সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে চিকিৎসা করার সুযোগ পেয়েছেন বান্টিঙ। সেই বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে পূর্ব কানাডার নিউ ব্রন্সউইক প্রদেশের ক্যাম্বলটন শহরে পাঠানো হলো তাঁকে। সেখানে মাস তিনেকের মতো যুদ্ধকালীন বিশেষ চিকিৎসার প্রস্তুতি নিলেন তিনি। এবার তাঁর গন্তব্য নোভা স্কোটিয়া প্রদেশের হ্যালিফ্যাক্স শহর। সেখান থেকে জাহাজে করে ইংলন্ড। ইওরোপেই তো চলছে আসল যুদ্ধটা। বান্টিঙের গন্তব্য তাই ইংলন্ড। মার্চ ১৯১৭, হ্যালিফ্যাক্স শহরে যাবার আগে একবার টরন্টো এলেন বান্টিঙ, এডিথ রোচের সাথে দেখা করতে। এবার আর শুধু দেখা করলেন না তিনি, সেরে ফেললেন বাগদান পর্বটাও। টরন্টো শহরে, রোচের মামা ক্লার্কের বাড়িতে সারা হলো বাগদান পর্ব। এডিথকে হীরের আঙটি পড়িয়ে দিলেন বান্টিঙ। যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে সেরে ফেলবেন বিয়েটা, এমনটাই ইচ্ছা তাঁদের। বাগদান পর্ব সম্পন্ন করে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য হ্যালিফ্যাক্সের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন বান্টিঙ। ২৬শে মার্চ ১৯১৭, হ্যালিফ্যাক্স থেকে ইংলন্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন বান্টিঙ।
যুদ্ধাহত কানাডিয়ন সেনাদের পরিচর্যার জন্য, ইংলন্ডে ও ফ্রান্সে বেশ কয়েকটা হাসপাতাল স্থাপন করেন কানাডা সরকার। ২রা মে ১৯১৭, ডোভার প্রণালীর কাছে, ইংলন্ডের র্যামসগেট শহরের এই রকমই এক হাসপাতালে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. ক্লারেন্স লেসলি স্টারের অধীনে যোগ দেওয়ার নির্দেশ পেলেন বান্টিঙ। ডা. স্টারের অধীনেই হসপিটাল ফর সিক চিলড্রেনে আউটডোর ডিউটি দিতেন বান্টিঙ। আউটডোর ডিউটির সময় থেকেই বান্টিঙের কর্ম দক্ষতার উপর বিশেষ সন্তুষ্ট হয়েছিলেন ডা. স্টার। এবার ইংলন্ডে এসেও বান্টিঙকে তাঁর অধীনে ডিউটি দেওয়ার জন্য উপর মহলে অনুরোধ করেছিলেন ডা. স্টার স্বয়ং। বান্টিঙও ছিলেন ডা. স্টারের বিশেষ অনুগত। বান্টিঙের ভাষায়, “ব্যক্তি ও সার্জেন, উভয় দিক থেকেই তিনি ছিলেন চমৎকার একজন মানুষ”। র্যামসগেট শহরের হাসপাতালে, ১৩ মাস শল্যচিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করেন বান্টিঙ। মাঝে মাঝে অবশ্য চিকিৎসার কাজে ইংলন্ডের বিভিন্ন শহরে ঘুরতে হয়েছে তাঁকে। তবে যেহেতু তিনি সেনাবাহিনীর বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক, তাই আর পাঁচটা হাসপাতালের মতো আউটডোর বিভাগের রোগী সামলাতে হতো না তাঁকে। সেই অর্থে কাজের চাপ খুব একটা ছিল না তাঁর। এই অবসরে তাই ইংলন্ডের ‘রয়েল কলেজ অব সার্জনস্’-এ এফ.আর.সি.এস. পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। এফ.আর.সি.এস.-এর প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় পাসও করেন তিনি। এবার উচ্চতর পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেন বান্টিঙ।
