অবশেষে অস্ত্র সংবরণ নয় সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হচ্ছে ইস্রায়েল, অপহৃতদের কিছু অংশ প্রত্যার্পণের লক্ষ্যে। ঘরে বাইরে ইস্রায়েলের উপর চাপ ক্রমশঃ বাড়ছিল। আসলে এটাই তো পরিষ্কার হচ্ছিল না যে ইস্রায়েলের নেতৃত্ব ঠিক কতটা আন্তরিক এই বিষয়ে, দেড় মাস কেটে গেলেও অপহৃতদের পরিবারবর্গ ও বন্ধুরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে কোনও রকম তথ্য ছাড়াই!! আদৌ তাদের আশু মুক্তি ইস্রায়েল কর্তৃপক্ষ চায় কিনা সেই বিষয়েই গুরুতর প্রশ্ন উঠেছিলো। এটা তো ঘটনা ‘হামাস’-এর ‘সুপরিকল্পিত’ হামলা নেতানইয়াহু সরকারের কাছে গাজা ভূখণ্ড ধ্বংস ও দখল করার এক অভূতপূর্ব সুযোগ নিয়ে এসেছে! আর, সেই সুযোগের যতটা পারা যায় সদ্ব্যবহার (!!) করা সম্ভব তার পুরোটাই করতে উদ্যোগী ইস্রায়েল-মার্কিন চক্র!
ঠিক তিন বছর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন জো বাইডেন। শুধু আমেরিকা নয় সারা পৃথিবী আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠেছিল এই ভেবে যে একটা পরিবর্তন আসন্ন অন্ততঃ গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা ও কার্যপদ্ধতিতে। আর আজ? গত প্রায় দেড় মাস ধরে ৪০ কিমি× ৬-১০ কিমি-র একটা ছোট্ট ভূখণ্ডে সাধারণ মানুষের উপর ইস্রায়েল যে লাগাতর হত্যালীলা চালিয়ে আসছে সারা পৃথিবীতে তার এক, একমাত্র ও একনিষ্ঠ সমর্থক হলো মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন!! এমনকী সাময়িক যুদ্ধবিরতিতেও শেষ পর্যন্ত বাধা দিয়ে গেছে একমাত্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (United Kingdom-কে হিসেবের মধ্যে রেখে লাভ নেই, প্রাক্তন ব্রিটিশ সিংহ এখন নিজের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে তারই অতীত অধ্যায়ের উপনিবেশের নিতান্ত বশংবদ মাত্র)। কিন্তু ঠিক কী কারণে মার্কিন রাষ্ট্রপতির এই অতি অদ্ভুত অবস্থান, এমনকী আমেরিকার জনমতেরও তোয়াক্কা না করে? হামাসের আক্রমণের পরে প্রাথমিক পর্যায়ে আমেরিকার নাগরিকদের ইস্রায়েলের প্রতি যে নিঃশর্ত সমর্থন ছিল, তা এখন অনেকটাই স্তিমিত। বরং জনগণের বৃহত্তর অংশ এই মুহূর্তে চায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ হোক! রয়টার ও ইপসোস পরিচালিত এক সার্ভেতে দেখা যাচ্ছে শতকরা ৬৬ জন মানুষ যুদ্ধবিরতির পক্ষে আর ডেমোক্রেটদের মধ্যে এই সংখ্যাটা আশির উপর এবং এমনকী রিপাবলিকানদেরও অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ!! বস্তুতঃ, আমেরিকার সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ এখন ইউক্রেন, গাজা-ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক সমেত সব ধরণের যুদ্ধ থেকে মুক্তি চায়! তাহলে, কী কী নির্দিষ্ট কারণে মার্কিন রাষ্ট্রপতির এই অতি চরমপন্থী মানবতাবিরোধী অবস্থান?? ভিয়েতনাম যুদ্ধের পরে আমেরিকায় প্রশাসনে থাকা মানুষদেরও নিজের পরিচয় গোপন রেখে সরকারের কাছে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধী বক্তব্য রাখার সংস্থান রাখা হয়। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ তাঁদের অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন, এমনকী প্রশাসনের অতি ঘনিষ্ঠদের ৫০০ জন একযোগে তাঁদের বিপরীত মতামতের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে কি কিছু যায় আসছে? মার্কিন কংগ্রেসে রাষ্ট্রপতি ‘হামাসের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা’ এর খাতিরে ইস্রায়েলকে ১৪ বিলিয়ন ডলার সাহায্যের জন্য প্রস্তাব রেখেছেন।
