Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

আলো জ্বেলে যাও ১

1539693232phpXM7m2h
Rumjhum Bhattacharya

Rumjhum Bhattacharya

Psychologist
My Other Posts
  • March 9, 2023
  • 9:11 am
  • 2 Comments

কি লিখছি? কেন লিখছি?

 একটা সময়ের দলিল লিখতে চাইছি। নকশাল পরবর্তী সময়ের কিছু আন্দোলন, তার সামাজিক প্রেক্ষিত, অধিকারের জন্য মানুষের এক জোট হয়ে সংগ্রাম, অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া, লিখতে লিখতে এসবের মধ্যে একটা অন্য রকম জীবন বাঁচার স্বাদ পেয়েছি। সত্তরের দশকে জন্মানো আমি আন্দোলন কি, মানুষের অধিকারের লড়াই কি, শ্রেণী বৈষম্য কারে কয় গায়ে মাখে না মাথায় দেয় কিচ্ছুটি জানতাম না। ছা-পোষা মধ্যবিত্ত পরিবারের রক্ষণশীল ঘেরা টোপে বড় হওয়া আমি একদিন গিয়ে পড়লাম চেঙ্গাইলে। সুমিতদার (ডঃ সুমিত দাশ), সঙ্গে শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ পরিচালিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখে শুনে ভাল লেগে গেল। ‘ছোটলোকেদের গায়ের ঘামের গন্ধ, সার দিয়ে চিকিৎসার জন্য বসে থাকা, স্বাস্থ্য কর্মী মেয়েদের ব্যস্ততা, দুপুরে সবাই মিলে পাত পেড়ে বসে ডাল ভাত খাওয়া, সন্ধ্যে গড়িয়ে যাওয়া পর্যন্ত রোগী দেখা ক্লান্ত ডাক্তারবাবুদের দেখে মনে হল আসলে পৃথিবীটা রূপকথার মতোই। বড্ড ভাল। জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া যায় এমন জায়গায় এলে। যেখানে সমাজের বেশির ভাগ মানুষ স্বার্থের অলাত চক্রে বন্দী সেখানে কিছু মানুষ আজও কাজ করে চলেছে কাজ করার তাগিদে।  দেওয়ালে লেখা অক্ষরগুলো শব্দ আর বাক্য হয়ে হৃদয় স্পর্শ করল। “স্বাস্থ্য কোনও ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য আমাদের অধিকার” …… স্বাস্থ্যের জন্য আন্দোলন। শুরু হল খোঁজা। ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যুক্ত থেকেছি, সবাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। অনেক কিছু জানতে পেরেছি, শিখেছি, পড়েছি। মনে হয়েছে আশির দশকের এই আন্দোলনগুলো আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাহস করে লিখতে শুরু করলাম। ঠিক ইতিহাসের মতো করে নয়, ইতিহাস আশ্রয় করে বলা চলে।

সব চরিত্ররা কাল্পনিক?

কিছু চরিত্র কাল্পনিক, কিছু চরিত্র বাস্তবের ছায়া অবলম্বনে সৃষ্টি করা। অতীতের ঘটনাগুলো বর্ণনা করতে গিয়ে আমাকে কল্পনা ও অনুমানের আশ্রয় নিতে হয়েছে। রসবোধ সৃষ্টি করতে কল্পনার সাহায্যে ঘটনা নির্মাণ করেছি। তার দায় আমি স্বীকার করে নিচ্ছি। সংলাপ ইত্যাদিও অনুমান ভিত্তিক ভাবে নির্মিত। তাই পাঠকের কাছে আমার অনুরোধ এই ধৃষ্টতা নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন। আমি বিভিন্ন বই পড়ে, ডকুমেন্টারি দেখে, সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের সাহায্য নিয়ে তথ্য যাতে নির্ভুল হয় সেই চেষ্টা করেছি। ডঃ জয়ন্ত দাস ও ডঃ পুণ্যব্রত গুণ আমাকে অনেক সময় দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে অনেক সাহায্য করেছেন। আমি তাঁদের প্রশয় পাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞ।

(১)

