(এ লেখাটির একটি সংক্ষেপিত অংশ – মেডিসিনের অংশ ছাড়া – ৪ নম্বর ওয়েবজিনে প্রকাশিত হবার কথা)
পিরিওডিক টেবিল এবং মৌলিক পদার্থদের সাথে মেডিসিনের গভীর সম্পর্ক নিয়ে একটি মনোজ্ঞ আলোচনা প্রকাশিত হয়েছিল কয়েক বছর আগে একটি নামী জার্নালে।[1] প্রবন্ধ লেখকেরা জানান – “মানব জীবনের ক্ষেত্রে পিরিওডিক টেবিলের মৌলদের ভূমিকা আমরা খুব সংক্ষেপে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি কোন কোন মৌল মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় এবং বুঝতে চেয়েছি, অন্য কোন মৌলগুলো ডায়াগনোসিস এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে বা ব্যবহার করা যেতে পারে।” কতকগুলো মূল্যবান ডায়াগ্রাম দেওয়া হয়েছে প্রবন্ধটিতে। সেগুলো একবার দেখা যাক।
(Ionic radii and hydration enthalpies of alkali metal ions. These key properties have a major influence on their different biological activities.)
(Zinc plays a role in controlling the mammalian circadian clock)
(Ionic radii of the halide ions and enthalpy of hydration)
(The 99mTcI complex used for SPECT (γ-ray) imaging of heart muscle. The complex was discovered in the laboratory of Alan Davison at MIT)
কার্যত, মেডিসিনের ব্যবহার, প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো এবং রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কেমিস্ট্রি এবং, আরও বিশেষ করে বললে, পিরিওডিক টেবিল ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। এমনকি সায়ান্স-এর মতো জার্নালে (ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ৪৭.৭৩) “মেডিক্যাল পিরিওডিক টেবিল” শিরোনামে বিশেষ প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে।[2]
নেচার-এর সম্পাদকীয় এবং এনসিইআরটি
এ জুন, ২০২৩-এ বিশ্ববিশ্রুত নেচার-এর পত্রিকায় (ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ৬৯.৮৩৪) একটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে – সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে।[3] সম্পাদকীয়র শুরুতেই বলা হয়েছে যে ১৯৭৬ সালে ভারতের সংবিধান সংশোধনের সময়ে স্পষ্ট করে শিক্ষার লক্ষ্য এবং দেশের মানসিকতার ভিত্তি হিসেবে জানানো হয়েছিল – “বিজ্ঞানমনস্কতার (scientific temper) বিকাশ ঘটানো, মানবতাবাদ এবং অনুসন্ধানের উদ্দীপনা এবং সে অনযায়ী সংস্কার করা।” এরপরে এই সম্পাদকয়ীতে কিভাবে বর্তমান ভারতে টেক্সট বই এবং সিলেবাস তৈরির নিয়ামক সংস্থা NCERT (National Council of Educational Research and Training)-এর তরফে “কোভিডের চাপে” সিলেবাসকে ‘র্যাশনালাইজ’ তথা যুক্তিযুক্ত করার জন্য ছোট করে ফেলা হচ্ছে তার বিবরণ রয়েছে। ভারতের প্রায় ১৩.৫ কোটি ১৪ থেকে ১৬ বছরের বাচ্চারা আর পিরিওডিক টেবিল, ডারউইন, বিবর্তনবাদ, পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব এবং বিকাশ নিয়ে গৃহীত আন্তর্জাতিক ধারণার কিছুই জানবেনা। কিন্ত ভারতের “নয়া শিক্ষানীতি” অনুযায়ী ভারত কালক্রমে মেধার বিকাশ এবং প্রযুক্তির প্রয়োগের মধ্য দিয়ে “বিশ্বগুরু” হয়ে উঠবে এমন প্রত্যয় জ্ঞাপন করা হয়েছে। যাহোক, নেচার-এর আলোচ্য সম্পাদকীয়তে অভিমত দেওয়া হয়েছে – “Researchers who study India’s education policy have told Nature that organizations that are critical of science are advocating for or influencing these changes to textbooks. They point to one organization in particular: the Rashtriya Swayamsevak Sangh, which has close ties to the ruling Bharatiya Janata Party.”
