যতদিন কাটছে ততদিন দেখছি করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের বিভ্রান্তিও বাড়ছে। এর যথেষ্ট কারণও আছে, করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর হার অত্যন্ত কম, অনেকেই কোন উপসর্গ ছাড়া অথবা সামান্য সর্দিজ্বর এর পরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আবার একইসঙ্গে বহু মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে, মানুষ দুটো মেলাতে পারছেন না, অনেকে ভুল চিকিৎসার কথাও বলছেন, কয়েকটি ভাঙচুরের ঘটনাও দেশের কোন কোন অংশে ঘটেছে।
আবার, আর একটা বিভ্রান্তির জায়গা হলো, যে রোগের নির্দিষ্ট কোন ওষুধ নেই, শরীরের ইমিউনিটিও মূল অস্ত্র, সেখানে বেসরকারী হাসপাতালে লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে, তার কারণ কি? খুব সঙ্গত প্রশ্ন, এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।
Covid 19 ভাইরাসে সংক্রমণ হলে বেশিরভাগ মানুষ কোন চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে যাবেন। খুব অল্পসংখ্যক রোগীর সমস্যা হবে। যদিও আগে থেকেই এজমা, সিওপিডি, ডায়াবেটিস, হার্ট ও কিডনির রোগীদের সমস্যা বেশি, কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ, কমবয়সীদের শরীরেও সমস্যা হতেই পারে ও কার হবে এবং কার হবে না, এটা আগে থেকে বলা অসম্ভব।
Covid 19 রোগীদের যে জটিলতাগুলি থেকে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলো হলো-
১) Hypoxia- শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া
২) Cytokine storm – শরীরে ভাইরাস ঢোকার পরে অত্যধিক বিস্ফোরক immunological response
৩) Micro-clot formation – রক্ত জমাট বাঁধার ত্রুটির জন্য শরীরের নানা অঙ্গের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া
৪) Secondary bacterial infection – ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গে bacterial সংক্রমণ
৫) Multi organ failure – এটা মূলতঃ ওপরের চারটি ঘটনার ফলাফল।
স্বাভাবিক ভাবেই একমাত্র এই জটিলতার ক্ষেত্রেই উন্নত মানের চিকিৎসার দরকার হয়। এর মধ্যে প্রথম বিষয় হলো, এটা বুঝতে পারা যে কোন বিশেষ একটি রোগীর শরীরে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষা আছে। একটা নিয়ে খানিকটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে, সেটা হলো pulse oximeter দিয়ে hypoxia হচ্ছে কিনা, সেটা নিয়মিত চেক করা। এটা যন্ত্রটি কিনে যে কোন মানুষ করতে পারেন। 95% এর কম oxygen saturation চিন্তাজনক ও 90% নীচে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত।
Cytokine storm diagnosis করা অতটা সহজ নয়। সাধারণ রক্ত পরীক্ষা (hemogram, CRP) ইত্যাদি করে একটু ধারণা হলেও এবিষয়ে আসল পরীক্ষা হলো Interleukin 6 টেস্ট। এই স্তরের চিকিৎসা করতে বহু parameter চেক করতে হবে (যেমন monitor-এ respiratory rate, oxygen requirement, arterial blood gas (ABG), Procalcitonin test ইত্যাদি), বিভিন্ন organ-এর অবস্থা দেখতে হবে, শরীরে bacterial sepsis তৈরি হচ্ছে কিনা দেখতে হবে। একইসঙ্গে শরীরে clot তৈরি হচ্ছে কিনা দেখার জন্য coagulation profile দেখতে হবে। ফুসফুসের অবস্থা দেখার জন্য CT scan।
এরপরে রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসা, অক্সিজেন দিতে হবে শরীরের প্রয়োজন ও সহ্যক্ষমতা অনুযায়ী, নিয়মিত parameters চেক করে সেই অনুযায়ী বাড়াতে কমাতে হবে। শুরু করা হবে স্টেরয়েড, যেমন Dexamethasone, methyl prednisolone ইত্যাদি।
স্টেরয়েড ছাড়াও cytokine storm-এ অন্য immuno-suppressive ওষুধ দিতে হতে পারে, যে ওষুধ অত্যধিক immuno-response কমিয়ে দেবে। (হঠাৎ অতিরিক্ত immuno-response-এ multi-organ failure হয়ে মৃত্যু হতে পারে)। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে Tocilizumab নামের একটি ওষুধ। এইক্ষেত্রে সমস্যা হলো, রোগীর শরীরে যদি আগে থেকেই bacterial সংক্রমণ থাকে, তাহলে Tocilizumab প্রয়োগের পরে bacterial infection-এর জন্যই মৃত্যু হতে পারে, কারণ এই ওষুধ ব্যবহার করলে bacteria-র সংক্রমণ প্রতিরোধের মতো ইমিউনিটি থাকে না। এটি একটা দোধার তলোয়ারের মতো, সামান্য ভুল হলেই শেষ। bacterial infection এর জন্য প্রয়োজনমতো antibiotic দিতে হবে।
এর সঙ্গে coagulation profile এ সমস্যা থাকলে ব্যবহার করতে হবে low molecular wight heparin, যা রক্ত জমাট বাঁধা আটকাবে। এখানে বিপদ হতে পারে সেই সব রোগীদের যাদের রক্তচাপ বেশি (brain stroke হতে পারে), বা মাসিক বা ulcer বা অন্য কিছু bleeding হয়, এমন রোগীদের। এমনকি করোনায় খুব ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুস থেকেও রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে।
পুরো প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট জটিল, constant supervision এর দরকার, প্রতিদিন নানা পরীক্ষা করে সেদিনের শারীরিক অবস্থা বুঝে, সেই অনুযায়ী চিকিৎসা modify করতে হবে। আর একটা ব্যাপার গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হলো অসুস্থ রোগী, যার জ্বর কমছে না, শরীর খুব দুর্বল, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তাকে বাড়িতে ফেলে না রাখা।
এতটা পড়ে এটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, কয়েকদিন আগে cytokine storm, micro-clot তৈরি হয়ে গেছে, এমন রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা প্রায় অসম্ভব। তাই অবস্থা জটিল মনে হলে বাড়িতে ফেলে রাখবেন না।
Daktar babu eto kichu hote pare jana sotteo hospital patient ke discharge kore dichhe uposorgo( fever 100 er besi) thaka sotteo test na korei, patient niye amra osohay. Kono jaygate phone kore kono kaj hochhe na.