শুভ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে পায়ে পায়ে এগিয়ে যাচ্ছিল গেটের দিকে। শরতের শেষ, হেমন্তের শুরুর এ সময়টা হাওয়ায় ঠান্ডা একটা আমেজ  থাকে। রোদের তেজও নরম হয়ে আসছে। হাঁটতে হাঁটতে চারপাশটা চোখ বোলায় সে। ভেতরে ভর্তির কাউন্টারের সামনে কিছু  ছেলে ঘুর ঘুর করছিল। শুভ লক্ষ্য করল ওরা কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলে মেয়েদের সঙ্গে ভাব জমাবার চেষ্টা করছে। তাই ইচ্ছা করেই চট জলদি টাকা জমা করে হল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল। আবার একটা নতুন জায়গা, নতুন মানুষজন শুভ মনে মনে আতঙ্কিত হয়। প্রাথমিকভাবে এড়িয়ে চলতে চায়।  ওর স্কুলের থেকে এখানে কেউ চান্স পায় নি। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বেশ কয়েকজন পেয়েছে অবশ্য। তবে আজ কাউকে দেখতে পেল না। উফ নরক গুলজার যেন! এত অপরিষ্কার জায়গাটা নাকি এশিয়ার প্রথম মেডিক্যাল কলেজ। চারপাশে ইতঃস্তত ছড়িয়ে আছে রুগীর বাড়ির লোক, যেন গ্রামের হাটের মতো। সম্মিলিত একটা ভন ভন আওয়াজ, মাছি, উপচে পড়া ডাস্টবিন, রক্তমাখা তুলো নিয়ে কুকুরের টানাটানি, দেখতে দেখতে গা গুলিয়ে উঠল। মনটা একটু দমেই গেল বলা চলে। এখানেই এখন পাঁচ বছর কাটাতে হবে। তবে নীচের দিকে না তাকিয়ে মুখ তুলে একটু ওপরের দিকে তাকিয়ে  লাল রঙের মাথা তুলে থাকা বিল্ডিংগুলো দেখলে মনে বেশ একটা সমীহ হয়। মনে মনে ভাবে, শালা! ইংরেজগুলো বানিয়ে ছিল বটে! মানতে হবে।  লাল্মুখো ব্রিটিশগুলোর টেস্ট ছিল। আজ মন অনেকটাই হালকা লাগছে। অবশেষে সে তার লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন তো তার আজকের না। জীবনে দু’জন ডাক্তারকে খুব কাছ থেকে দেখেছে। এক তার জেঠু আর এক তাদের পাড়ার সাধন ডাক্তারকে। মানিকতলা মোড়ের মর্ডান ফার্মেসীর মালিক সাধন ডাক্তার হলেন এলাকার মানুষের কাছে ভগবান। বিরাট চেম্বার। এক ঘরে রুগীরা বসার ব্যবস্থা, আর এক ঘরে ডাক্তারবাবু রুগী দেখেন। আর এক ঘরে ওষুধখানায় ওষুধ দেওয়া চলছে। ডাক্তারবাবু সৌম্যকান্তি। সময় দিয়ে রুগী দেখেন, মন দিয়ে রুগীদের কথা শোনেন, তারপর অনেকক্ষণ ধরে নাড়ি টিপে, বুকে স্টেথো লাগিয়ে অবশেষে ওষুধের ব্যবস্থা করেন। ছোট মোটা, বেঁটে পাতলা অনেক রকম বোতলে মিস্কচার নয় বড়ি গুড়িয়ে পুরিয়া। এলাকার লোকের সাধারণ সব রোগের নিস্পত্তি ওতেই হয়। খুব বাড়াবাড়ি না হলে হসপিটালে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। আর শুভ এখন নিজের চোখেই তো দেখল সব। হাসপাতালের যা ছিরি। এখানে মনে হচ্ছে ঢোকার রাস্তাটাই আছে। বেরোবার রাস্তাটা নেই। শুভ অবশ্য সাধন ডাক্তারের মতো হতে চায় না। ছা’পোষা মানুষের ডাক্তার হলে জেঠুর মতো নীল রঙের অ্যামবাসাডার গাড়ি থাকে না। ভাবতে ভাবতে শুভ’র ছোটবেলার একটা কথা মনে পড়ে গেল। শিশু অবস্থায় মানুষ কত সরল থাকে! খুব সহজেই সাধারণ তত্ত্বে পৌঁছে যেতে পারে। যেমন পৌঁছেছিল শুভ, শুভব্রত মজুমদার। শুভ ভাবত ওর জামাগুলো কিছুদিন পর পর কেমন ছোট হয়ে যায়, তখন মা ওগুলো বিনি পিসিকে দিয়ে দেয়। বিনি পিসি নিজের ছেলের জন্য জামাগুলো নিয়ে যায়। মানে যে কোনও ব্যবহারের  জিনিস ছোট হবেই। তখন সেগুলো অন্যের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ হবে। শুভ-র ধারণা হয়েছিল জেঠুর ওই গাড়িটাও বোধ হয় একদিন ছোট হয়ে যাবে তখন জেঠু আর তাতে বসতে পারবে না। তখন শুভ পেতেই পারে জেঠুর গাড়িটা। একদিন জেঠুর বর্ধমানের বাড়িতে  খেতে বসে জেঠুকে বলেই ফেলেছিল, “ জে-এ-এঠু, গা-আ-আ-ড়িটা ছোট হয়ে গে-গে-গেলে আমায় দি-ই-ই দিয়ে দিও।