উলুবেড়িয়া মহকুমার চেঙ্গাইলে শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের প্রধান কেন্দ্র শ্রমিক কৃষক মৈত্রী স্বাস্থ্য কেন্দ্র। চলছে ১৯৯৫ এর ২১শে মার্চ থেকে।
গত ৮ই জানুয়ারি সোমবার ডাক্তারখানায় মোট রোগী হয়েছিল ১১২ জন। তাদের মধ্যে ২৪ জন ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলা থেকে। ১৫ জন নতুন রোগী আর ৯ জন পুরানো রোগী। পুরুষ ৯জন আর মহিলা ১৫ জন।
বছর ১৫ আগে শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে আমরা ঝাড়খণ্ডের ইউনাইটেড মিলি ফোরামের পাঠানো জনা ৬৫ ছেলে মেয়েকে দুমাস করে ট্রেনিং দিয়েছিলাম। তাদের কয়েকজন পাকুড় জেলার। দুবার আমরা মেডিকেল ক্যাম্প করেছিলাম পাকুড়ের পাশের জেলা গুমানিতে। তখন থেকে রোগী আসা শুরু।
আমাদের ক্লিনিকে পাকুড়ের যে রোগীরা আসেন সকালবেলায়, তাঁরা বাড়ি থেকে বের হন আগের দিন দুপুর বারোটা নাগাদ। রাতে হাওড়া স্টেশনে থেকে যেতে হয়, ভোরবেলা দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথের ট্রেন ধরে চেঙ্গাইল। দেখানো হয়ে যাওয়ার পর বিকেলে ট্রেন ধরে পরের দিন সকালে বাড়ি ফেরা।
রবিবার ক্লিনিকে ডাক্তার থাকে না প্রথম রবিবার ছাড়া, প্রথম রবিবার কেবল আই স্পেশালিস্ট থাকেন। এই ২৪ জন ভুল করে রবিবার চলে এসেছিলেন। ক্লিনিকে থাকার ব্যবস্থা নেই, তাই আবার হাওড়া স্টেশনে ফিরে গিয়ে থাকা আর সোমবার সকালে এসে ডাক্তার দেখানো।
আজ এই ২৪ জনের রেকর্ড ঘেঁটে দেখছিলাম কম্পিউটারের প্রোগ্রামে।
রোগ বিচারে:
১। উচ্চ রক্তচাপ-৭ জনের
২। ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ-২
৩। ডায়াবেটিস মেলাইটাস-১
৪। ইমপেয়ার্ড গ্লুকোজ টলারেন্স–২
৫। ক্রনিক রেনাল ডিজিজ–২
৬। ব্রঙ্কিয়াল এজমা-১
৭। থাইরয়েডের রোগ–১
৮। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস–১
৯। গ্যাস অম্বল বুক জ্বালা–৯
১০। ঘাড়ে ব্যথা–৭
১২। কোমর ব্যথা–১২
পাকুড় থেকে হাওড়া স্টেশনের দূরত্ব ২৭৩ কিলোমিটার, হাওড়া থেকে চেঙ্গাইলের দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। অর্থাৎ মানুষ চিকিৎসা পেতে ৩০৫ কিলোমিটার পেরিয়ে আসছেন। পেরিয়ে আসছেন মালদা বা বর্ধমান বা কলকাতা–
যেখানে বড় হাসপাতাল আছে, আধুনিক চিকিৎসার সুবিধা আছে।
কেন তা বোঝার চেষ্টা করছি।