গতকাল বলাকা গ্রুপে একটা ছবি দেখে চমকে গেলাম। আয়নার সামনে এক বোড়ে। প্রতিবিম্বে রাজা। এই ভাবনাটাকে নিয়ে আরো দুটো আঙ্গিকে লেখার ইচ্ছে আছে…
নেই-মানুষের মতন বাঁচি সারাজীবন ধরে,
খিদের খোঁটায় রোজের রুটিন গরুর মতো ঘোরে,
ঠেলায় পড়ে একখানা খোপ যাওয়া কোনোক্রমে
ভাঙা আশার টুকরো অনেক ঘরের কোণে জমে,
মন্ত্রী রাজা হওয়া তো দূর, নৌকা গজও নই,
ছকের মাঝে রই ছডিয়ে, নেই কোনো হইচই,
কাঁপনবিহীন বেঁচে থাকি, নিঃসাড়ে যাই সরে,
সমকালের রেজকি-মানুষ, আজন্মকাল বোড়ে।
মন্ত্রীমশাই সেদিন এসে বলেন ডেকে, ওরে,
তুই যে রাজা, ভুলে গেলি সেটাই কেমন করে?
এমন মলিন যাপন যে আর চোখে দেখা যায় না.
যাদু আমার, এই নে তোকে দিলাম জাদু-আয়না
এ দর্পণের নাম দিয়েছি মহান গণতন্ত্র,
ভোটের আগে আমার নামে জপলে শ্লোগান-মন্ত্র
দেখতে পাবি বোড়ের বেশে তুই আসলে রাজা
মিটিং হলে ভিড় যেন হয়, সৈন্যকে তোর সাজা।
আয়নাখানা খুব বাহারী, যেই তাতে চোখ রাখি
আমায় দেখায় রাজামশাই.. অবাক চেয়ে থাকি,
বেবাক দেখো ভুল জেনেছি জন্ম থেকেই আমি,
মন্ত্রীমশাই ঠিক বলেছেন, আমিই তো ভূস্বামী,
মন্ত্রীকে সেই আয়নাটাতে দেখায় বোড়ে.. ইসস
হুকুম চালাই .. কানাই বলাই, ভোটটা ওকেই দিস।
বলাই কানাই রিঙ্কু ঝুমা আয়না দেখে বোঝে,
তারাও রাজা, হাতড়ে প্রতীক যে যার বোড়ে খোঁজে।
ভোট হয়েছে, ভোট হয়েছে, আমার বোড়ের গদি,
মর্জিমাফিক খেলবে ছকে, হুকুম চালাই যদি,
সেই ধারণায় ‘অভাব হটাও’ হুকুম দিলাম যেই,
কোথায় বা কি, ফক্কাফাঁকি, আয়নাখানা নেই।
কোথায় গেলো, কোথায় গেলো, খুঁজতে গিয়ে দেখি,
রাজার পোশাক মন্ত্রী পরে দাঁড়িয়ে আছেন, একি!
কাছে যাওয়ার চেষ্টা হতেই আটকে দিলো সেপাই,
মন্ত্রী ওরফে রাজা হাঁকেন, ওই বোড়েটার কি চাই?
এক সেপাইয়ে কানের কাছে বললো চুপিচুপি,
পাঁচবছরে একবারই হয় রাজা বোড়ের গুপি।
বাকি সময় বোড়ে বোড়েই, মন্ত্রী রাজা-রূপী..