করে নিচ্ছেন। তারপর সেই হাতেই মাইক্রোফোন ধরে বলে যাচ্ছেন..
– হ্যাঁ, সুস্মিতা.. যেমনটা জানা যাচ্ছে, হাসপাতাল গুলোতে কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ পিপিই-র কিন্তু অভাব রয়েছে। এ ব্যাপারে এখনই কিন্তু ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। তাঁদের দাবী..
খুব সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলেন
Like!! I blog quite often and I genuinely thank you for your information. The article has truly peaked my interest.
Hi there, after reading this amazing paragraph i am as well delighted to share my knowledge here with friends.