বেশির ভাগ ছেলে পিরিয়ড সম্বন্ধে কী ভাবে জানে?
খেলার মাঠের ধারে বা রাস্তায় পরে থাকা স্যানিটারি প্যাড দেখে কৌতুহল, তারপর বন্ধুদের মধ্যে আলোচনা। বাড়ির ছাদে বা কোনো একটা কোণে প্রতি মাসে কিছু ছোটো কাপড় শুকানো হয়, তার মধ্যে একটা গোপনীয়তা থাকে। বিশেষ দিনে মা,দিদি বা বাড়ির অন্য মেয়েরা কেমন বদলে যায়,এটা ওটা ছোঁয় না। টিভির বিজ্ঞাপনে। ওষুধের দোকানে ওই বড় বড় প্যাকেট গুলো।
বাবা মায়ের কাছেও এই নিয়ে আলোচনা করা এক বড় সমস্যা। কখন কীভাবে তাঁদের কিশোর ছেলেকে মেয়েদের পিরিয়ড সম্পর্কে জানাবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না। তাছাড়া জানালে কতটা জানাতে হবে কিংবা আদৌ জানানো ঠিক হবে কী না তা নিয়েও সংশয় থেকে যায়। যদিও অনেক কিশোর মনেই মা, দিদির এই স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ থাকে। এই কারণে যাতে তাদের মধ্যে কোনও ভুল ধারনা না জন্মায় তাদের এ সম্পর্কে জানানো দরকার। অনেকে চান সন্তান যাতে এই বিষয়কে কোনও লজ্জার বলে না ভাবেন সেভাবে জানাতে। প্রতিটা ছেলের এই বিষয় জানা দরকার। কারণ শুধু পরিবারে মা ও দিদি, বৌদির নয়, কলেজের বন্ধু, প্রেমিকা, সহকর্মী এমনকী নিজের মেয়েকেও এই পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কাজেই অভিভাবক হিসেবে এই বিষয় সম্পর্কে ছেলেদের কম বয়স থেকেই জানিয়ে দেওয়া ভাল। এর ফলে তার মধ্যে এই বিষয়টা লজ্জার বা এ নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়, এমন ধারনা জন্মাবে না। আপনি না জানালেও আপনার সন্তান তার বন্ধু, মিডিয়া, সোশ্যাল সাইট থেকে পিরিয়ড সম্পর্কে ভুল তথ্য জানতে পারবে। কাজেই নিজেদের জানিয়ে দেওয়াই ভাল।
পিরিয়ড সম্পর্কে কখন জানাবেন?
পিরিয়ড সম্পর্কে জানানোর কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। পুরোটাই আপনার ওপর নির্ভর করে। তবে প্রাক বয়ঃসন্ধির সময় থেকে একটু করে জানালে তাদের বুঝতে সুবিধা হয়। ছেলেকে বোঝানো কীভাবে তার ও দিদির শরীরে পরিবর্তন আসবে। অনেকে সময়েই বেখেয়ালে মা কিংবা দিদির প্যাড বদলের সময় ছোট শিশুর তা নজরে পড়ে যেতে পারে। কিংবা বিশেষ দিনগুলোতে বিছানায় কোনও স্পট দেখে শিশুর মনে কৌতূহল জাগতেই পারে। সে জানতে চাইতে পারে এ বিষয়। তদের এমনভাবে বিষয়টা বোঝানো দরকার যাতে তার শিশুমন তা বুঝতে পারে। তবে কখনওই ভুল তথ্য দিয়ে তার মন ভোলানোর চেষ্টা করবেন না।
ছেলেদের পিরিয়ড সম্পর্কে যা জানা দরকার:
ছেলেদেরও বোঝাতে হবে তাদের মতো মেয়েদেরও বয়ঃসন্ধির সময় শারীরিক পরিবর্তন হয়। কিছু পরিবর্তন ছেলে ও মেয়েদের প্রায় সমান। আর কিছু পরিবর্তন আলাদা। আলাদা কীসে তা বোঝানোর জন্য বলতে হবে-
মেয়েদের সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য প্রতি মাসে এই ব্লিডিং হয়। একে পিরিয়ড বলে। মেয়েদের খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া আর তা সন্তান জন্ম দেওয়ার একটা অংশ। আর বলার সময় একদম স্বাভাবিক গলায় বলতে হবে। লজ্জা কিংবা বিরক্তি প্রকাশ করা চলবে না।
সাধারণত ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত মেয়েদের পিরিয়ড হয়।
যে রক্ত বেরয় তা শুষে নেওয়ার জন্য প্যাড বা ট্যাম্পন ব্যবহার করতে হয়।
প্যাড বা ট্যাম্পন লিক করে কখনও যদি কোনও মেয়ের পোশাকে রক্তের দাগ দেখা যায় তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। এই সময় বন্ধু বা সহকর্মীর পেটে ব্যথা, মন খারাপ, বিরক্ত ভাব আসতে পারে, তাদের সাথে সহমর্মিতা দেখানো উচিত। পড়াশোনায় বা কাজে সাহায্য করা দরকার। দরকার পড়লে বাড়িতে মা বা দিদি, বোনকে সাহায্য করা উচিত।