এছাড়াও সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে – ভারত একমাত্র উত্তর-উপনিবেশিক দেশ নয় যে পুরনো ঐতিহ্যকে সম্মান এবং স্বীকৃতি দেবার জন্য ক্রমাগত হাঁকড়-পাঁকড় করছে। এক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। সেদেশে ‘মাওরি পদ্ধতিতে’ শিক্ষা দেবার জন্য দেশ জুড়ে বেশ কিছু স্কুল বেছে নেওয়া হয়েছে যেখানে mātauranga Māori শেখানো হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, নেচার-এ এই সম্পাদকীয় ছাপার আগে NCERT-এর কাছে এ রকম পরিবর্তনের কারণ কি সে বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু NCERT-এর তরফে এর কোন উত্তর দেওয়া হয়নি। সম্ভবত প্রাপ্তি স্বীকারও করা হয়নি।
সায়েন্টিফিক টেম্পার
স্বাধীনতা-সংলগ্ন সময়ে নেহেরুর ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ শব্দবন্ধটি ছিল ‘সায়েন্টিফিক টেম্পার” অর্থাৎ একটি বৈজ্ঞানিক স্পৃহা বা মেজাজ যা করায়ত্ব করলে ভারত পরমাণুকে বোঝার এবং ভাঙার কাণ্ডারি হয়ে উঠতে পারবে। পশ্চিমী সভ্যতার তৈরি করে দেওয়া সিঁড়ি বেয়ে বিশ্বের দরবারে ভারত এর অস্তিত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।[4] যদিও ১৯৪৭ সালে ভারতীয় সায়ান্স কংগ্রেসে নেহেরু বিজ্ঞানের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছিলেন বিজ্ঞানীদের – “Science has two faces like Jnus: science has its destructive side and a constructive, creative side. Both have gone on side by side and both still go on. […] Hiroshima became a symbol of this conflict.”[5] ইটি আব্রাহামের পর্যবেক্ষণে – “ভারতীয় নাগরিককে প্রকৃত অর্থে আধুনিক হয়ে উঠতে গেলে তাকে বিজ্ঞানের নিয়মাবলীকে আত্মীকরণ করতে হবে, যাকে তথাকথিত ‘সায়েন্টিফিক টেম্পার’ বলা হয় এবং যা ছিল নেহেরুর ভারী ভালোবাসার বিষয়। কিন্তু স্পষ্টতই রাষ্ট্রের নিয়ম-কানুনের মধ্যে এই ‘সায়েন্টিফিক টেম্পার’ বিশেষভাবে এক্তিয়ারভুক্ত (amenable) হয়নি। রাষ্ট্র যেটা করতে পেরেছিল তাহল বিন্দু বিন্দু করে এই ধারণা তৈরি করা যে বিশালাকার, আধুনিক, সম্ভ্রম জাগানো (awesome) বস্তু তৈরি করা সম্ভব – বাঁধ, স্টিলের কারখানা, নতুন নতুন ঝকমকে শহর, নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর। এ বস্তুগুলো এক নতুন ধরনের যুক্তিবোধের জন্ম দেয়, যা ঐতিহ্যবাহী ল্যান্ডস্কেপকে রূপান্তরিত করবে, কেবলমাত্র এদের বিপুল ক্ষমতার বলে – এই আশা নিয়ে যে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল মানুষের মাঝে fetish হয়ে যাবে।”[6]
১৯৫৮ সালে ৪ মার্চ ভারতীয় সংসদে ‘সায়েন্টিফিক পলিসি রেজোলিউশন’ গ্রহণ করার সময়ে নেহেরু বলেছিলেন – “It is an inherent obligation of a great country like India with its traditions of scholarship and original thinking and its great cultural heritage, to participate fully in the march of science which is probably mankind’s greatest enterprise today.”[7]
একটু গভীরে ভেবে দেখলে আমরা কতকগুলো বিষয় সহজেই বুঝতে পারবো – (১) নেহেরুর অভীপ্সিত ‘সায়েন্টিকফিক টেম্পার’-এর মাঝে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে গ্রহণ করার তন্নিষ্ঠ আকাঙ্খা রয়েছে, (২) “বিশ্বগুরু” হবার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানের স্তরে ভারতকে নিয়ে যাবার আগ্রহ রয়েছে, যদিও বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের দিকে পাল্লা ভারী ছিল, (৩) এরকম আকাঙ্খার অভিমুখ সামনের দিকে, প্রাচীন ভারতের ‘গড়ে নেওয়া’ ছদ্ম বিজ্ঞানের কোন নিম্নমুখী টান নেই, (৪) তখনও অব্দি কৃষিনির্ভর এবং সামন্ত চেতনার সাথী একটি দেশে কিভাবে এই মেজাজ সমাজের নিম্নবর্গ অবধি পৌঁছুবে এ ব্যাপারে নেহেরু বিশেষ মনো্যোগী ছিলেন বলে মনে হয়না, এবং (৫) নেহেরু আধুনিক বিজ্ঞানের বন্ধু ছিলেন – অপবিজ্ঞান, ছদ্মবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা এবং জ্যোতিষচর্চার মধ্যেকা পার্থক্য ভালোভাবেই বুঝতেন। এদের সজ্ঞানে পরিহার করেছেন।
