প্রয়াত অভিনেতা দিলীপ কুমারকে মনে করে
ঠিক কখন মরেছে মানুষটা?
চার ঘন্টা পরে নাড়ি কনীনিকা দেখে ডাক্তার যখন
নথি লিখলেন, তখন ?
শেষ শ্বাস টেনে যখন দুই চোখ চিরতরে স্থির হলো , তখন?
ডাক্তার মাথা নেড়ে আর কিচ্ছু করার নেই বলে জবাব দিয়ে যখন চলে গেলেন, তখন?
নাকি অসুখেরও আগে, অনেক অনেক আগে,
পুরোনো বাতিল আসবাবের মতো
ঘর জুড়ে পড়ে ছিলো মায়াহীন দৈনিক অবহেলা সয়ে,
তখনই?
ঠিক কখন মানুষেরা মরে যায়, বলতে পারো?
সন্ধ্যা নামলে কত মানুষেরা চলে যায় অপ্রেম আঁধারের দিকে।
বেঁচে থাকে , শ্বাস নেয়,
খাওয়াদাওয়া হয়তো বা জোটে নিয়মিত,
শুধু তার সুখ বা কান্নাতে আর কারো কিছু যায় আসে না।
সংসারী সিদ্ধান্ত সব তাকে বাদ দিয়ে,
কালকের বাজার বা সামনের সপ্তাহে দীঘা ট্রিপ,
দুটোতেই সে প্রশ্নবিহীন আব্বুলিশ।
মাঝে মাঝে মুখ ফুটে বলে ফেলে
‘ বাজারের থেকে আজ একটু আড়মাছ আনিস, কতদিন খাইনি!’
বাজারু বিড়বিড় করে ‘ আড়ের দাম জানো, এমনিই এখন মাস চালানো কঠিন’,
আড়ালে আরেক কণ্ঠ অস্ফুটে হিসহিস করে,
‘ বুড়ো হলো, নোলা গেলো না!’
দুপুরের রোদ্দুর চিলতে জানলার ফাঁক গলে চুপিসাড়ে দেখে,
বিষণ্ণ মানুষটা ম্লান হেসে মুখে তোলে ভাতের গরাস,
থালাটার এক কোণে কুণ্ঠিত হয়ে পড়ে এক ফালি পোনা।
সাক্ষী আসবাবেরা সময়ের কাছে বলে ,
এই তো হয়েই এলো,
দিন পড়ে আছে আর কটা হাতে গোনা।
সত্যি কি দিন আছে?
খায় দায় বলেই সে মরে নি এখনো?
ভোট ছাড়া আর কোনো মতামত নেই,
স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা কবেই ফেলেছে লোকে জঞ্জালে ছুঁড়ে,
বহুকাল, বহু বহু কাল, তার পাশ ঘেষে বসে কেউ বলেনি,
আমাদের কাছে আজও ভীষণ মূল্যবান স্পর্শ তোমার।
(হয়তো বা বলেওছে সেটা,
তবে ছবি দিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে,
আমরা যে কত ঠগ ভারচ্যুয়ালে,
বাস্তব ধরে ফেলে সেটা হাতেনাতে)
তাকে নিয়ে নতুন স্মৃতি আর তৈরি হয়না,
তারও স্মৃতিতে নেই নতুন সংযোজন ,
বস্তুত সে আর সমকালে নেই।
অতীত হাতড়ে চলে সারাদিন মন।
এইবারে ভেবে বলো, সত্যি সে মানুষটা মরলো কখন?
এরপর চোখে র জল ছাড়া আর কোনো মন্তব্য হয় না।