“ সবাই সমস্বরে হেসে উঠে ছিল। একে তো শুভ তোতলা তার ওপর এমন অদ্ভূত একটা কথা শুনে উপস্থিত বড়োরা না হেসে পারে নি। সে সময় ওরা শান্তিনিকেতনে থাকত মাঝে মাঝে বর্ধমানে জেঠুর বাড়ি বেড়াতে যেত। বাবা তখন বিদেশে। বর্ধমানে গিয়ে যখন থাকত তখন শুভ বুঝতে পারত তার জেঠুর প্রচুর পয়সা প্রচুর সম্মান। সেই ছোট্ট বয়স থেকেই প্রতিষ্ঠিত ডাক্তারের এই ছবিটাই গেঁথে গিয়েছিল ওর মনে। স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ অহীন্দ্রমোহন মজুমদারের দরজায় রুগী পক্ষের তরফ থেকে এসে পৌঁছত নানা রকমের যৌতুক। মাছ, সবজি, মিষ্টি সব জড়ো হতো একতলা জুড়ে ছড়ানো জেঠুর চেম্বারে। হাত কচলাতে থাকা কৃতজ্ঞ রোগীদের ভিড় দেখেছে শুভ। তুলনায় ওদের অবস্থা  চিরকালই সাদামাটা ছিল। মানিকতলা পোস্ট অফিসের কাছে একটা ভাড়া বাড়িতে থাকত ওরা। বাবা বিদেশ থেকে ফিরে এসে প্রেসিডেন্সী কলেজে পড়াতে শুরু করলেন। গেট থেকে বেরিয়ে দু’পা হাঁটলেই বাবার কলেজ। মনে পড়তেই শুভ কি একটু সচেতন হল? কে জানে কলেজটা বাবার কাজের জায়গার একদম গায়ে গায়ে হওয়াটা শুভ-র পক্ষে কতটা ভাল হল। গত দু’ বছর রামকৃষ্ণ মিশনের কড়া শাসনে থেকেছে। কলেজে এসে অন্ততঃ একটু মুক্তির স্বাদ ওর বয়সী সব ছেলেরাই পেতে চায় । এই সময়টা বাবা-মায়ের থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই মঙ্গল। শুভ আর পাঁচটা ওর বয়সী ছেলের থেকে একটু আলাদা। সেটা শুভ বোঝে। তোতলা বলে স্কুলে ওকে কম হেনস্থা হতে হয় নি। এমন কি স্কুলে যারা শিক্ষক বলে নিজেদের দাবী করে তারা পর্যন্ত ওকে অনেক হেনস্থা করেছে। সে সব দিনের কথা শুভ ভুলে যায় নি। তখন ক্লাস সিক্স। রবিন স্যারের ক্লাস হওয়ার কথা। স্যার আসেন নি বলে ক্লাস করতে এলেন ধীরেন স্যার। ধীরেন স্যার ওদের ওয়ার্ক এডুকেশন ক্লাস নেন। স্যারের ক্লাসে শুভ বেশ গুটিয়েই থাকত। কারণ স্যার ওকে দেখলেই কেমন যেন খেপে গিয়ে বকাবকি শুরু করতেন। শুভ বুঝত কোনও কারণ ছাড়াই স্যার ওকে হেনস্থা করতেন। ধীরেন বাবু-র কাজ ছিল ক্লাসে এসেই ওনার পেটোয়া ছাত্রদের এক এক করে ডেকে এনে ক্লাসের সামনে দাঁড় করিয়ে একে একে গান আবৃত্তি এসব করানো। সেদিনও সে সব চলছিল। শুভ পেছনের বেঞ্চের আগের বেঞ্চে প্রায় লুকিয়ে বসে খাতায় ধীরেনবাবুর মুখ আঁকার চেষ্টা করছিল একমনে। মাথায় মস্ত একটা টাক। ডেলা ডেলা দুটো চোখ যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসার খাপ। আচমকাই শুভ-র নাম ধরে ডাক দিল লোকটা। হতচকিত শুভ চমকে ওঠল সেই বাজখাঁই আওয়াজে। “অ্যাই, তোতলা চন্দর, এদিকে আয়।“ শুভ-র কান গরম হয়ে উঠেছিল সেই অপমানে। ক্লাসের ছেলেরা তখন ওর দিকে তাকিয়ে হেসেই চলেছে। সঙ্গে স্যারও। শুভ-র সেই মূহুর্তে নিজেকে চিড়িয়াখানার জন্তু বলে মনে হচ্ছিল। গুটি গুটি পায়ে সে এগিয়ে গেছিল স্যারের টেবিলের দিকে। “গরু গাধা সব তো এক হয়ে গেছে এখন। মুড়ি আর মিছরির এক দর। পরীক্ষা না দিয়েই দিব্যি তো ক্লাসে উঠে গেলি। মাথার গোবরগুলো তো এখন শুকিয়ে কাঠ। নে দেখি একটা কবিতা বলে শোনা।“ শুভ পারছে না। জিভ জড়িয়ে যাচ্ছে। একটাও শব্দ না আটকে উচ্চারণ করতে পারছে না। হাসির রোল উঠেছে সারা ক্লাসে। সেদিন বাড়ি ফিরে একটাও কথা বলে নি কারো সাথে। ভাই কত চেষ্টা করল শুভ-র সঙ্গে খুনসুটি করার কিন্তু শুভ-র তখন বেঁচে থাকার এক বিন্দুও ইচ্ছা নেই। যেন এই জগতে তার মতো অপদার্থ একটা মানুষ ভুল করে জন্মে গেছে। আকাশে কৃষ্ণপক্ষের দ্বাদশীর অবলা চাঁদ তখন ভেসে আছে আকাশে, জানলা দিয়ে উঁকি মেরে সে দেখে বালিশে মুখ গুঁজে পড়ে আছে শুভ।  মনে মনে  ভাবছে কি করে মরলে একটু কম লাগবে? গলায় দড়ি নাকি ছাদ থেকে ঝাঁপ। কি লাভ এমন বেঁচে থেকে! তবু শুভ মরে নি। বেঁচে থেকেছে। ওই স্কুলেই আবার গেছে, ওই ক্লাসে বসেছে। ওই ধীরেনবাবু আবার অপমান করেছেন। শুধু সেই ঘটনার পর থেকে স্কুলে কোনও দিন কোনও ইভেন্টে অংশ গ্রহণ করে নি। ইচ্ছা করেছে কিন্তু এগিয়ে যাওয়া হয়ে ওঠে নি। উল্টে  শামুকের মতো গুটিয়ে নিয়েছিল নিজেকে। শুভ চাইত পড়ুয়া ছাত্র ছাড়া তার একটা অন্য আইডেন্টিটি তৈরি হোক। সে সুযোগ হয় নি। প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অন্য কিচ্ছু করার নেই তাই পড়াশোনাটাই করেছে খুব মন দিয়ে।

