সকলেই জানিত পাপ আপন বাপকেও ছাড়ে না। সকলে ইহাও জানে, পাপ আর পারা চাপা থাকে না। উহা প্রকাশ পাইবেই।
সেইমত প্রাপ্য পাপ তাঁহার নিকটে আসিল।
সেই জ্যোতি-প্রিয় পুরুষ আশেপাশে তাকাইয়া কাতর ভাবে সকলকে প্রশ্ন করিলেন, ‘ও গো, গোলাভর্তি ধান-গম, দিগন্ত বিস্তৃত জমি-জমা, চালকল-গমকল, বাংলা-দুবাইয়ের কোঠাবাড়ি সবাই সাক্ষী। হে স্বজনেরা, তোমাদের জন্যই আমি যতেক অপরাধ করিয়াছি। চুরি ডাকাতি রাহাজানি করিয়াছি। পুকুরচুরি তো ছাড়। নদীচুরির জন্য বরুণ-খু*ন অবধি করাইয়াছি। এই করিতে করিতে স্বাস্থ্যের দিকে না তাকাইয়া আমার ডায়াবেটিস অপিচ মধুমেহ, উচ্চরক্তচাপাদি, ক্রিয়েটিনিন বৃদ্ধি ইত্যাদি প্রভৃতি হইয়াছে। এক্ষণে সেই পাপ আমার কাছে আসিয়াছে। তোমরা কে কে আমার এই পাপ নিবে?’
এই বলিয়া তিনি ঊর্ধ্ব অধঃ সম্মিলিত দশদিকের প্রতি সকরুণ ভাবে চাহিলেন। সবিস্ময়ে দেখিলেন ছায়াসদৃশ সকলেই অস্বীকারজ্ঞাপক ঘাড় নাড়িয়া, হস্ত-প্রক্ষালন পূর্বক, ভীত বুড়বকের ন্যায় পলায়নপর। সবিস্ময়ে শুনিলেন অকুস্থলে উপস্থিত তাঁহার যাবতীয় আত্মীয় ও মাসতুতো ভাইয়েরা সকলেই একবাক্যে বলিতেছে, ‘ উন্মাদের মত উক্তি কহিও না। আমরা সকলেই তোমার আহৃত ক্ষীর খাইয়াছি বটে, কিন্তু কেহই পাপের দায় নিব না। তুমি অধুনা ভাইপো-পরিত্যক্ত দায় বিশেষ। তাই সমুদয় পাপ, ও হে জ্যোতিপ্রিয়, একমাত্র তোমারই। শুধু তোমারই।’
এতাদৃশ বাক্য শ্রবণে মল্লিক-প্রবর নিদারুণ মর্মাহত হইলেন।
সুপ্রাচীন দস্যু রত্নাকরের অনুসরণে নিজে নতুন নাম পরিগ্রহ করিলেন। এই আধুনিক দস্যু রত্নাকরের স্বপ্রদত্ত সেই নাম হইল বাল্মিকী (নিউ এডিশন)।
ওই বাল্মিকী শব্দের অনুষঙ্গেই তাঁহার সংক্ষেপিত নাম হইল ‘বালু’। অতঃপর ওই ‘বালু’ নামেই তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করিলেন।
★