ওষুধ কেনার পরে বোতলের সিল ঠিক আছে কিনা কিংবা ওষুধের পাতা অক্ষত আছে কিনা সেটা যাচাই করার পরেই যে জিনিসটার দিকে আমাদের চোখ যায় সেটা হ’ল ‘ডেট/মান্থ অফ এক্সপায়ারি’। আমাদের সবারই মোটামুটি ধারণা আছে এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়া মানেই ওষুধ নষ্ট হয়ে যাওয়া। চলুন, জেনে নেওয়া যাক আসল সত্যিটা..
১.
এক্সপায়ারি ডেট কথার মানে হ’ল উৎপাদনকারী কোম্পানি সেই নির্দিষ্ট মাসের পর ওষুধের পূর্ণ কার্যক্ষমতার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেবে না।
২.
এক্সপায়ারি মাস হিসেবে কোনো নির্দিষ্ট মাসের (ধরা যাক, ফেব্রুয়ারি ২০২০) উল্লেখ থাকা মানে এক্সপায়ারি ডেট সংশ্লিষ্ট মাসের শেষ তারিখ (অর্থাৎ, ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০)
৩.
এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়া মানেই ওষুধের কার্যক্ষমতা শূন্য হয়ে যাওয়া নয়। সাধারণ বোধবুদ্ধিও তাই বলে- একটা ওষুধ ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখে কার্যক্ষম ছিলো আর মার্চের ১ তারিখে নষ্ট হয়ে গেলো, এটা হাস্যকর। সময়ের সাথে সাথে ওষুধের কার্যক্ষমতা খুব ধীরে ধীরে কমে।
৪.
অধিকাংশ গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ ওষুধ তাদের এক্সপায়ারি ডেটের ১-২ বছর পরেও অন্তত ৭০-৮০ শতাংশ কার্যক্ষমতা ধরে রাখে। বেশ কিছু ওষুধে বহু দশক বাদেও ওষুধের কার্যক্ষমতা বজায় থাকতে দেখা গেছে।
৫.
নাইট্রোগ্লিসারিন, ইনসুলিন, তরল অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদি সামান্য কয়েকটি ওষুধ এক্সপায়ারি ডেটের পর দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এগুলোর বিশেষ সতর্কতা দরকার। এক্সপায়ারি ডেট পেরোনো টেট্রাসাইক্লিন কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। যদিও ওষুধ হিসেবে টেট্রাসাইক্লিনের ব্যবহার এখন প্রায় হয়না বললেই চলে।
৬.
বেশ কিছু আর্টিকেলে এরকম সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে যে ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের বিক্রি বাড়ানোর জন্য ইচ্ছে করেই এক্সপায়ারি ডেট অনেক এগিয়ে আনে। যাতে বারবার পুরোনো ওষুধ ফেলে দিয়ে নতুন ওষুধ কিনতে হয়।
সম্ভব হলে, অবশ্যই এক্সপায়ারি ডেট না পেরোনো ওষুধ খাওয়াই ভালো কিন্তু শুধু এটুকু মাথায় রাখুন এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়া ওষুধ আর নষ্ট ওষুধ সমার্থক নয়।
কাজেই, ধরুন যদি এমন হয়, প্রচন্ড মাথা ব্যথায় আপনি খুব কষ্ট পাচ্ছেন অথচ আপনার পক্ষে এই মুহূর্তে ওষুধ জোগাড় করা সম্ভব নয় অথবা কেনার পয়সা নেই এবং আপনার কাছে এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়া একটি ওষুধ আছে.. সেক্ষেত্রে খেয়ে ফেলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ, খুব বেশি হ’লে তুলনায় কম কার্যক্ষমতার ওষুধে কাজ একটু কম হবে। ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণত থাকে না। ব্যথা সহ্য করার চেয়ে ওষুধটা খেয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত বোধহয় খুব খারাপ হবে না।
জেনে উপকৃত হলাম।
বাঃ। খুব দরকারি এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য। বিশেষ কিরে যারা আবেগে বা যুক্তি কে কম প্রাধান্য দ্যান, তাদের জন্য। প্রায় প্রতি বাড়িতেই এরকম লোক দেখা যায় যে এক্সপায়ার্ড ওষুধ খাওয়া মানে মৃত্যু কে ডেকে আনা। বাড়ির লোকের ভোগান্তি তাতে বাড়া ছাড়া কমে না।
ধন্যবাদ! উপকারী ও জরুরি তথ্য!
ভালো একটি বিষয়ে ভালো লেখা।
খুব ভালো জেনে রাখার কথা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Expiry medicineএর কার্যকরীতা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে,,,,, দেখা গেছে বেশীরভাগ ওষুধের অনেকটা কার্যকারীতা বজায় থাকে,,,ডেট পেরোলেই বিষ হয়ে যায় না।
খুব ভালো বলেছেন। তবে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করলে আরো ভালো হতো। যেমন –
যার জীবন আছে সেই কেবল মরবে। যার জীবন নেই সে তো মরবে না, তার ক্ষয় ও পরিবর্তন হতে পারে।
যে সকল ওষুধ অজৈব উপাদান দিয়ে তৈরি সেগুলি মরবে না, পরিবর্তনও হবে না। শুধুমাত্র সময়ের সাথে সামান্য ক্ষয় হতে পারে। তাই ব্যবহারে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
যে সকল ওষুধগুলি জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরি বা জীব দেহ থেকে তৈরি সেগুলি মরতে পারে বা নষ্ট হতে পারে তাই ব্যবহারে ব্যবহারকারীর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে পারে। যেমন – পেনিসিলিন, রক্ত, প্লাজমা, ভ্যাকসিন ইত্যাদি।
খুব ভালো।কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম। ডাক্তার বাবুকে ধন্যবাদ।
সাধারণ বুদ্ধিতে এটাই বুঝি – তবু লোকে এমন করতে থাকে যে সাধারণ বুদ্ধি প্রায়ই গুলিয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো বলেছেন
একটা অজানা ব্যাপারে জানা হোল। কাজে লাগবে ।
অনেক ধন্যবাদ ।
অনেকবার সামান্য মেয়াদ উত্তির্ন ওষুধ ফেলে দিয়েছি, আর এই ভুলকরবোনা, জেনে খুব উপকৃতহলাম।
Like!! I blog quite often and I genuinely thank you for your information. The article has truly peaked my interest.
These are actually great ideas in concerning blogging.