তিনি বিভিন্ন সময়ে সাথী হিসেবে সাথে পেয়েছিলেন (অনেক বিষয়ে মতান্তর সত্ত্বেও) প্রশান্ত মহলানবিশ, মেঘনাদ সাহা, হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা, বিক্রম সারাভাই, শান্তিস্বরূপ ভাটনগর এবং, সর্বোপরি, চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমনের মতো বিজ্ঞানীদের। এঁদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মাচরণ করলেও নৈর্বক্তিক, ধর্মমুক্ত এবং অনুসন্ধান-নির্ভর বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃৎ। এবং এদের লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের সঙ্গে বিজ্ঞানকে যুক্ত করা, ধর্ম বা প্রাচীনত্বের কৃষ্ণগহ্বর খুঁড়ে তুলে আনা কোন অতিকথা (মিথ) বা গল্পগাছা নয়। সে অর্থে ভারত তখন পশ্চিমী ধারণানুযায়ী প্রকৃত অর্থে সেকুলার পথে যাত্রা করছে।
ঐতিহাসিক এরিক হবসবম রাষ্ট্রের প্রয়োজনে ট্র্যাডিশন কিভাবে নতুন করে উদ্ভাবন এবং নির্মাণ করা হয় এ নিয়ে বলেছিলেন – “One marked difference between old and invented practices may be observed. The former were specific and strongly binding social practices, the latter tended to be quite unspecific and vague as to the nature of the values, rights and obligations of the group membership they inculcate: ‘patriotism’, ‘loyalty’, ‘duty’, ‘playing the game’, ‘the school spirit’ and the like.”[8] বিপুল বিনিয়োগ করে (সম্ভবত হাজার কোটিতে হিসেব হবে), কয়েক লক্ষ নিবেদিত, আগ্রাসী, হিংস্র এবং দক্ষ ক্যাডার সমগ্র ভারত জুড়ে এই দ্বিতীয় ধরনটি চারিয়ে দিচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে আইটি সেল এবং অনুগ্রহ-পুষ্ট মিডিয়া বাহিনী।
NCERT এবং বাদ-দেওয়া পাঠ্যক্রম
“List of Rationalised Content in Textbooks for Class X” শিরোনামে “আজাদি কা অমৃত মহোৎসব” (একটি পৃষ্ঠায় শুধু এ শব্দগুলো লেখা হয়েছে) শিরোধার্য করে মে ২০২২ (জৈষ্ঠ্য ১৯৪৪)-এ – যেমনটা পুস্তিকায় বলা হয়েছে – একগুচ্ছ গাইডলাইন ছাপা হয়। এখানে মনে রাখতে হবে, এ গাইডলাইন ছাপার আগে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক-অভিভাবিকা কিংবা দেশের মান্য শিক্ষাবিদদের সাথে কোনরকম আলাপ-আলোচনা বা পরামর্শ করা হয়নি।
যাহোক, আমরা এবার দেখি কি কি বিষয় – আমি আপাতত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবো, অন্য বিষয়গুলোতে নয় – বাদ দেওয়া হল সিলেবাস থেকে।[9] এর আগে কেন ‘র্যাশনালাইজ’ করা হল তার ব্যাখ্যা হিসেবে বলা হয়েছে – “In view of the COVID-19 pandemic, it is imperative to reduce content load on students. The National Education Policy 2020, also emphasises reducing the content load and providing opportunities for experiential learning with creative mindset.”[10] শেষে বোল্ড লেটারে লেখা হয়েছে – “This booklet contains information in tabular form about subject-wise contents which have been dropped and hence are not to be assessed.”[11]
বিজ্ঞানে চ্যাপ্টার ৫-এ ছিল “Periodic Classification of Elements” (পৃঃ ৭৯-৯২)। পুরো চ্যাপ্টারটি বাদ দেওয়া হয়েছে।[12] যে কোন শিক্ষিত সাধারণ মানুষ শিহরিত হবেন এই ভেবে যে, পিরিওডিক টেবিল বাদ দিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে কিভাবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন জটিল বিষয় আয়ত্ব করা সম্ভব। সহজ কথায় বললে, মৌলিক পদার্থদের পিরিওডিক টেবিল সমধর্মী চরিত্রের সমস্ত পদার্থকে একটি গ্রুপের মধ্যে রাখে। এর দরুন কেমিস্ট, ন্যানোটেকনোলজিস্ট এবং অন্যান্য শাখার বিজ্ঞানীদের কাছে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতিয়ার। যদি পিরিওডিক টেবিল ভালোভাবে বোঝা যায় এবং একে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে শেখা যায় তাহলে আগাম বলা সম্ভব যে রাসায়নিক যৌগের চরিত্র কেমন হবে। এক্ষেত্রে স্মরণে রাখা দরকার, মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার (১৮৩৫) পরের বছর কলেজের কেমিস্ট্রির শিক্ষক উইলিয়াম ব্রুক ও’শনেসি (যিনি ১৮৩১ সালে আবিষ্কার করেছিলেন যে স্যালাইন দিয়ে কলেরা রোগীকে বাঁচানো সম্ভব) তাঁর ক্লাসের শুরুতে ছাত্রদের কেমিস্ট্রি বোঝাতেন পিরিওডিক টেবিলের ৫৪টি মৌলের (তখনও অব্দি আবিষ্কৃত) চরিত্র বিশ্লেষণ করে।[13]
১৩ নম্বর চ্যাপ্টারে (পৃঃ ২৩২-২৩৭) “Magnetic Effects of Electric Current” অংশে পুরোপুরি বাদ গেছে “Michael Faraday 3.4 Electric Motor, 3.5 Electromagnetic Induction, 3.6 Electric Generator”।[14] মাইকেল ফ্যারাডে এবং বাদ-যাওয়া অংশগুলো বুঝতে, পড়তে, শিখতে এবং আয়ত্ত করতে না পারলে উচ্চতর শিক্ষার পরবর্তী ধাপে যে শিক্ষার্থী প্রবেশ করছে সে ফিজিক্সের বুনিয়াদি বিষয়গুলো বুঝবে কী উপায়ে? কেমিস্ট্রির ছাত্রই বা কি করবে? কোন পথে এগোবে?
