তুমি যেই হও, যেখানেই থাকো,
কারোর না কারো থেকে তুমি ভালো আছো।
তুমি যেই হও, যেখানেই থাকো,
কারোর না কারো থেকে তুমি খারাপ আছো।
এখন প্রশ্ন , তুমি কোনদিকে দেখবে।
তারও থেকে গুরুত্বপূর্ণ,
তুমি কোনদিকে বেঁকবে, তোমার থেকে যে ভালো আছে, তার দিকে,
নাকি যে খারাপ আছে,
জীবনকে ছেঁকে নেবে তারই নিরিখে?
যে কৈশোর বাবা মোবাইল না কিনে দেওয়ায় গলায় দড়ি দিলো,
আর ডাক্তারি প্রবেশিকায় পাশ না করে যে পড়ুয়া বিষ খেলো,
দুজনেরই নজর ছিলো তাদের থেকে যারা ভালো আছে
তাদের দিকে,
থিতু জীবনে যাদের ফোনে দৈনিক দু জিবি ডেটা ,
ডাক্তারি করে যারা সম্মান বাড়ি গাড়ি ইত্যাদির অধিকারী।
আর যে যুবক মোবাইলে অনলাইন জুয়া খেলে
সর্বস্বান্ত হয়ে শান্ত নদীর বুকে
নিজের অস্থির অস্তিত্ব সঁপে দিলো,
যে ডাক্তার সামাজিক ও পেশাদারি ঊর্ণজাল ছিন্ন করতে না পেরে
সম্পদ সম্মান সব ফেলে ঘুমের ওষুধ নিলো,
ক্ষণিকের জন্যে হলেও তারা পিছু ফিরে ঠিক ভেবেছিলো
‘ ইসসস যদি মোবাইলটাই না থাকতো’
অথবা ‘ যদি ডাক্তারিটাই না পড়তাম!’
ব্রিজের ওপারে দাঁড়িয়ে ,
তাদের গোটা সেতুটাকেই বিভ্রম বলে মনে হয়।
আসলে কারা ভালো আছে আমাদের থেকে ,
বেশির ভাগ সময় সেটারই খোঁজ চলে,
মানুষের শ্রেণীভাগ স্রেফ দুটো দলে,
সফল আর অসফল ।
একজন সফল পেশাদারের হয়তো চূড়ান্ত অসফল গার্হস্থ্য জীবন,
ভীষণ সুখী কোনো দম্পতি হয়তো তেমন সফল বাবা মা নন,
দৈনিক সহস্র পাঠকের কবি’র
রুজিরোজগারের ক্ষেত্রে
থাকতে পারে ফাঁকিবাজির অপবাদ,
প্রতিটি জিতে যাওয়া সংগ্রামের আলোয় উজ্জ্বল চাঁদের আঁধার উল্টোপিঠে থাকে
অন্য কোনো রণক্ষেত্রে ব্যর্থতার তিতকুটে স্বাদ।
তোমার হাত পা মস্তিষ্ক সব সচল হলে তুমি ভাগ্যবান পৃথিবীর ষোলো শতাংশ মানুষের চেয়ে ,
আশি কোটি মানুষের সামনে
তুমি স্রেফ তিনবেলা পেট ভরে খেয়ে,
পনেরো কোটি মানুষের মাথার ওপর ছাদ নেই,
আরো আরো আরো,
আশেপাশে ‘ ভালো নেই ‘ ছড়িয়ে প্রচুরই,
তোমার থেকে কারা ভালো আছে
সেটার হিসেবের চেয়েও,
কারা নেই , তা দেখা অধিক জরুরি।
তাই ঘুমের বড়ি।থামো।
তোমার কাজ নড়বড়ে মগজকে স্থৈর্য দেওয়া,
প্রাণ নেওয়া নয়।
সিলিং ফ্যানের ফাঁস,
যাও গিয়ে গৃহস্থের কাপড় টাঙানোর দড়ি হও,
সংসারে তোমাকে অন্য কাজে দরকার।
মেট্রোর থার্ড রেল,
কেউ ঝাঁপিয়ে পড়লে তড়িৎগতিতে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দাও, ইঞ্জিন থামুক তৎক্ষণাৎ।
পুকুরের জল,
হালকা হয়ে ভাসিয়ে দাও ওই ব্যর্থ যুবতীকে,
ও ভুল দিক দেখে ঝাঁপ দিয়েছে তোমার বুকে।
কারণ,
শেষ অবধি সমস্ত মৃতের চেয়ে জীবিতরা ভালো আছে,
সেটা বোঝাতেই হবে সব বন্ধুকে।
আর সেটা যে বোঝাবে,
যে বোঝাবে যতই ধ্বস্ত হও, তবু ভালো আছো, তবু ভালো থাকা যায়,
এখনো যায়নি সব চুকে..
তার থেকে চিনে নিও তোমাকে ভাবছে বন্ধু কে।