আসলে, ইস্রায়েলের জন্ম মুহূর্ত থেকেই তাকে লাগাতার সাহায্য করে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সারা পৃথিবীতে আমেরিকার এত কাছের দেশ আর একটাও নেই। মার্কিন সাহায্যের দিক থেকে আর কোনও দেশ ইস্রায়েলের ধারে কাছেও আসে না।
IDF (Israel Defence’ Force)-এর সামরিক খাতে বাজেটের ছয় ভাগের একভাগ আসে মার্কিনী সাহায্য থেকে। প্রতি বছরে সাহায্যের পরিমাণ ক্রমশঃ বেড়ে ২০১৯ সাল থেকে হয়েছে ৩•৮ বিলিয়ন ডলার প্রতি বছরে (১৯৪৬ সাল থেকে এই সাহায্যের মোট পরিমাণ এখনও পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার)। অথচ, ইস্রায়েলের অন্যতম প্রধান শিল্প হলো অস্ত্র প্রস্ততকারক সংস্থা, যার মোট সংখ্যা দেড়শোর বেশি আর ইস্রায়েলের শ্রমজীবি মানুষের একটা ভালো অংশ জড়িত এর সঙ্গে। সারা পৃথিবীতে যত অত্যাচারী স্বৈরতান্ত্রিক শাসক, সর্বত্র অস্ত্র ও প্রযুক্তি সরবরাহে অগ্রভাগে রয়েছে ইস্রায়েলের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি। তাহলে, তার পরেও কেন ইস্রায়েলকে এত সাহায্য? আর, কাদের বিরুদ্ধে? গত দেড় মাসে ইস্রায়েলী বাহিনী হত্যা করেছে মূলতঃ হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে (যার আবার শতকরা ৬০ ভাগের বেশি নারী ও শিশু), ‘হামাস’ কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এখনও পর্যন্ত তো ইস্রায়েলী সৈন্যবাহিনী একজনও অপহৃত মানুষকে উদ্ধার করতে পারেনি।
তাহলে, কী কারণে এত কোটি কোটি ডলারের সাহায্য? সাধারণ মানুষের উপর উপর হত্যালীলাকে আরও ব্যাপকতর রূপ দিতে, ‘সন্ত্রাসবাদী’ উৎখাতের আছিলায় গাজার প্রায় সমস্ত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালকে গুঁড়িয়ে দিতে? আবার, সেটা কিনা আমেরিকার ট্যাক্সপেয়ারের টাকায়?
কী কারণে? শুধুমাত্র আমেরিকার শক্তিশালী ইহুদী লবির চাপে অথবা পৃথিবীর অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষমতার চরম আধিপত্যের কারণে?? কারণগুলো যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক সন্দেহ নেই, কিন্তু এটাই কি সব??আর, সেটাই ঘোরতর সন্দেহের বিষয়……..
রাষ্ট্রপুঞ্জে ‘হামাস’-কে সরাসরি নিন্দা করে কানাডার এক সংশোধনী প্রস্তাবে ভারতসহ ৮৮ টি দেশ সায় দেয়, বিপক্ষে ৫৫টি এবং ভোটদানে বিরত থাকে ২৩ টি দেশ। তবে, সংশোধনীটি গৃহীত হয়নি যেহেতু নিয়ম অনুযায়ী এক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশের সম্মতি প্রয়োজন। সংশোধনী গৃহীত না হলেও এটা ঘটনা পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশই ‘হামাস’কে নিন্দা করছে আর নিঃসন্দেহে ‘হামাস’ একটি ধর্মীয় মৌলবাদি সংগঠন (‘Harkat Al Muqawama Al Islamiya’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ), আর ‘সন্ত্রাসবাদ’-এ বিশ্বাসী৷ কিন্তু, হামাস তো সন্ত্রাস চালিয়েছে একটা ছোট ভৌগলিক সীমানার মধ্যে, আর দিনের পর দিন বছরের পর বছর লাগাতার নির্যাতনের সাক্ষী থেকে। কিন্তু, তার সঙ্গে কি আদৌ তুলনা চলে গত অর্দ্ধ শতাব্দী ধরে ইস্রায়েলের নিরন্তর কার্যপ্রণালীর? পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিগত পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে অত্যাচারী শাসকদের স্বার্থে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সন্ত্রাস