চ্যাপ্টার ৯ – “Heredity and Evolution”, পৃঃ ১৪৭-১৫৮ – পুরো চ্যাপ্টারটি বাদ গেছে। পরিবর্তে “Chapter name replaced with: Heredity”। ১২ পৃষ্ঠার একটি চ্যাপ্টারে কি কি বিষয় বাদ গেল?[15] বাতিল হওয়া বিষয়গুলো হল – “Charles Robert Darwin, Origin of life on earth, How do fossils form layer by layer, Molecular phylogeny
9.3 Evolution
9.3.1 An Illustration
9.3.2 Acquired and Inherited Traits
9.4 Speciation
9.5 Evolution and Classification
9.5.1 Tracing Evolutionary Relationships
9.5.2 Fossils
9.5.3 Evolution by Stages
9.6 Evolution Should Not Be Equated With ‘Progress’
9.6.1 Human Evolution”
নজরে রাখতে হবে, পূর্বতন সিলেবাসে পরিষ্কার করে বলা ছিল – বিবর্তনের সাথে ‘প্রগ্রতি’কে এক করে দেখলে চলবেনা।
মেডিসিন ও বিবর্তন নিয়ে গত দু’দশক ধরে আন্তর্জাতিক বিদ্যাচর্চা ও গবেষণার জগতে বিপুল কাজকর্ম হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা জনস্বসাথ্য এবং রোগের বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে মেডিসিনের কার্যকরী ভূমিকা কি হবে। নতুন নতুন যে সমস্ত অণূজীবের উদ্ভব ঘটছে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে সেক্ষেত্রে বিবর্তনের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষের দেহের কোন বিশেষ জিন উপকারী ভূমিকা নিতে পারে কিনা – এ নিয়ে সুবিশাল কর্মকাণ্ড চলছে যার হদিস আমরা যথেষ্ট কম রাখি।
নেচার-এ প্রকাশিত প্রবন্ধে বলা হচ্ছে – “Genetic disease is a necessary product of evolution. Fundamental biological systems, such as DNA replication, transcription and translation, evolved very early in the history of life. Although these ancient evolutionary innovations gave rise to cellular life, they also created the potential for disease.”[16]
(Evolutionary events in both the deep evolutionary past and recent human evolution shape the potential for Disease – Courtesy: Nature)
NCERT আরেকটি বড়োসড়ো পরিবর্তন এনেছে পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে। ২ নম্বর চ্যাপ্টারে আলোচিত বিষয় ছিল “Forest and Wildlife Resources”। এ চ্যাপ্টারে “From second paragraph of ‘Flora and Fauna in India’ to ‘The Himalayan Yew in Trouble’ (পৃঃ ১৪-১৮) অংশটি বাদ গেছে।[17] যদি বন্যপ্রাণীর সাথে পরিবেশ এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মিথষ্ক্রিয়ার গুরুত্বই যদি শিক্ষার্থীরা বুঝতে না শেখে, যদি হিমালয় অঞ্চলে কি সম্পদ রয়েছে এর গভীরতা (সামান্য হলেও) না বোঝে তাহলে নতুন নতুন আইন করে বন-সম্পদ লুন্ঠন এবং জনজাতির অরণ্যের অধিকার হরণ করে কর্পোরেট কৃষি কি ভয়ংকর সর্বনাশ প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ডেকে আনতে পারে – এ সম্পর্কে কোন বোধই তৈরি হবেনা। উল্টোদিকে, নতুন সিলেবাসে (যদি ভবিষ্যতে না পালটায়) শিক্ষিত হয়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা সরাসরি এই লুণ্ঠন কর্মের সাথে যুক্ত হতে বিন্দুমাত্র বিবেকের দংশন অনুভব করবে না। আরেকটু প্রসারিত করলে এমনটাও হতে পারে যে, গ্রেটা থুর্নবার্গের পরিবেশ আন্দোলন ওরই বয়সী ভারতীয় তরুণদের কাছে অনুকম্পা এবং উপহাসের বিষয় হয়ে যাবে। কারণ নতুন সিলেবাসের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের পুনর্লিখন চলছে।
