Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

ঘর ফেরানোর অক্ষর-২

IMG_20200625_000248
Dr. Sabyasachi Sengupta

Dr. Sabyasachi Sengupta

General physician
My Other Posts
  • June 25, 2020
  • 6:28 am
  • No Comments

(আবার কিছুটা ব্যাখ্যা করা জরুরি। বিশেষত, ফেসবুক-লেখা যখন এইটি। বহু ব্যস্ততার কারণে উত্তর দিতে সমর্থ হই না ইদানিং মন্তব্যের। সে আমার উপেক্ষা নয়। সে আমার, সীমাবদ্ধতা মাত্র।
আর হ্যাঁ, আমি দুঃখী নই। বরং আমি সুখী। আমি আরো একবার প্রথাগত সমস্তকিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি– আমি ফিরব বাড়িতে। করোনা-কাল পেরোলেই। ইনশাল্লাহ, সত্যি হোক।)

সময়টা দ্বিপ্রহর। বেলা আনুমানিক একটা দেড়টা হবে। স্থান, বাঁকুড়া বাস স্ট্যান্ড।
আসানসোল থেকে সদ্য আগত একটি বাসের পায়দানি দিয়ে নেমে আসছিলেন এক প্রৌঢ়া। পরণে লাল পাড় টাঙ্গাইল। চোখে চশমা। বগলে ভ্যানিটি। ভদ্রমহিলা ইতিউতি চঞ্চল চোখে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন কাউকে। ছোটোছেলে। দামু। ভালো নাম শ্রীযুক্ত অনুপ কুমার রায়। বাসটি ভালো করে বাঁধবার আগেই নেমে গেছে তড়বড়িয়ে। বলে গেছে– তুমি এসো। ধীরেসুস্থে। আমি একটা রিক্সা ঠিক করি ততক্ষণ। ঠিক আছে?
তা সে ছেলে গেল কোথায়? গেল-টা কোনদিকে?

বেশি ক্ষণ খুঁজতে হলো না অবশ্য। প্রৌঢ়ার ডান পায়ের খয়েরি রঙের চপ্পলের তলদেশ বাস স্ট্যান্ডের প্যাচপ্যাচে কাদা আর চ্যাপ্টানো কমলালেবুর ভুতি ছুঁতে না ছুঁতেই, হাজির হলো দামু দ্রুতপদে। চোখদুটো ইষৎ উত্তেজিত। উত্তেজনা, দেহ ভঙ্গিমাতে।

আমাদের প্রৌঢ়া, অর্থাৎ শ্রীমতী আভা রায়, অর্থাৎ যাঁর বগলে ভ্যানিটি ব্যাগ, তাঁর এই কোল পোঁছা পুত্র সন্তানটিকে ধমক লাগাতে গিয়েও থেমে গেলেন হঠাৎ করে। — কী রে? কিছু হয়েছে? দামু?

শেষ পথটুকু দামু ছুট্টে চলে এলো কলার খোসা বাঁচিয়ে। বয়সের তুলনায় বড়োই রুগ্ন এবং শীর্ণ দেহ তার। অকালে শিরা ওঠা সেই হাতটি দিয়েই কশকশিয়ে চেপে ধরলো মায়ের ডান কব্জির সোনালি এইচ.এম.টি। তারপর ইশারা করলো ভ্রু ভঙ্গিমাতে।–ওই যে, ওই দিকে। দ্যাখো।