ইংলন্ডের দিনগুলোতে, সেনাবাহিনীতে চাকরির পাশাপাশি, আরেক বিশেষ রূপে ফুটে উঠতে দেখা যায় বান্টিঙকে। এই সময়ে প্রায়ই দামি দামি উপহার কিনতে দেখা যেত বান্টিঙকে। সুন্দরী ইংরেজ মহিলারা ছিলেন এই সমস্ত উপহারের প্রাপক। একাধিক ইংরেজ মহিলা অথবা নার্সদের সেই উপহার অর্পণ করতে দেখা যেত বান্টিঙকে। বলা হয়ে থাকে, এই সময় একাধিক ইংরেজ মহিলাদের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। আসক্তি ছিল নার্সদের প্রতিও। বান্টিঙের ঊর্ধ্বতন, ডা. স্টারের মেয়েও নার্স ছিলেন। সমস্ত নার্সদের প্রতি তাঁর কড়া নির্দেশ ছিল, কোনো নার্স যেন কারও কাছ থেকে কোনো রকমের উপহার গ্রহণ না করেন। ফলে বান্টিঙের কেনা উপহারগুলো গ্রহণই করতেন না তাঁরা। ডা. স্টারের পরিবার সূত্রেই বান্টিঙের জীবনের এই ঘটনার কথা জানা যায়। তবে ঘটনার গতিবিধি দেখে মনে হয়, কোনো কোনো ইংরেজ মহিলা বা নার্সের প্রতি তাঁর আসক্তি থাকলেও, প্রেম নিবেদন পর্যায় পর্যন্ত গড়ায় নি বিষয়টা। প্রাথমিক একটা অনুরাগের ছোঁয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ব্যাপারটা।
জুন ১৯১৮, ৪র্থ কানাডিয়ন ডিভিশনের ৪৪তম ব্যাটেলিয়নের, ‘ব্যাটেলিয়ন মেডিক্যাল অফিসার’ পদে মনোনীত হলেন বান্টিঙ। ‘ব্যাটেলিয়ন মেডিক্যাল অফিসার’ হিসেবে তাঁর ডিউটি পড়ল, ডোভার প্রণালীর অপর পাড়ে ফ্রান্সের আমিয়াঁ (ইং: আমিয়েন্স) শহরে। আমিয়াঁ শহরের ৩ নম্বর কানাডিয়ন জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। ইংলন্ডের থেকে এখানে তাঁর কাজের দায়িত্ব অনেক বেশি। কারণ আমিয়াঁ শহরের পুবদিকে, কিছুটা দূরেই যুদ্ধক্ষেত্র। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাথমিক শুশ্রূষা করে, আহত সেনাদের আনা হতো এই হাসপাতালে। এখানে সেই আহত সেনাদের পূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হতো।
৮ই অগস্ট ১৯১৮, ভোর ৪.২০, আমিয়াঁ শহরে পুবদিকে জার্মানদের বিরুদ্ধে ঘোর প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলেন কানাডা-ইংলন্ডের মিত্রশক্তি বাহিনী। এই যুদ্ধ ‘ব্যাটল অব আমিয়াঁ’ নামে পরিচিত। শহরের পুব সীমান্তে জার্মান আগ্রাসনকে সফল ভাবে প্রতিহত করেন মিত্রশক্তির সেনারা। বহু ইতিহাসবিদ মনে করেন, আমিয়াঁ যুদ্ধে পরাজয় থেকেই জার্মানদের পতনের সূত্রপাত হয়। সেই অর্থে আমিয়াঁর যুদ্ধ এক ঐতিহাসিক যুদ্ধের স্বীকৃতি পেয়ে থাকে। এক সেনা-চিকিৎসক হিসেবে ঐতিহাসিক এই যুদ্ধের শরিক ছিলেন বান্টিঙ। এই যুদ্ধে দায়িত্বের সঙ্গে তাঁর কর্তব্য পালন করেছিলেন তিনি।
আমিয়াঁ যুদ্ধে জেতার পর, জার্মানদের উপর আক্রমণ জারি রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মিত্রপক্ষ। এর ফলে ১০০ দিনের প্রতিরোধ যুদ্ধের (৮ই অগস্ট-১১ই নভেম্বর) সূত্রপাত হয়। প্রায় ১০০ দিন ধরে ফ্রান্স-বেলজিয়ম সীমান্তে জারি ছিল এই প্রতিরোধ যুদ্ধ। উত্তর ফ্রান্সের পুব দিকে ‘কানাল ডু নর্ড’ [১৪] নামে একটা বড় খাল আছে। এই খাল বরাবর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন জার্মান ও মিত্রশক্তি বাহিনী। এই যুদ্ধ ‘ব্যাটল অব কানাল ডু নর্ড’ (২৭ সেপ্টেম্বর-১ অক্টোবর) নামে পরিচিত। কানাল ডু নর্ড যুদ্ধের সময় আরো দায়িত্ব বাড়ল বান্টিঙের। একজন শল্যবিদ হিসেবে ভ্রাম্যমাণ ১৩তম ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের সদস্য হয়ে এই যুদ্ধের একেবারে সামনের সারিতে ঠাঁই হলো তাঁর। যুদ্ধক্ষেত্রের আহত সেনাদের প্রথমেই আনা হতো এই ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে। সেই সমস্ত আহত সেনাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে পাঠিয়ে দেওয়া হতো জেনারেল হাসপাতালে।
ব্যাটল অব কানাল ডু নর্ড |
ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের ডিউটিতে বান্টিঙ তখন ফ্রান্সের কমব্রেই শহরের। এবারে একেবারে যুদ্ধক্ষেত্রে ঠাঁই হয়েছে তাঁর। সামনেই চলছে সম্মুখ সমর। ২৮শে সেপ্টেম্বর ১৯১৮, যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনেই, বোমার আঘাতে ডান হাত মারাত্মক জখম হয় বান্টিঙের। সেই আঘাত পাওয়া সত্ত্বেও, যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেন বান্টিঙ। নিজের আঘাত উপেক্ষা করে অন্যান্য আহত সেনাদের পরিচর্চায় ব্যস্ত থাকেন তিনি। এটাই তাঁর জীবনের সেরা মুহূর্ত। কঠোর পরিশ্রম, নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, দায়িত্বজ্ঞান, ত্যাগ, সেবা, সবই যেন তখন মূর্ত তাঁর মধ্যে। নিজের আঘাতের যন্ত্রণা সহ্য করেও, টানা ১৬ ঘন্টা নিরলস ভাবে আহত সেনাদের চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ডা. বান্টিঙের ক্ষত থেকে অনবরত রক্ত ক্ষরণ দেখে, তাঁর সহকর্মীরা এক প্রকার জোর করে তাঁকে জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁর হাতের। আপাতভাবে বিপন্মুক্ত তিনি। তবে আরো শুশ্রূষা ও বিশ্রাম প্রয়োজন তাঁর। অস্ত্রোপচারের দু’দিন পর, ইংলন্ডের ম্যাঞ্চেস্টার সেনা হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁকে। এখানে প্রায় তিন সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এর থেকে বোঝা যায়, কতটা গভীর ছিল তাঁর হাতের ক্ষত। কিছু গবেষক অবশ্য মনে করেন, বান্টিঙের হাতের ক্ষত ততটা মারাত্মক ছিল না, তবে সেই ক্ষত শুকোতে দীর্ঘদিন সময় লেগেছিল তাঁর। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলো বান্টিঙকে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরও, মাসাধিক কাল বিশ্রামে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। ৪ঠা ডিসেম্বর ১৯১৮, পুনরায় সেনা বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয় বান্টিঙকে। ইংলন্ডের বক্সটন শহরের গ্রানভিল হাসপাতালে এবার ডিউটি পড়ল তাঁর।
বান্টিঙ তখন ম্যাঞ্চেস্টারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর আত্মত্যাগ, বীরত্বের কথা পৌঁছল উচ্চতর মহলে। তাঁর বীরত্ব আর কর্ম তৎপরতায় মুগ্ধ উচ্চতর মহল। তাঁর আত্মত্যাগ, সেবাপরায়নতা, বীরত্বকে সম্মান জানাতে তাঁকে ‘মিলিটারি ক্রস’ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বান্টিঙেকে জানানো হয় সে কথা। খুশি, এই সম্মানে খুব খুশি তিনি। এই সম্মান তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্মান বলেই মনে করেন তিনি। ১৫ই অক্টোবর ১৯১৮, ম্যাঞ্চেস্টারের হাসপাতাল থেকে মাকে লেখা এক চিঠিতে[১৫] তিনি লেখেন,
প্রিয় মা
আজ রবিবার আমি আবার উঠে দাঁড়িয়েছি তবে সামান্য একটু রক্তপাত হয়েছে [আজও]। আজ সকালের অ্যাম্বুলেন্সে আমার সমস্ত চিঠি এলো, মোট ১৫টা চিঠি [এসেছে]। আর মা, সেকেন্ড ইন কমান্ডের একটা চিঠি পেলাম, তবে তুমি কাউকে বোলো না [যে] আমি মিলিটারি ক্রসের জন্য মনোনীত হয়েছি। এই মুহূর্তে এফ.আর.সি.এস.এর থেকেও এটা উত্তেজক [খবর]। এটা সত্যি হওয়া সত্যি দারুণ খবর।
ফেব্রুয়ারি ১৯১৯ সালে ‘মিলিটারি ক্রস’ প্রদান করা হয় বান্টিঙকে। এদিকে আবার ফেব্রুয়ারি মাসেই ইতি পড়ল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের। যুদ্ধ শেষ, এবার দেশে ফেরার পালা। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ‘এসএস বেলজিক’ জাহাজে করে সেনাবাহিনীর সাথে স্বদেশের পথ ধরলেন বান্টিঙ। মার্চের প্রথম দিকে হ্যালিফ্যাক্স শহরে এসে ভিড়ল বান্টিঙের জাহাজ। স্বদেশে অবতরণ করলেন বান্টিঙ, বীর নায়কের বেশে।