এ ধারণাকেই শক্তিশালী করতে এর সম্প্রসারিত রূপে রূপান্তরিত হল চ্যাপ্টার ৪-এর “এগ্রিকালচার” সংক্রান্ত অধ্যায়টি। ৪৩ থেকে ৪৬ পৃষ্ঠা অবধি বিস্তৃত এই অংশে কেটে/ছেঁটে ফেলা হয়েছে – “Contribution of agriculture to the national economy, employment and output, Impact of globalisation on Agriculture”।[18] কৃষির ওপরে গ্লোবালাইজেশনের প্রভাবের অংশটিই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। এ কথাই শিক্ষার্থীরা বুঝবে যে, এমন কিছু নেই বা আদপে এমন কিছু থাকতেও পারেনা। গ্লোবালাইজেশনের প্রথম ঢেউয়ে যে ‘সবুজ বিপ্লব’-এর সমারোহ হয়েছিল তার পরিণতিতে যে আজ পাঞ্জাবের ভাটিন্ডা থেকে রোজ রাতে “ক্যান্সার ট্রেন” ছাড়ে – এ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র বোধ তৈরি হবে কি করে?[19] এর কোন ইতিহাস, মানুষের মর্মন্তুদ যন্ত্রণা, রাষ্ট্র-মানুষ-পরিবেশ-কর্পোরেট-নতুন রোগের সৃষ্টির মাঝে যে সুগভীর আন্তঃসম্পর্ক আছে সে বিষয়ে এদের মাঝে কোন বোধই জন্ম নেবার কথা নয়, সম্ভবও নয়। সামাজিকভাবে এক সামগ্রিক ‘numbing of collective consciousness’-এর প্রতিটি দৃশ্যের আপাত-সফল চিত্রনাট্য রচিত হয়ে চলছে।
এর আগে বিবর্তন নিয়ে ছুঁয়ে গেছি। এ বিষয়ে এই ওয়েবজিনে এবং অন্যত্র অনেক আলোচনা হয়েছে। এ কারণে বিস্তৃত আলোচনায় যাচ্ছিনা। তবে কিছু কথা তো উঠে আসেই। NCERT-র এরকম সিদ্ধান্ত এবং সে অনুযায়ী বই ছাপা হয়ে যাবার পরে কলকাতা-কেন্দ্রিক “ব্রেকথ্রু সায়ান্স সোসাইটি”-র পক্ষ থেকে “অ্যান অ্যাপিল এগেইন্সট এক্সক্লুশন অফ এভোলিউশন ফ্রম কারিকুলাম”-এ (২০ এপ্রিল, ২০২৩) বলা হয় – “An understanding of the process of evolution is also crucial in building a scientific temper and a rational worldview. The way Darwin’s painstaking observations and his keen insights led him to the theory of natural selection educates students about the process of science and the importance of critical thinking. Depriving students, who do not go on to study biology after the 10th standard, of any exposure to this vitally important field is a travesty of education.
We, the undersigned scientists, science teachers, educators, science popularisers and concerned citizens disagree with such dangerous changes in school science education and demand to restore the theory of Darwinian evolution in secondary education.”[20]
এতে স্বাক্ষর করেছিলেন ৪০০০-এর বেশি প্রথম সারির বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানকর্মী এবং সামাজিক অ্যাক্টিভিস্ট। স্বাক্ষরকারীদের তালিকায় ২য় নাম রাঘবেন্দ্র গদগকর যাঁর আমার সাথে ব্যক্তিগত পরিচিতির বাইরের বিশেষ পরিচয় হল তিনি একজন প্রথমসারির জীববিজ্ঞানী। The Social Biology of Ropalidia marginata: Towards understanding the evolution of eusociality বইটির লেখক এবং বায়োলজিতে ভারত সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরষ্কারের প্রাপক। এছাড়াও জার্মানির অসামরিক ক্ষেত্রে সৃজনশীল কাজের সর্বোচ্চ সম্মান Order of Merit of the Federal Republic of Germany পেয়েছেন একজন ভারতীয় হিসেবে।
আমেরিকা থেকে প্রকাশিত সুবিখ্যাত সায়ান্স-এ ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল “In India, Hindu pride boosts pseudoscience” শিরোনামে। সে প্রবন্ধে বলা হয়েছিল, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে সবচেয়ে বহুল আলোচিত বিষয় “wasn’t about space exploration or information technology, areas in which India has made rapid progress. Instead, the talk celebrated a story in the Hindu epic Mahabharata about a woman who gave birth to 100 children, citing it as evidence that India’s ancient Hindu civilization had developed advanced reproductive technologies.”[21] অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি নাগেশ্বর রাও দাবী করেছিলেন, ভারতে মহাভারতের সময়ে, অন্তত ১০০০ বছর আগে, স্টেম সেল রিসার্চ অত উন্নত অবস্থায় না থাকলে গান্ধারীর ১০০ পুত্রের জন্ম দেওয়া সম্ভব নয়।