তার পরে আসতে আসতে জীবনের মোড় ঘুরতে লাগল। ক্লাস এইট থেকে স্কুলে প্রথম সারিতে চলে এল সে। মাধ্যমিকে একটা দুর্দান্ত রেজাল্ট, বোর্ডে র‍্যাঙ্ক হল পঁচিশ। বাবা ভর্তি করে দিল রামকৃষ্ণ মিশনে। ইলেভেন টুয়েল্ভ দু’ বছর কাটল রামকৃষ্ণ মিশনের জেলখানায়। সেখানেও সেই ডিস্ক্রিমিনেশন। গুরুগিরির নামে আসলে লোভ আর ক্ষমতার অহংকার! ভেতরের নোংরামোগুলো জেনে গেছিল বলে মনটা কেমন বিষিয়ে উঠেছিল। এই যে এত রকম প্রতিষ্ঠান, সে পরিবারই হোক আর ধর্ম প্রতিষ্ঠানই হোক, বিদ্যালয়ই হোক আর মহা বিদ্যালয় সেখানে ক্ষমতায় বসে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে আদিম প্রবৃত্তিরা ঘাপটি মেরে বসে থাকে। শিক্ষা সেই ভেতরের আদিম প্রবৃত্তিগুলোর ওপর পুরোপুরি প্রলেপ বুলোতে পারে না।  সময় সুযোগ পেলে নখ দাঁত বার করে তারা প্রকট হয়। এটা সে অস্বীকার করে না আজ যে সে এই বিল্ডিংটার সামনে এসে পৌঁছেছে তার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও অবদান নেই। তবু প্রতিষ্ঠানের ওপর কেমন একটা জাত রাগ জন্মে গেছে তার। সে প্রতিষ্ঠান তার বাবা হোক, বা স্কুলের মাস্টারমশাই, কিংবা রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ। আসলে চার দিকের এই ক্ষমতায়ণ তাকে আরও বিদ্রোহী করে তুলেছে যেন। শুভ মনে মনে উষ্ণ হয়ে ওঠে। এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানোর থেকে কেটে পড়াই ভাল ভেবে গেটের দিকে হন হন করে যেই হাঁটা লাগিয়েছে এমন সময় শুনতে পেল কে যেন পেছন থেকে ডাকছে। “ অ্যাই, অ্যাই দাঁড়া দাঁড়া।“ শুভ মনে মনে প্রমাদ গোনে। যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধে হয়!