যুদ্ধ শেষ, তাই অতিরিক্ত লোকেরও আর প্রয়োজন নেই সেনাবাহিনীতে। সেনাবাহিনী থেকে ছেড়ে দেওয়া হলো বান্টিঙকে। হ্যালিফ্যাক্স থেকে টরন্টো ফিরলেন বান্টিঙ। সেনা-জীবন থেকে পুনরায় শহুরে চিকিৎসক জীবনে পা রাখলেন বান্টিঙ। অবশ্য পুরোপুরি চিকিৎসক এখনও হয়ে উঠেন নি তিনি, কারণ এখনও ‘ইন্টার্নশিপ’ই তো করা হয় নি তাঁর। এবার তাই শল্যশাস্ত্রে ‘ইন্টার্নশিপ’ সম্পূর্ণ করতে হসপিটাল ফর সিক চিলড্রেনে ডা. ক্লারেন্স লেসলি স্টারের অধীনেই যোগ দিলেন আবার। জুন ১৯২০, ‘সিনিয়র হাউস সার্জেন’এর স্বীকৃতি পেলেন বান্টিঙ। এখন তিনি দক্ষ সার্জেন। তাছাড়া যুদ্ধকালীন তৎপরতার সাথেও বিশেষ পরিচিত তিনি। ফলে টনসিল বা এপেন্ডিক্স এখন ছোটোখাট অপারেশনের পর্যায়ে পড়ে তাঁর কাছে। কিন্তু সমস্যা হলো- চাকরি। টরন্টোর হাসপাতালগুলোয় তো আর দক্ষ সার্জেনের অভাব নেই। ফলে টরন্টোর কোনো হাসপাতালে সার্জেন পদে স্থায়ী চাকরির কোনো আশাই দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। আর চাকরি না পেলে, আর্থিক সুরাহা যে কী ভাবে হবে তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। এমন সময়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালেন তাঁর প্রেমিকা এডিথ রোচ। ইতিমধ্যেই, ১৯১৮ সালে, স্বর্ণপদক সহ স্নাতক হয়েছেন রোচ। বর্তমানে ইঙ্গারশোল শহরে ‘ইঙ্গারশোল ডিসট্রিক্ট কলেজিয়েট ইন্সটিটিউট’-এর ভাষা শিক্ষিকার পদে চাকরি করছেন তিনি। ইঙ্গারশোলের ২০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত লন্ডন শহরের তখন খুব রমরমা। সদ্য গড়ে উঠা এই শহরের প্রতিপত্তি হুহু করে বেড়ে চলেছে তখন। নিত্য নতুন গজিয়ে উঠছে জনবসতি। শহরের সেই বিকাশের তুলনায় শিক্ষা, চিকিৎসা বা অন্যান্য পরিষেবা বড়ই অপ্রতুল। এই বাড়ন্ত শহরেই নিজের চেম্বার খুলুক বান্টিঙ- পরামর্শ দিলেন রোচ। তাছাড়া ইঙ্গারশোল ও লন্ডনের দূরত্ব খুব বেশি নয়। ফলে তাঁদের মধ্যে যোগাযোগটাও অনেক বাড়বে। রোচের প্রস্তাব মনে ধরলো বান্টিঙের। ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ করতেই মনস্থির করলেন তিনি। সেই মতো জুন মাসে লন্ডন শহরে এসে একটা বাড়িও পছন্দ করে গেলেন তিনি। ১লা জুলাই ১৯২০, লন্ডন শহরে নিজের চেম্বার খুললেন বান্টিঙ।
(চলবে)
[১৪] উত্তর ফ্রান্সের ‘কানাল ডি লা শঁসি’, ‘কানাল ডি লা সোম’ এবং ‘কানাল ল্যাটিরাল আ লুয়েস’ খালকে তিনটে যুক্ত করার জন্য ‘কানাল ডু নর্ড’ (ফ্রান্সের একটা প্রদেশের নাম নর্ড) কাটার কাজ শুরু হয় ১৯০৮ সালে। ১৯১৪ সালে, বিশ্বযুদ্ধের প্রাককালে, ৯৫ কিমি লম্বা এই খালের ৭৫% খনন কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় খাল কাটার কাজ স্থগিদ রাখা হয়। খালের অসম্পূর্ণ অংশেই শুরু হয় যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলে খালের অসম্পূর্ণ অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই ক্ষতির জেরে, যুদ্ধোত্তর পর্বে খাল কাটার কাজ স্থগিদ রাখা হয়। ১৯৬০ সালে খালের অসম্পূর্ণ অংশের কাজ পুনরায় শুরু হয় এবং ১৯৬৫ সালে এই খনন কার্য শেষ হয়।
[১৫] ইংলন্ডে ও ফ্রান্সে থাকাকালীন প্রতি রবিবার নিয়ম করে মাকে চিঠি লিখতেন বান্টিঙ।