সায়ান্স-এর প্রতিবেদনটি থেকে আমরা জানতে পারি, বিজ্ঞান ভারতী বা VIBHA নামে আরএসএস-এর বিজ্ঞান সংক্রান্ত কার্যকলাপ চালানোর জন্য একটি বিশেষ শাখা রয়েছে। ২০১৯ সালের হিসেবে, ভারতের ২৩টি রাজ্যে এদের শাখা বিস্তৃত এবং ২০,০০০ সদস্য রয়েছে। ২০২৩-এ এসে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে কোন সন্দেহ নেই। ২০১৮ সালের জুন মাসে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী সত্যপাল সিং বলেছিলেন, ডারউইনের বিবর্তনবাদ একটি ধোঁকা এবং স্কুল পাঠ্যবিষয় হিসেবে একে মুছে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী – “Nobody, including our ancestors, in written or oral [texts], has said that they ever saw an ape turning into a human being”।[22] মোদ্দা কথা হল, আমাদের বাপ-ঠাকুরদা-চোদ্দো পুরুষ বাঁদর কখনও মানুষ হয়েছে, এমনটা চোখে দ্যাখেনি। ফলে এ কথাগুলো নিতান্তই অবাস্তব।
এ বক্তব্যকে সেদিন আমরা তাচ্ছিল্য করেছিলাম বা পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমরা ভুল করেছিলাম – গভীর ভুল। একটি মারাত্মক, সর্বাত্মক, প্রতিটি মানুষের চিন্তা কোশ অব্দি পৌঁছে যাবার এক সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থেকে ক্রমাগত এ কথাগুলো প্রচার করা হয়েছে। NCERT-র সিলেবাস পরিবর্তনের ফলে আমরা তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছি এখন – অনেকটা সময় পরে।
২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছে বানু সুব্রমনিয়ামের লেখা মোটের ওপরে বৃহৎ পুস্তক Holy Scienceঃ The Biopolitics of Hindu Nationalism। ভূমিকা এবং উপসংহার সহ মোট ৮টি অধ্যায়ে বিধৃত এই বইটির আলাদা করে চ্যাপ্টারগুলোর উল্লেখ করা। পাঠকেরা অনুমান করতে পারবেন কিভাবে পুস্তকে প্রতিপাদ্যের বিস্তার ঘটেছে – (১) “INTRODUCTION. Avatars for Bionationalism: Tales from (An)Other Enlightenment, (২) “Home and the World: The Modern Lives of the Vedic Sciences”, (৩) “Colonial Legacies, Postcolonial Biologies: The Queer Politics of (Un)Natural Sex”, (৪) “Return of the Native: Nation, Nature, and Postcolonial Environmentalism”, (৫) “Biocitizenship in Neoliberal Times: On the Making of the “Indian” Genome”, (৬) “Conceiving a Hindu Nation: (Re)Making the Indian Womb”, (৭) “CONCLUSION. Avatars for Dreamers: Narrative’s Seductive Embrace”, এবং (৮) “Epilogue. Finding India: The Afterlives of Colonialism”।
বইটির গুরুত্ব বিবেচনা করে নেচার-এ এর একটি রিভিউ প্রকাশিত হয়েছিল (২৫ জুলাই, ২০১৯) “সায়ান্স অ্যান্ড রাইজিং ন্যাশনালিজম ইন ইন্ডিয়া” শিরোনামে। এ রিভিউয়ে একটি গুরুত্ববাহী সতর্কবার্তা ছিল – কিভাবে প্রকৃত বিজ্ঞানীদের দাবী মিশে যেতে পারে হিন্দুত্ববাদীদের দাবীর সাথে – “Another of Subramaniam’s examples reveals that scientific and religious aims can merge, arguably more positively. The government-driven Sethusamudram Shipping Canal Project, which launched in 2005, aimed to dredge a passage through limestone shoals between islands off the coasts of India and Sri Lanka. Environmental scientists who protested against the destruction of this fragile ecosystem found themselves on the same side as Hindu leaders who see the site as sacred (the shoals feature in the epic poem the Ramayana, as a bridge built by the deity Rama and his army of monkeys). Ultimately, the Archaeological Survey of India, the Supreme Court and the parliament were drawn into the debate. Work on the project halted in 2009.”