(ক্রমশঃ)

PrevPreviousআন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস
Nextনিরীহাসুরের গুটানো বারমুডাNext
3.8 4 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Partha Mukherjee
Partha Mukherjee
11 days ago

Bhalo laglo

0
Reply
Dunia Gangopadhyay
Dunia Gangopadhyay
10 days ago

বাঃ

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

March 21, 2023 No Comments

পশ্চিমবাংলা এই মুহূর্তে অ্যাডেনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিপর্যস্ত। আইসিএমআর-নাইসেড-এর সম্প্রতি প্রকাশিত যৌথ সমীক্ষা  জানাচ্ছে, ভারতের ৩৮% অ্যাডেনোভাইরাস রোগী পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। এমনকি সুপরিচিত ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান-এ একটি

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

March 20, 2023 No Comments

৪/৩/১৯৯০ শৈবাল–আমাকে প্রথমে নির্বাচনের খবর। আমরা একটাও জিততে পারিনি। জনকও হেরেছে। ভেড়িয়া ৭০০০ ভোটে জিতেছে। আমরা গ্রামে ১২ হাজার ভোট পেয়েছি। বি. জে. পি. ২১

গ্রামের বাড়ি

March 19, 2023 No Comments

১৪ দিন দশেক পরে দেবাঙ্কন এসে হাজির। বলল, “তোদের কফি ধ্বংস করতে এলাম। বাপরে বাপ, যা গেল! যাক, চার্জশিট হয়ে গেছে। সাংঘাতিক কনস্পিরেসি। সোমেশ্বর নাথ

মহিলাদের জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান!

March 18, 2023 No Comments

খবরের কাগজে কত খবরই তো আসে। বড় একটা অবাক হই না। কিন্তু একখানা খবর পড়ে একেবারে চমকে গেলাম। কলকাতার একটি নামকরা কর্পোরেট হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে

রম্য: হোলিকা দহন

March 17, 2023 No Comments

দখিনা হাওয়া জবুথবু শীতের শরীরকে দেয় দোলা। শুকনো পাতা ঘূর্ণি বাতাসে ঘুরতে ঘুরতে হারিয়ে যায়। দিন বাড়ে। বয়সও। ধরে রাখা যায় কি তাকে? যায় না।

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

Dr. Jayanta Bhattacharya March 21, 2023

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

Dr. Asish Kumar Kundu March 20, 2023

গ্রামের বাড়ি

Dr. Aniruddha Deb March 19, 2023

মহিলাদের জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান!

Dr. Bishan Basu March 18, 2023

রম্য: হোলিকা দহন

Dr. Chinmay Nath March 17, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

428269
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]