চড়া রোদ্দুর বাঁকড়োর। ডুমো ডুমো মাছি ভনভনে। দূরের দিকে তাকালে, কাঁপা কাঁপা মরীচিকার দৃষ্টিভ্রম হয় নেশাতুর। অজান্তেই কুঁচকে যায় মুখমন্ডল কিম্বা ভুরুযুগলের মাঝখানের ত্বকটি। আভাদেবী, দামুর ইশারা মোতাবেক সম্মুখে তাকিয়েও প্রথমটায় কিছু ঠাহর করে উঠতে পারলেন না জুত করে। অকিঞ্চিৎকর, অপরিচিত মুখ-সমন্বয় বাসযাত্রীদের। হাঁটছে, ছুটছে, কাশছে, খাচ্ছে, বকবকাচ্ছে। হইহই রমরমে বাঁকুড়ার মাচানতলা বাস স্ট্যান্ড। সহসা, এক্কেবারে শেষমাথায়, কোণার দিকটাতে একটি অবয়ব চোখে পড়লো। একটি যুবক, দাঁড়িয়ে আছে একটি দোকানের সামনে। আভাদেবী, মাথায় ঘোমটা টেনে নিলেন। নিজের অজান্তেই ডান হাতের পাতা দিয়ে মুছে নিলেন ঠোঁটের উপরের বুঁটি বুঁটি ঘর্মবিন্দু। তারপর দামুর দিকে মুখ তুলে তাকালেন নীরব জিগ্যাসু দৃষ্টিতে।—-“সে? তাই না?”

দামুর মুঠোর জোর বেড়ে গেলো দ্বিগুণ। মাথা ঝাঁকালো এলোমেলো চুলে দ্রুতবেগে। ফিসফিসিয়ে বললো–“দেখতে পেয়েছ? মা?” তারপর মুহূর্তখানিক থেমেই আবারও বললো পূর্ববৎ ফিসফিসানিতে–“যাবে? কিছু মনে করবে নাকি আবার..। যাবে তো চলো”

আভাদেবীর অতশত ভাববার তর সইল না। মুগ্ধ চোখে কেবলই তিনি দেখে যাচ্ছিলেন দূঊরে দন্ডায়মান যুবকটিকে। এটুকুও খেয়াল রইল না যে, পায়ে পায়ে এগিয়ে চলেছেন তিনি মন্ত্রমুগ্ধের মত সেইদিকেই। পিছন পিছন আসছে– দামু।

যুবকটির অবয়ব সুস্পষ্ট হচ্ছে ক্রমশ। হলুদ শার্ট। বেলবটম প্যান্টস। ঢেউ খেলানো চুল। হাতে, সিগ্রেট। যুবকটি আপন মনে বাম হস্তে ধরে রেখেছে একখানি পাতলা ম্যাগাজিন। ইংরেজি। সেটুকু দেখবার মত দূরত্ব কমে এসেছে এতক্ষণে। এতক্ষণে, যুবকটির সমস্তকিছু বড়ো সুস্পষ্ট। সুস্পষ্ট তার উদাসীন, উদ্ধত ভঙ্গি। সিগ্রেটের এক একটা টানে, কিংবা, এক হাতেই পাতা উল্টানোর এক একটা মোচড়ে, অথবা, বাঁ পা সামনে আর ডান পা একটু পিছনে করে দাঁড়ানোর ভঙ্গিমাতে, টগবগে ঔদাসীন্য ভরপুর।

তীব্র, ঝাঁঝালো, হট্টগোলের হযবরল হট্টমালায়, দাঁড়িয়ে আছে এক ছিলা টানটান চাবুক। যে যুবক এখুনি চাইলে ট্রাফিককে করে দিতে পারে স্তব্ধ। অথবা ঘেঁটি ধরে এনে দিতে পারে সুদিন।

আভাদেবী কাঁধ জোড়া আঁচল, শাড়ির কুঁচি, বেয়াদপ ঘর্মবিন্দু, এলোমেলো চুলের খোঁপা…সব ঠিকঠাক করে নিলেন। ধীরে ধীরে পাশে এসে দাঁড়ালেন সকুণ্ঠ। — বাবা…। ভালো আছো?

যুবকটি সম্ভবত নিমগ্ন ছিল ম্যাগাজিনের নিবন্ধে। স্বাভাবিক হতে সময় নিলো, স্বাভাবিকের থেকেও বেশ কিছুটা বেশি। ততক্ষণে দামুও হাজির হয়েছে পাশটিতে। বোকার মত দাঁত বের করে বলেছে– ভালো আছেন? দাদা?