পূর্বোল্লেখিত পুস্তকের শেষে লেখকের একটি পর্যবেক্ষণ রয়েছে – “It is disconcerting to track how easily Hindu nationalists appropriate South Asian history as Hindu history and how uncritically they embrace Western science as Vedic science in order to forge the idea of India as a Hindu nation and a global superpower. But I do not want to cede Hinduism to Hindu nationalism. Hinduism is a heterogeneous, diverse, polyvocal, and polytheistic religion that proves to be infinitely flexible and adaptable. There is no singular fundamental text, no singular religious authority, no singular code of conduct, no singular religious ritual, no singular religious practice, no singular god. Hinduism can also be seen as an assemblage of vibrant traditions, including ones that embrace nonviolent, pluralistic thinking and an idea of India as a multireligious, secular, democratic republic.”[23]
শেষ কথা
মেডিসিনের যে বিষয়গুলো সাথে NCERT-র ছেঁটে ফেলা অংশগুলোর আলোচনা করলাম পাঠকেরা আশা করি বুঝবেন যে কম শিক্ষিত এবং ভ্রান্তভাবে শিক্ষিত এ ধরনের শিক্ষার্থীরা যখন মেডিসিনের জগতে প্রবেশ করবে তখন মেডিসিন এবং মৌলিক বিজ্ঞান গবেষণার জগতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটা কি আমাদের কাম্য বা কাঙ্খিত? এজন্য আজ এ প্রশ্নে সমস্ত শিক্ষিত মানুষের একটি কণ্ঠে আপত্তি জানানো এত জরুরী।
অবশ্য যুক্তিচর্চার ভিন্ন একটি ধারণাও, ভারতের প্রেক্ষিতে, পৃথিবীর আরেক প্রান্তে বাস্তবায়িত হয়েছে। আমেরিকার উটা প্রদেশে elementary and middle schools থেকে বাইবেল-কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[24] কিন্তু “The 72,000-student Davis School District north of Salt Lake City removed the Bible from its elementary and middle schools while keeping it in high schools after a committee reviewed the scripture in response to a parental complaint.” অর্থাৎ, অভিভাবকদের আপত্তির পরে হাই স্কুলে বাইবেলকে পাঠ্যসূচীতে রাখার ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। আমাদের এখানে NCERT-র ক্ষেত্রে কি হবে? অভিভাবক এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনা ও মত বিনিময়ের ক্ষেত্রে কি ভাবছে NCERT?
আমাদের নিজেদের স্বর, ভাষা এবং বক্তব্যকে স্বাধীনভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য ভারতবর্ষে তৃতীয় পরিসরকে প্রসারিত ও জীবন্ত রাখা আজ বড়ো জরুরী – অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
_______________________
[1] Prinessa Chellan and Peter J Sadler, “The elements of life and medicines”, Phil. Trans. R. Soc. A 373: 20140182.
[2] Derek Lowe, “The Medical Periodic Table”, Science, 6 May 2013, accessed 4 June 2023 https://www.science.org/content/blog-post/medical-periodic-table
[3] “Why is India dropping core science topics from school textbooks?” Nature, vol. 618 (1 June 2023): 8.
[4] বিস্তৃত আলোচনার জন্য দ্রষ্টব্য, Itty Abraham, The Making of Indian Atomic Bomb: Science, Secrecy and the Postcolonial State (Delhi: Orient Longman, 1999).
[5] Ibid, 47.
[6] Ibid, 20.
[7] সুবোধ মহান্তি, “Nehru’s Vision and Scientific Temper”, Journal of Scientific Temper, 2016, vol. 4 (3&4): 154-166.
[8] Eric Hobsbawm and Terence Ranger, The Invention of Tradition (Canto Classics). Reissue, Cambridge, Cambridge University Press, 2012, p. 10.
[9] List of Rationalised Content in Textbooks for Class X (Delhi: National Council of Educational Research and Training, 2022).
[10] Ibid, 16.
[11] Ibid.
[12] Ibid, 18.
[13] জয়ন্ত ভট্টাচার্য, মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাস, ১ম পর্ব, ১৮২২-১৮৬০ (কলকাতাঃ প্রণতি প্রকাশনী, ২০২২)
[14] List of Rationalised Content in Textbooks for Class X, 19.
[15] Ibid, 19.
[16] Mary Lauren Benton et al., “The influence of evolutionary history on human health and disease:, Nature Reviews. Genetics, Vol. 22 (May 2021): 269-283.
[17] List of Rationalised Content, 20.
[18] Ibid.
[19] “The shocking tale of India’s ‘cancer train’”, Business Insider, June 10, 2016, accessed 4 June, 2023, https://www.businessinsider.in/the-shocking-tale-of-indias-cancer-train/articleshow/52690219.cms
[20] https://sucicommunist.org/an-appeal-by-over-4000-scientists-and-intellectuals-against-exclusion-of-darwins-theory-of-evolution-from-curriculum/, accessed 4 June 2023.
[21] Sanjay Kumar, “In India, Hindu pride boosts pseudoscience”, Science (15 February 2029): 679.
[22] Ibid, 680.
[23] Holy Scienceঃ The Biopolitics of Hindu Nationalism (Washington: University of Washington Press, 2019), 216-217.