এর ‘রপ্তানী’ করে এসেছে ইস্রায়েল, তার রাষ্ট্রযন্ত্র, মিলিটারী ও বেসরকারি সংস্থাগুলির মাধ্যমে। দুনিয়ায় যেখানে যত স্বেচ্ছাচারী নির্মম দমনপীড়নকারী শাসকবৃন্দ, সেখানেই কোনো না কোনো ভাবে জড়িত ইস্রায়েল ও তার ধ্বংসাত্মক প্রতিষ্ঠানগুলি। আর এই বিষয়ে ইস্রায়েল রাষ্ট্রের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে তার আর্মি (ও এক্স আর্মি) ও বেসরকারি সংস্থাগুলি তা সে অস্ত্র ব্যবসায়ীই হোক বা বৈজ্ঞানিকভাবে অতি অগ্রসর প্রযুক্তি সমৃদ্ধ surveillance centre-ই হোক।
এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা যেখানেই চরম অগণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারী শাসনের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেখানেই সাদরে বরণ করা হয়েছে ইস্রায়েলী বিশেষজ্ঞ, প্রযুক্তি ও অস্ত্র। আর এই প্রযুক্তির সাহায্যেই বিরোধীদের সমস্ত তথ্যভাণ্ডার নির্মাণ করে সমূলে বিনাশ করার নানা পদ্ধতির সন্ধান করে এসেছে এই সংস্থাগুলি। প্রতিবাদীদের সুলুক সন্ধান করা, তাদের ‘eliminate’ করার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে ইস্রায়েলের বিশেষজ্ঞদের প্রযুক্তিগত ও অভিজ্ঞতার নিরিখে দক্ষতা অতুলনীয়। তাই, সারা পৃথিবীর ডিক্টেটরদের নিশ্চিতভাবে first choice হলো ইস্রায়েল, অবশ্যই কাঞ্চনমূল্যের বিনিময়ে! তা সে নিকারাগুয়ার সোমোজা জমানা, গুয়েতমালা, এল সালভেডর, আর্জেন্তিনার জুন্টা সরকার, শ্রীলঙ্কা, অধুনা মায়নামার, সর্বত্র। মায়নামারে এমনকী ইস্রায়েলের আদালতের আদেশ অমান্য করেই চলছে সামরিক সরকারকে অস্ত্র ও প্রযুক্তি সরবরাহ। মায়নামারে গত জানুয়ারী মাসের হিসাব অনুসারেই তিন হাজারের বেশি প্রতিবাদীকে হত্যা করা হয়েছে, ১৫ লক্ষ মানুষকে গৃহচ্যুত, আর হাজার হাজার মানুষকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে কারাগারে। তাৎপর্য্যপূর্ণভাবে ইস্রায়েলের আদালতের আদেশ এতদিন পর্য্যন্ত অপ্রকাশ্যই ছিল।
আদালতে মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী এইটে ম্যাক এর মতে,”As long as the military junta serves Israel’s interests, Israel has no problem assisting the junta both in exterminating the ethnic minorities and in exterminating a large part of the rest of population that oppose the coup and wants to live under democracy.”
আর, আজ নয় বহুদিন যাবৎ গাজা হলো ইস্রায়েল নির্মিত অস্ত্রের ‘জীবন্ত’ পরীক্ষাগার! তাই, বিভিন্ন ‘পরীক্ষিত’ নিপীড়নমূলক যন্ত্র ও মারণ অস্ত্রের সরবরাহকারী হিসাবে ইস্রায়েল এখন সামনের সারিতে। তাকেও নাকি আবার সাহায্যের দরকার হয়, And that with billions of dollars for arms supply……..!!
শুধুমাত্র সরকারি ভাবে নয়, ইস্রায়েলের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসারদের কাজে লাগায় অন্য দেশে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী তৈরি করতে। প্রাক্তন আর্মি জেনারেল ম্যাট্টি পেলেড এর মতে, “Israel has given it’s soldiers practical training in art of oppression and in methods of collective punishment. It is no wonder, then,that after their release from army, some of those officers choose to make use of their knowledge in the service of dictators and those dictators are pleased to take in the Israeli experts.”