পরবর্তী ঘন্টাখানিক কাটলো প্রায় দিবাস্বপ্নের মতো। রায়বাড়ীতে, অর্থাৎ বার্ণপুরের পুরানহাট নামক পাড়াতে যে বাড়ী খ্যাত ‘বিজয় ভবন’ নামে, সেইখানে, আলোচিত হতে থাকলো এই ঘন্টা খানিক মুহূর্তই বারংবার।

— জামাটা দেখেছিলে? মা? কেমন ইস্ত্রী করা?

— ম্যাগাজিনটা ইংলিশ! দেখেছিলি?

— আর কিরম কাঁটা চামচে দিয়ে মোগলাই কাটলো মা? আমি তো হাতে করেই… হি হি

— তুইও যেমন! বোকার মত চামচটা ফেলে দিলি কায়দা মারতে গিয়ে। ওর সঙ্গে তোর তুলনা?

— যাই বলো মা, মানু-টার ভাগ্য খুব ভালো! এরকম জামাই…

সেসব গল্প শুনতে ভিড় কমতো না কোনোদিনও। কমেনি, পরবর্তী এক বছরে। চৈতী, বুলবুলি, বুলা, শঙ্খমালা…এরা তখনও ফ্রক পরা গেঁড়িগুগলির ঝাঁক। মানু নামক মহিলার নিজস্ব এবং তুতো ভগিনীগণ। মদন, জয়, মেজদা, ন’দা, বড়দা, এরাও আর তখন কতটুকুই বা। কেউ কলেজ পেরিয়েছে। কেউ সদ্য ‘ইস্কো’ তে চাকরি। ভিড় জমাতো এরাই সকলে মিলে। ঠেলাঠেলি, হাসাহাসি, খুনসুটি, বদমাইশি।

মানুর বর সিগ্রেট খায়। মানুর বরের বেলবটম। মানুর বর ইংলিশ ম্যাগাজিন পড়ে। ইংলিশ ম্যাগাজিনে মেয়েদের ছবি।

তারপর তো বিয়ে।
মানুর সাথে সেই উদ্ধত এবং আপাত উদাসীন যুবকটির। নাম যার সেকেলে মার্কা– ‘রামশংকর’। রামুদা নামেই যে ক্রমশ বিখ্যাত হয়ে উঠবে শ্বশুরবাড়ি আর শ্যালক শ্যালিকা মহলে। পান চিবোতে চিবোতে যে যুবকটি, এগারো জন শালি, আর সাতজন শালাকে তুখোড় বৈঠকী চালে নিয়ে যেতে পারবে রিকশা ডেকে– চিত্রা সিনেমাহলে। সেখানে চলছে তখন, ‘কর্জ’ । হিট বই। মেরে উমর কে নওজওয়ানো। ফেরার পথে রেস্টুরেন্টে খাওয়াবে চাইনিজ। আদ্যন্ত কাঁটা চামচ-এ। গভীর রাতে আনাড়ি কানকে শুনতে শেখাবে বড়ে গুলাম আলির বন্দিশ। সক্কলের কাঁধ জড়িয়ে ধরে ঝকঝকে গ্রুপ ফটো, পর্দা ফেলা স্টুডিওতে।

তীব্র বিষাদে ডুবে যাওয়ার আগে পর্যন্ত, যে ‘রামুদা’ ছিল বিজয়ভবনের তরুণ তরুণীকুলের অক্সিজেন। সক্কলে মনে মনে চাইতো যাকে– এরকম যেন বর হয় আমারও। ভাবতো– এরকম একটি জামাই পাওয়া বড় ভাগ্যের কথা।

তো… এসবই শুনে যাচ্ছি আমি সেই তখন থেকে। কিছুটা শুনছি আর কিছুটা এঁকে নিচ্ছি মনে মনে। আমার বাঁ হাতের ঠিক পাশেই কাচের জানালাটা তুলে রাখা আদ্ধেকটা। তার উপর দিয়ে হাওয়া এসে চুল ওড়াচ্ছে ঝাপটা মেরে। ফলত, এখন আমার কপাল জোড়া টাক সুষ্পস্ট। চুলের গুছি সরে গেছে ডান দিকে।

