★
পরপর দুটো(মতান্তরে তিনটে, একটি অনিকেত, অতি সংক্ষিপ্ত) তিরস্কার বিদ্ধ করল আমাকে। সব কটাই, তিরস্কার। তবু মায়াভরা ভালোবাসায় আর্দ্র। এইটুকুই প্রাপ্তি। এই তীব্র ভালোবাসায় ভিজে থাকি আনখশির।
বুঝি আমার অনেক কিছু করার কথা ছিল। হবার কথা ছিল। যাবার কথা ছিল প্রায় অগম্য কোনও গন্তব্যে, হয়তো বা। করা হয়নি। হতে পারিনি। যেতে পারিনি সেই দিগন্ত পারে।
★
তিরস্কার ১)
বহুদিন আগে যখন ফেসবুক আসেনি, আপনাকে তখন খবরের কাগজে আবিষ্কার করে চমকে উঠেছিলাম! এত ভালো লেখনী আপনার, এত শক্তিশালী হাত! কিন্তু আপনার এখনকার পোস্টগুলো দেখে সত্যিই কষ্ট হয়, নিজেকে এভাবে নষ্ট করছেন দেখে। প্রতিভার অপচয় যাকে বলে। আমাকে ক্ষমা করবেন, আমি আপনার চেয়ে অনেক ছোট, এসব বলা হয়তো ধৃষ্টতা। তবুও বললাম আজ, মনে হলো একবার অন্তত বলে দেখি। আপনার এখানকার বন্ধুবৃত্তে কেউ বলবেন না, বললে এতদিনে একবার হলেও ভাবতেন।
দেখুন, আপনার রাজনৈতিক অবস্থান যাই হোক, সেটা নিয়ে বলার জায়গায় কেউ নেই। ওটা ব্যক্তিগত choice; কিন্তু আপনার প্রতিদিনকার একাধিক পোস্টে যা দেখা যায় তার মধ্যে অন্তত আমাদের কেউ কেউ, যারা আপনার লেখার মণিমুক্তা এখনও খুঁজে বেড়াই, তাদের রসাস্বাদনের কোনও উপকরণ থাকে না। যদি রাজনীতিই করতে হয় তাহলে আরো actively করুন। তাতে অন্তত একটা জিনিস ভালো হবে, শিক্ষিত মানুষ প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে এলে তো ভালই। বাম রাজনীতিতে জোয়ার এলে আখেরে রাজ্য রাজনীতিতে সুস্থতাই বাড়বে।
আমার এই মন্তব্য নিতান্তই ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা আর ভালোলাগার জায়গা থেকেই। আপনার লেখা miss করি বলেই বলা। আপনি অনায়াসে একে প্রলাপ ভেবে উড়িয়েই দিতে পারেন। তবে আমি নিশ্চিত, শুধু আমিই নই, আরও অনেকেই হয়তো আমার মতো আপনার কলমের সেই ম্যাজিক দেখার অপেক্ষাতেই আছেন।
ভালো থাকবেন।
★
তিরস্কার ২)
নজরুল লিখেছিলেন – “গুরু কন, তুই তরোয়াল দিয়ে করেছিস শুরু দাড়ি চাঁছা”! অরুণাচলদাও সেই কাজই করছেন। এর মধ্যে – খুব রূঢ় ভাষায় বলি – যতখানি না অরুণাচলদার ক্রোধ বা অ্যাক্টিভিজম মিশে আছে, তার চাইতে ঢের বেশি করে কাজ করছে আলস্য। কেননা, আপাতত অরুণাচলদা যেগুলো লিখছে, তা তিনি বাঁ হাত (হয়ত বাঁ পা দিয়েও) দিয়েই লিখতে পারেন, ন্যূনতম শ্রম বা হোমওয়ার্ক ছাড়াই লিখতে পারেন। অতএব…
শিল্পী-অ্যাক্টিভিস্ট যদি নিজের শিল্পের তুলি/কলম – যা তাঁর আসল অস্ত্র – সেটারই ধার নষ্ট করে ফেলতে থাকেন, তাহলে তাঁর বা অ্যাক্টিভিজম, কোনোকিছুরই ভালো হয় না। সার্ত্র ফয়েজ হিকমত নেরুদা লোরকা প্রমুখ তো অনেক দূরের উদাহরণ – ঘরের পাশে চিত্তপ্রসাদ বা সোমনাথ হোর-রাও কিন্তু নিজের শিল্পীসত্তা বিস্মৃত হননি।
★
কৈফিয়ৎ ১)
কোনওই ম্যাজিক নেই ঝাঁপিতে আমার
আস্তিনে নেই কোনও অলৌকিক তাস
যা রয়েছে… অপচয় কলরোল আর…
সাথে কিছু অসফল অসুস্থ প্রয়াস।
শুরু থেকে, তোমরা… ও আরও কতজন,
বুঝিয়েছে, তুইই সেই। বলে গেছে ওরা…
তুইই সেই দৈবাদিষ্ট, আমাদের বাজি
এবারের অশ্বমেধে… তুইই সেই ঘোড়া।
ভুল বুঝেছিল ওরা, আন্দাজের ভুলে
অহেতুকী ভালোবাসা আশায় আশায়
স্নেহ ভরা বিশ্বাসে… স্নেহের আঙুলে
বৃথা দান চেলেছিল… অলীক পাশায়।
এখনও কষ্ট পাও? এখনও কী আলো
ভেবে চলো। ভাবো বুঝি মেঘে ঢাকা ভানু?
এমন কী মৃত তারা, তাও নই প্রিয়!
তোমাদের মহাকাশে নিছকই গ্রহাণু।
★
অথবা তাঁর অক্ষম অনুকরণ করে বলি
কৈফিয়ৎ ২)
পুণ্য এই ফেসবুকে শূন্য অসফল
গ্যালারি শো কে দেখায়? সে অরুণাচল!
বাল্য থেকে এসএফআই, এটাই নিশান।
সেই আমি। আমাকে কি চেনো নি বিষাণ?
তোমাদের মন পেতে,( বাজে ফন্দি এ…)
বাঁ হাতে বাঁ পায়ে নয়, লিখি মন দিয়ে।
যতটুকু মেধাসাধ্য, ততটুকু লিখি।
তবুও তা মেধাহীন… কিছুটা প্রতীকী।
সে রকম অগ্নিরূপ প্রতিবাদ নেই।
অ্যক্টিভিস্ট? সে তো স্বপ্ন। কোনও স্বাদ নেই।
ক্রোধ নেই। রোদ নেই। হোম ওয়ার্ক হীন।
তাই দিয়ে ফেসবুকে থাকি অন্তরীন
আসলে প্রতিভা নই… শূন্য এ কলস।
পরন্তু পল্লবগ্রাহী এবং অলস।
তোমার প্রত্যাশা মত দিইনি কি শান?
“আমারে নির্মম চিত্তে তেয়াগো বিষাণ”।