বিচারপতি অনির্বাণ দাস তাঁর রায়ে পুলিশ এবং সিবিআই দুই তদন্তকারী সংস্থার গাফিলতি যেভাবে ছত্রে ছত্রে উল্লেখ করেছেন তা দেখে মনে হবে তাঁরা তদন্ত তদন্ত খেলা খেলেছেন কেবল একজন অপরাধীকে সামনে রেখে বিরাট একটা সংগঠিত অপরাধকে আড়াল করার জন্যেই। কেন তা বুঝতে ফেলুদার মগজাস্ত্র লাগে না।
রাজ্য আর সমস্ত দুর্নীতির মতো স্বাস্থ্যব্যবস্থার চরম দুর্নীতি যার শিকার অভয়া, সেটাকে আড়াল করবে সেটাই স্বাভাবিক। আর কেন্দ্র রাজ্যকে আড়াল করবে ক্ষমতায় টিঁকে থাকার সমীকরণে, সেটাও আজ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
আমি শুধু একটা কথা ভাবি। এই রাজনৈতিক শকুনগুলোর আবেগ কি শুধু ক্ষমতা দখল আর দুর্নীতি করাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়? ন্যূনতম মানবিকবোধটুকুও থাকতে নেই? না হলে এত বড় পৈশাচিক একটা অপরাধকে কী করে ধামাচাপা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে তারা?
মুখ্যমন্ত্রী নাকি প্রথম থেকেই পুলিশি ক্রিয়াকর্মের নিজে তদারকি করেছিলেন। তাঁর নির্দেশে পুলিশ কী কী অপকর্ম করেছিল আর যা করা উচিত ছিল তার কী কী করেনি এবং পরবর্তীতে সিবিআই তার প্রভুদের নির্দেশে কীভাবে এই কুকর্মের সঙ্গত করেছে তার একটা ধারণা আপনারা বিচারপতি অনির্বাণের এই রায়ের ভেতরের পর্যবেক্ষণ থেকে পেয়ে যাবেন। আমার তো মনে হয় যারা প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে ঠিক তাদের মতো একই অপরাধে অপরাধী যে রাজনীতিক ও তদন্তকারী অফিসাররা অপরাধের সত্য উদঘাটন যাতে না হয় তার চেষ্টা করে। এদেরও যাবজ্জীবন কারাগারে থাকা উচিত।
আজ আনন্দবাজারে এই রায়ের ওপর চমৎকার প্রতিবেদন বেরিয়েছে। এই লেখার সঙ্গে সেটা দিয়ে দিলাম। একটু মন দিয়ে পড়লে বুঝতে সুবিধে হবে আমার কথাগুলোর সারমর্ম। যারা সততার প্রতীকের পক্ষে আজও গলা ফাটাচ্ছেন তাঁরাও একটিবার পড়ে দেখুন।
সব দেখে অসহায় রাগে দুঃখে ছটফট করি। বুকটা ফেটে যায়। উপায় খুঁজি, আয়ূধ খুৃজি।
রাজ্য এই ধর্ষণ-খুন ও দুর্নীতিকে আড়াল করার পক্ষে, কেন্দ্র রাজ্যের পক্ষে। এখন আমাদেরকে ঠিক করতে হবে আমরা রাজনৈতিক শকুনদের পক্ষে থাকব নাকি অভয়ার বিচার চেয়ে পথের লড়াইয়ের পক্ষে যাব। আমাদের এটাই একমাত্র আয়ূধ।