আর ওই ডানদাকেই বসে আছে ‘মানু’র বর্তমান সংস্করণটি। ষাটোর্দ্ধ। বেঁটেখাটো। কোল কুঁজো। বসে আছে, আর নাগাড়ে বকবক করে যাচ্ছে। শুনতে আমার সেসব মন্দ লাগছে না যদিও। বস্তুত, সেই আঠারো বছর বয়সে বাড়ি ছেড়েছি আমি। মেডিক্যাল কলেজ, এম বি বি এস, ইন্টার্নশিপ, হাউজস্টাফশিপ, চাকরি…এসবের চক্করে বাড়ি ফেরা হলোই না আর কখনো। চেনাই হলো না বাবা ডাক পেরিয়ে রামশংকর নামের লোকটাকে। এক্ষণে তাই আমি সর্বদা বড় উৎকর্ণ থাকি। সদা জাগ্রত, সদা সচকিত, চকর সম । শেষ বিন্দু অবধি শুঁষে নিই তাবৎ কিছু। ফটো অ্যালবামে, ব্যক্তিগত ডায়েরিতে অথবা নিকটজনের স্মৃতি রোমন্থনের ভাষ্যে যতটুকু খুঁজে পাওয়া যায় ‘মানুষ রামশংকর’কে।

এ এখন আমার মস্ত বড় দায়। যত দিন যাচ্ছে, তত কেবলই আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে চমকে উঠছি আমি। আমার দিকে সরাসরি তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে আরেকটা রামশংকর। আমার অভ্যাস, আমার চলনবলন কিম্বা আমার জীবন যাপনে বদল ঘটছে ক্রমশ। ঘটছে, আমারই অজান্তে। আর প্রত্যেকটা বদল ঘটে যাওয়ার পর চমকে উঠে আবিষ্কার করছি আমি– আরো একটু বাবার মতো হয়ে গেলাম।

এসব নিছক কথার কথা নয় কিন্তু। এলোমেলো রোমান্টিক বিস্রস্ত কথনও নহে।
ছোট ছিলাম যখন, গাল টিপে লোক বলতো– মুখটি কি মিষ্টি! আর নাকটি দ্যাখো! বাপের মতো হয়েছে ঠিক!
এসব আমার ভালো লাগতো না। না এসব গালটেপা আদিখ্যেতা, না এইসব ন্যাকা চৈতন্য কথাবার্তা। আমি চুল উড়িয়ে অক্ষয়কুমার কিংবা গালে টোল ফেলে শাহরুখ হতে স্বচ্ছন্দ বোধ করতাম অনেক বেশী। স্বপ্ন দেখতাম রিখটার্সভেল্টের শঙ্কর অথবা জাঙ্কবোটের জামাতুল্লা হয়ে ওঠার। ভাতে ডালে জীবন কাটায়নি যারা। বাবা কিম্বা মা, কাউকেই ভালো লাগতো না আমার সেইভাবে। ভালো বাসতাম না বললে যদিও বড়সড় ভুল হবে। বাপ মাকে ভালোবাসাটা তো একটা শ্বাসবায়ুর মতো অভ্যাস প্রায়। ভালো তাই আলবাত বাসতামই। তবে তার চাইতে ঢের বেশি করতাম–অস্বীকার। আমি এদের কেউ না। আমি পৃথক। আমি ভিন্ন। আমি ক্লাস অ্যাপার্ট…আমি হঠ্কে। বুঝিনি, এসবও প্রকৃতির চক্রান্ত। জানতাম না– কলেজে ঢুকেই নিরুদ্দেশ হয়েছিল আমায বাবাও। হয়েছিল, বাবার লম্বা বাবরি চুল আর বাবার আগুণে রাজনীতি জীবন দুটোই বাবারও বাবা কেটে দিতে চেয়েছিল বলে।