[24] “Utah district bans Bible in elementary and middle schools due to ‘vulgarity or violence’”, Associated Press, 3 June 2023, accessed 4 June 2023 https://apnews.com/article/book-ban-school-library-bible-fc025c8ccf30e955aaf0b0ee1899608a.
Very seminal and thought provoking composition — true to Dr Jayanta’s wont — an undefatigable fighter for right causes , true to logic, and science; aa life lond sworn enemy of all kind of onscuratism , lies and deceptive manuvering to pu put wool in the eyes of Not Careful Countymen. Bravo Jayanta.
Thank you for a well thought and researched article. If the scientific minded or educated people in lndia don’t realise the impact of the new curriculum will have in future of lndia soon it will go back in dark ages of 1940s and 1950s , we are watching history- poor governance taking lndia backwards
Darun lekha.
Excellent
NCERT র কারিকুলামে ডারউইন ও বিবিধ মৌলিক বিজ্ঞানপাঠ বাদ নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পড়েছি। কিন্তু এ লেখা স্বতন্ত্র এর অভিমুখ ও মূল কারণ (root cause) খোঁজার ক্ষেত্রে।আসলে (নয়া) এক মেরুকরণের শক্তিশালী প্রয়াস রুখতে হলে বুদ্ধিজীব্যতাকে আলোড়িত করার মতো এরকম লেখা প্রচুর প্রয়োজন।
আমাদের সচেতন করার লেখকের নিরলস প্রচেষ্টাকে সম্মান জানাই। আমার বিশ্বাস, অবিদ্যা শেষ পর্য্যন্ত বিদ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, তবে জ্ঞানার্জনের প্রচেষ্টাকে সাময়িকভাবে দুর্বল করতে পারবে।
ধন্যবাদ ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য।
যে পাখী কুল খায় অরণ্য তারই,
যে পাখী জগতের জ্ঞান আহরণ করে, জগৎ তারই |
এই যে মাতোরাঙা মাওরী জীবনের দর্শণ, আজকের আওতেরোয়ায় (নিউজিল্যাণ্ডে) তার যথাযথ মর্যাদা অর্জন করতে দু শতাব্দীর ক্রমাগত টানাপোড়েন চলেছে। এবং এই জীবনের দর্শণের সঙ্গে ধর্মের কোন যোগাযোগ নেই | কিছুটা গল্প বা কল্পকথা রয়েছে বটে, তবে এ সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে মানুষ, প্রকৃতি, এবং তাদের পারস্পরিক যোগসূত্রের ভারি চমৎকার রূপকল্পনা এবং চিত্রায়ণের একটা ব্যাপার রয়েছে, কাজেই মাওরী জীবনদর্শণ এবং নিউজিল্যাণ্ড আর ভারতের নব্যফ্যাসিবাদী হিন্দু-অলাদের অবৈজ্ঞানিক কার্যকারণ প্রসূত শিক্ষার হদ্দমুদ্দ কে এক করে দেখার কোন যৌক্তিকতা নেই।
এই জায়গাটা সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য, কারণ দেখুন এখানে বিজ্ঞানকে দেখা হচ্ছে প্রযুক্তির আলোয়। এই যে প্রযুক্তিগত কলাকৌশলের fetishisation, এর একটা ভয়ঙ্কর রূপ আজকের দুনিয়ায়, বিশেষ করে ভারতে প্রকট হয়েছে। এবং এখানেই শেষ নয়, আগামী বেশ কয়েক বছর কৃত্রিম বুদ্ধি (Artificial Intelligence) এবং তৎসংলগ্ন প্রযুক্তি একটে ব্যাপক আকার ধারণ করবে, এবং যে সমাজে বৈজ্ঞানিক চেতনার উন্মেষ হয়নি, অথচ প্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে বহু অনভিপ্রেত সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে, যেখানে যন্ত্র মানুষের জীবন নির্ণায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে, এবং অলৌকিক পরালৌকিক বিষয় আশয় যেখানে মানুষের চিন্তায় প্রবল আকার ধারণ করেছে, যেমনটি ভারতবর্ষে ইদানীং সচরাচর দেখা যাচ্ছে, সেখানে মেশিন এবং অনিষ্টকারী মানুষের মেলবন্ধনে কি অপকার যে সম্ভব এবং কত মানুষের জীবন বিপন্ন হবার সমূহ সম্ভাবনা, ভাবলে খারাপ লাগে। কাজেই বিজ্ঞান চেতনা একসময়ে হয়ত অভিপ্রেত ছিল, সকলের পক্ষে অর্জন করা নাও হতে পারে এই চিন্তায়, আজকের দুনিয়ায় বাঁচার তাগিদে বিজ্ঞানচেতনার প্রয়োজন। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে আপামর জনসাধারণকে বিজ্ঞান সচেতন করতে হলে যেখান থেকে শুরু করতে হয়, সেই শিক্ষার ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় গলদ, যার কথা জয়ন্তদা লিখেছেন।
,