আম্ফান বিধ্বস্ত সুন্দরবন এর বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ ও স্বাস্থ্য শিবিরের উদ্দেশ্যে টিম হিসেবে আজ সকালে বেরোন হল। টিমে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম–শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের মেডিকেল টিমে রয়েছে ডাঃ মৃন্ময় বেরা, স্নিগ্ধা হাজরা, আমি, কলকাতা মেডিকেল কলেজ এর দুই ইন্টার্ণ ডাক্তার অর্ণব সাহা, সৌমদীপ রক্ষিত এবং মেডিকেল কলেজের ছাত্র, MCDSA এর সদস্য আপন সামন্ত। এছাড়াও টিমে বিশ্বজিত হাজরা, অমিতাভ ভট্টাচার্য সহ #আম্ফানরিলিফনেটওয়ার্ক এর চার সদস্য এবং দিল্লী জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমর্ত্য।
গতকাল ই রওনা দেওয়ার কথা ছিল। বাধ সাধল আকাশভাঙা বৃষ্টি। আগের রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টিতে ওদিকের নেটওয়ার্ক পাওয়াই মুশকিল হচ্ছিল। সকালে কোনরকমে যোগাযোগ করা গেলে স্থানীয় সংগঠক সুবল দা রা জানালেন যে অবস্থা বেশ খারাপ, এই আবহাওয়ায় স্বাস্থ্য শিবির দূর, পৌঁছনোই সমস্যাজনক হবে তোমাদের ভিতরের দিক টায়। ফলে পোস্টপোন করা হল যাত্রা। যদিও #আম্ফানরিলিফনেটওয়ার্ক এর সাথে যোগাযোগ করে কিছু সাথী ত্রিপল, শুকনো খাবার, খাবার রান্নার সর সাধারণ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দুটি আলাদা মালবহনকারী গাড়িতে রওনা দিয়েছিলেন কালই। ওই বৃষ্টির মধ্যেই। বিকেলের দিকে বৃষ্টি ধরে এলে সেই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও সম্ভব হয়েছে।
আজ ও ওয়েদার ফোরকাস্টে বৃষ্টি ঝড় দেখাচ্ছে গোটা হিংগলগঞ্জের দিক টা। তবু খানিকটা ঝুঁকি নিয়েও বেরিয়ে পড়া হল। আম্ফান হয়ে বাঁধ ভাঙা, জল ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম ভাসার পর আজ দশম দিন। কমিউনিটি মেডিসিন এর শিক্ষা অনুযায়ী এই সময় থেকেই আন্ত্রিক, পেটখারাপ এর মত রোগ গুলির প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। ফলে আর বেশি দেরি করা যেত না। সুন্দরবনের ভিতরের দিক গুলিতে স্বাস্থ্য শিবির করার প্রয়োজনীয় সময় এখন থেকেই।
যাই হোক, নেটওয়ার্ক খুব থাকছে না ওইদিকে। ফলত আপডেট সেই অর্থে দেওয়া সেভাবে যাবে না ফিরে আসার আগে। মূলত চকপাটলি, পাটলিখানপুর হয়ে এই জায়গা গুলো কভার করে সরদারপাড়া, মাধবকাটি, হেমনগর ও আশেপাশের অঞ্চল গুলোতে স্বাস্থ্যশিবির এবং ত্রাণের কাজে যুক্ত থাকব আগামী চারদিন।
এ বাদেও SSU-WBDF এর আরেকটা মেডিকেল টিম কাল পরশু কুলতলির দিক গুলিতে স্বাস্থ্য শিবিরের জন্য বেরোচ্ছে। কাল, পরশু, তার পরের দিন সল্টলেক, তপসিয়ার কাছে আম্ফান বিধ্বস্ত কিছু বস্তি তে এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বিদ্যাধরপুরের গ্রামীণ জনবসতি অঞ্চলে স্থানীয় কিছু সংগঠনের উদ্যোগে স্বাস্থ্য শিবির রয়েছে।
সুন্দরবন সহ আম্ফান বিধ্বস্ত বাংলার শ্রমজীবী, প্রান্তিক মানুষদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই এর পাশে থাকছি আমরা, আপনারাও সকলে পাশে থাকুন।
“বাঁঁচব রে বাঁচব আমরা, একসাথে বাঁচব
ভাঙা বুকের পাঁজর দিয়া নয়া বাংলা গড়ব”