এসব এখন জানছি। জানছি লোকমুখে। এবং আবিষ্কার করছি আশ্চর্য্য সব তথ্য।

চূড়ান্ত গরমেও রোদের উত্তাপ নিতে নিতে ঘুমের ঘোরে তলিয়ে যেতে ভালো লাগে এখন আমার। শীতে প্রতিরাতেই মুখে প্যাচপ্যাচে করে লাগাতে আরাম পাই এখন তেলালো ক্রিম। চান করেই চুল না আঁচড়িয়ে, হাতের ঝাঁকুনিতে জল ঝাড়তে ঝাড়তে আয়না দেখতে ভালো লাগছে আজকাল বড্ডো। দেবব্রততেই শান্তি পাচ্ছি ইদানিং রবীন্দ্রসঙ্গীতে। এবং ক্রমশ চূড়ান্ত বিষাদের দিকে তলিয়ে যেতে বড় মখমলি আমেজ আসছে এক পা আর আরেক পা।

অথচ, এর প্রত্যেকটাতেই আমি একদা হাসতাম। মুখভঙ্গী করতাম বিশ্রী। “রোদ্দুরের মধ্যে বসে বসে মুখ পোড়াচ্ছে দ্যাখো!” কিংবা ” দেবব্রতর রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও জগতে গান আছে। এ আর রেহমান..ইলাইয়া রাজা”
অথচ, সেই একই চক্রাবর্তে পড়ে যাচ্ছি আমি ক্রমশ। এবং ক্রমশ এইটা ভেবে নিতে গর্ববোধ হচ্ছে যে, আমি বাবার মতো হয়ে উঠছি একটু একটু করে।

মায়ের বকবক, তাই উপভোগই করছিলাম আমি বড্ডো। বাইরে তখন পটপরিবর্তন হয়েছে ভূপ্রকৃতি এবং পারিপার্শ্বিকের। শহর ছাড়িয়ে এসেছি বহুক্ষণ হলো। হঠাৎ হঠাৎ কিছু বেখাপ্পা শহরতলি বাদ দিলে দুদিক জুড়ে কেবলই আপাত বন্ধ্যা ভূ প্রকৃতি। আপাত, কারণ ঘাস আছে। ইতিউতি গাছ আছে। পাখি আছে। এমনকি পুকুরও আছে। মেঠো রাস্তা, একা দাঁড়িয়ে থাকা শিমুল বা ঝাঁক বেঁধে পুটুশ ফুলের ঝাড়… আছে সবই। নেই স্রেফ গ্রাম বাংলার শস্য শ্যামলা ভূমিরূপ। চাষ হলেও, হয়েছে খাপছাড়া রকম ভাবে।

আমার যদিও খারাপ লাগছিল না এতটুকু। জমির ঊর্বরতা পরখ করার মনন নেই আমার এক্ষণে। দীর্ঘকাল ভিটে ছাড়া, ভিনদেশী আমি। উত্তরবঙ্গে বাস করছি আজ প্রায় বারোটা বচ্ছর। চা বাগান আর নীলচে পর্বত শোভিত দিগন্ত দেখে দেখে হাঁফিয়ে উঠেছি। বুঝতে শিখেছি– পারিপার্শ্বিক, সে যতই সুরম্য হোক, নিশ্চিন্দির ফুরসত মেলে স্রেফ নিজের মাটিতেই। সে মাটি বন্ধ্যা হলেও ক্ষতি নেই।

সেই মাটি ডিঙিয়েই গাড়ি দৌড়াচ্ছিল মুরাডির দিকে। ডান পাশে মা। তারও ডানপাশে শুভ্রা। আর বাঁ পাশে ভলকে ভলকে ছুঁয়ে যাওয়া জানালা পেরোনো হাওয়া। আমি সে হাওয়াতে গোবর নিকানোর গন্ধ পাচ্ছিলাম। পচা খড়ের সুবাস। পরশ… রুক্ষ জননীর।

অ্যাক্সেলেটর দাবাতে দাবাতে হঠাৎ শুধালো ড্রাইভার—” মোবাইল্যে টুকু দেইখ্যে লিন ছার। জাগাহ্ টা পাঈরাইন্ যাবো লয়তো…”