বস্তুতঃ, এই ‘collective punishment’-এরই এক বিশাল মহড়া ও প্রদর্শনী চলছে গাজা ভূখণ্ডে, যা আবার কিছু বিশেষ কারণে উৎসাহিত করেছে আমাদের দেশের শাসককুলের একটা অংশকে।
এছাড়া, উন্নত চাষ ও আদর্শ গ্রাম তৈরির পরামর্শের নামে বিভিন্ন দেশকে শিক্ষা দিয়েছে ethnic cleansing-এর কলাকৌশল! গুয়েতামালায় ১৯৬০ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে প্রাচীন ‘মায়া’ জনজাতিকে জমি থেকে জোরপূর্বক অপসারণ, দুই লক্ষ মানুষের মৃত্যু ও দশ লক্ষকে গৃহছাড়া এবং বহু মানুষকে দেশছাড়া করতে ইস্রায়েলের নিজস্ব অভিজ্ঞতাকে ভালোভাবেই কাজে লাগানো হয়। ‘Ethnic cleansing” এ ইস্রায়েল তো সবচেয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন consultant specialist!!
আসলে এ সমস্ত কিছুরই পিছনে রয়েছে এক চরম পেশাদারিত্ব ; এর সঙ্গে অকারণ কোনও আদর্শগত, ধর্মীয় বা জাতিগত প্রভাব এর প্রসঙ্গ টেনে লাভ নেই। যে নাজিবাদের বিরোধিতা করে ইস্রায়েল রাষ্ট্রের উৎপত্তি, পরবর্তী কালে স্বার্থের হেতু সেখানেও সমঝোতা করতে হয়েছে। ‘৭০-৮০ এর সময়ে বলিভিয়ার সামরিক জুন্টার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন ক্লাউস বার্বি; একদা গেস্টাপো প্রধান ক্লাউসের আর এক পরিচিতি ছিল ‘Butcher of Lyon’ নামে। চিলির পিনোচেট সরকার আশ্রয় দেয় “ভ্রাম্যমান গ্যাস চেম্বার’-এর আবিষ্কর্তা ওয়াল্টার রউফকে। বর্ণবৈষম্যবাদী দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধানমন্ত্রী জন ভর্সটার দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়ে ছিলেন ঘোষিত নাজি সমর্থক….। কিন্তু, এ সমস্ত কিছু আদৌ কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি এই সরকারগুলির সঙ্গে ইস্রায়েলের তৎকালীন শাসকদের অতি ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায়। এমনকী আর্জেন্টিনার পেরন পরবর্তী সামরিক জুন্টা অন্যান্যদের সঙ্গে সে দেশের ইহুদীদের উপরেও ব্যাপক নির্যাতন চালায়। সেখানে নিরুদ্দিষ্টদের অনেককেই নাকি ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিলো আটলান্টিক মহাসাগরে ; সেখানেও কিন্তু ইস্রায়েল ছিল অন্যতম প্রধান পরামর্শদাতা!!
আসলে, এটাই হলো ইস্রায়েলের বিরাট সুবিধা, কাজের ক্ষেত্রে কোনো scruple না থাকা……। তাছাড়া, মানবাধিকার সংস্থাগুলির কথায় কর্ণপাত করার কোনও রকম বাধ্যবাধকতা না থাকা আর আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে চরম অশ্রদ্ধার মনোভাবও, অবশ্যই একটা বাড়তি plus point….। রাষ্ট্রপুঞ্জে দাঁড়িয়ে ইস্রায়েলের প্রতিনিধির অনায়াস সদম্ভ ঘোষণা, ” …..UN no longer holds even one ounce of legitimacy or relevance.”
তাই,যেখানে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আমেরিকাকেও পেছিয়ে আসতে হয়, অনায়াস মসৃণতায় সেখানে সহায়তা চালিয়ে যেতে ইস্রায়েলের কোনও সমস্যা হয় না। আর্জেন্টিনার পেরন পরবর্তী সামরিক জুন্টা বা বর্ণবৈষম্যবাদী দক্ষিণ আফ্রিকা, মায়নামার….এদের কাউকেই সহায়তা চালিয়ে যেতে ইস্রায়েলের কখনও কোনও অসুবিধা হয় নি।
আর, ঠিক এই কারণেই আমেরিকার কাছে ইস্রায়েলের অস্বাভাবিক গ্রহণযোগ্যতা……
আমেরিকাকে অন্তত: বাহ্যিকভাবে হলেও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি কিছু মানতে হয়, কিন্তু সে সব কোনও কিছুরই তো বালাই নেই ইস্রায়েলের !! সারা পৃথিবীর উপর পুলিশীগিরি করার জন্য তাই আমেরিকার ইস্রায়েলকে বড়ই প্রয়োজন…………
আমেরিকা – ইস্রায়েল অতি গভীর সম্পর্কের এটাই বোধহয় মূল কথা।
ডা অমিতাভ ভট্টাচার্য এই রচনাটির যুগ্ম রচয়িতা।