আমি চমকিত হলাম। আমার মনে হলো যেন, বহুকালের হারানো স্ট্যাম্প কালেকশনের খাতা খুঁজে পেয়েছি আচম্বিতে! নিজের ভাষার প্রতিও এমত টান থাকে। বরকরার থাকে যে টান এতগুলো বছর পেরিয়েও! অথচ, ভাষা তো সেই একটাই। ভাষা তো সেই বাঙ্গালা-ই। অথচ…তবুও… পাঈরাহিন্ যাবো শুনলেই মনে হয় মাদুরে বসে গুড়ে ডুবিয়ে নরম রুটি খাচ্ছি আমি। বাবা বসে আছে ঠিক পাশটিতেই। বলছে– গুড় নিবি? আরেকটু? আর উবু হয়ে এক চামচে গুড় দিতে দিতে মা গজগজ করছে–” কৃমি হবে এবার…”

ভাষা এমন-ও কথা বলে?

আমি নিজের মনেই হাসতে হাসতে ভাবছিলাম– শেষমেশ বাড়ি ফিরেছি তাহলে ! ফিরে এসেছি আমি।
এবার, পুরোপুরি ফিরে আসতে হবে শিগগিরই।

মোবাইল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে উঠলো সেই মুহূর্তেই ধাতব কন্ঠে–” ইন ফাইভ হানড্রেড মিটারস, টেক দা লেফ্ট ক্রস রোড..”

*******

আশ্চর্যের বিষয়! ফেসবুক ট্যাগিং সাজেস্ট করছে– বাবার ছবিটা নাকি সব্যসাচী সেনগুপ্তর

PrevPreviousস্ক্যালপেল-৩
Nextবড় গল্পের শুরুNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

Memoirs of An Accidental Doctor: প্রথম পর্ব

July 6, 2025 No Comments

হঠাৎ আমার লেখাপত্রের এমন ইংরেজি শিরোনাম কেন দিলাম, তাই নিয়ে বন্ধুরা ধন্দে পড়তে পারেন। আসলে কয়েক পর্বে যে লেখাটা লিখতে বসেছি, এর চেয়ে উপযুক্ত নাম

“মরমিয়া মন অজানা যখন” মন এবং আত্মহনন নিয়ে ডা: সুমিত দাশের বক্তব্য

July 6, 2025 No Comments

Memoirs of a Travel Fellow Chapter 1: The local train

July 6, 2025 No Comments

“Medicine is a social science, and politics is nothing but medicine at a larger scale” – Rudolf Virchow I still remember the night I decided

মেডিকেল কলেজ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন- এর বিজ্ঞপ্তি: MCK_REJECTS_TMC

July 5, 2025 No Comments

৩রা জুলাই, ২০২৫ গতকাল, কলেজ অথরিটির আয়োজিত ডাক্তার দিবসের মঞ্চে উপস্থিত ছিল কুণাল ঘোষ, মানস ভুঁইয়ার মতো কুখ্যাত ব্যক্তি। এবং সেই মঞ্চে, একদিকে যেমন মানস

“মরমিয়া মন অজানা যখন” মন এবং আত্মহনন নিয়ে মনস্তত্ত্ববিদ শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য

July 5, 2025 No Comments

সাম্প্রতিক পোস্ট

Memoirs of An Accidental Doctor: প্রথম পর্ব

Dr. Sukanya Bandopadhyay July 6, 2025

“মরমিয়া মন অজানা যখন” মন এবং আত্মহনন নিয়ে ডা: সুমিত দাশের বক্তব্য

Abhaya Mancha July 6, 2025

Memoirs of a Travel Fellow Chapter 1: The local train

Dr. Avani Unni July 6, 2025

মেডিকেল কলেজ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন- এর বিজ্ঞপ্তি: MCK_REJECTS_TMC

Medical College Kolkata Students July 5, 2025

“মরমিয়া মন অজানা যখন” মন এবং আত্মহনন নিয়ে মনস্তত্ত্ববিদ শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য

Abhaya Mancha July 5, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

565383
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]