এক
সন্দেশখালির মানুষের এই আন্দোলন একটা পর্যায়ের পর কিছুটা স্তিমিত হবে কারণ গরীব মানুষদের পেটের ভাত জোগাড় করতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কায়িক পরিশ্রমের কাজে নেমে পড়তে হবে। সরকার বাহাদুর ও শাসক দলও পুলিশ, প্রশাসন প্রভৃতির মাধ্যমে এই আন্দোলনকে প্রশমিত করবে। অন্যান্য ইস্যু চলে আসবে এবং লোক সভা নির্বাচন ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলি ও মিডিয়া ব্যস্ত হয়ে পড়বে।
সংঘর্ষ এর সাথে নির্মাণ খুবই জরুরি। বরং বেশি জরুরি। ধ্বংস নয় গঠন প্রয়োজন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের নৈরাজ্যবাদী ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে এই অভিমুখটি অনুপস্থিত। সেদিক থেকে কিছু বুদ্ধিজীবী যে সন্দেশখালি আন্দোলনে নির্মাণের প্রশ্নটি উত্থাপন করেছেন তা খুবই প্রশংসনীয়।
তাঁদের বর্ণিত মার্কসবাদ নিঃসন্দেহে বিশ্ব বীক্ষ্যার একটি প্রধান অস্ত্র, কিন্তু কেবলমাত্র মার্কসবাদ ও বামপন্থীদের দিয়ে হবে একমত হওয়া যায়না। ফলিত সমাজতন্ত্রর ক্ষেত্রে রাশিয়া, চীন, কম্বোডিয়া, উত্তর কোরিয়া, পূর্ব ইউরোপ, বলকান দেশগুলি থেকে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বাম শাসনের অভিজ্ঞতা রীতিমত তিক্ত। অন্যদিকে মার্ক্সবাদের প্রয়োগের সময় থেকেই গত প্রায় দুশো বছর ধরে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও উন্নত জীবন ধারণের মানে পশ্চিম ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য। আবার যদি Human Development Index ধরি তাতেও গত ৫০ বছর ধরে স্ক্যান্দেনেভিয়ান দেশগুলি, সুইজারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপান ইত্যাদি দেশ সবচাইতে এগিয়ে। সুতরাং বিতর্ক ও সংকীর্ণতা এড়িয়ে সমস্ত ইতিবাচক চিন্তা, শক্তি ও উদ্যোগ কেই আমরা গ্রহণ করবো।
এবার প্রশ্ন আসবে কোন দুটি ব্লক তো দেশ ও রাজ্যের বাইরে নয়। এবার সেখানে যদি লগ্নি মুৎসুদ্দী পুঁজির বিদেশী কর্পোরেট – পারিবারিক একচেটিয়া বৃহৎ পুঁজি – লুম্পেন ও ফাটকা পুঁজি – মাফিয়া – দালালদের পরিচালিত দুটি সরকার থাকে এবং অর্থনীতি, পরিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সংস্কৃতি, সামাজিক কাঠামো সমস্ত কিছু ভেঙ্গে, শুধুমাত্র ধর্ম, বিভাজন, মিথ্যা প্রচার, আত্মসাৎ ও যৎসামান্য ডোলের আড়ালে, দেশ ও রাজ্যকে রসাতলে নিয়ে যায় তাহলে সর্বত্রই বগটুই, সন্দেশখালির অবস্থা কমবেশি হয়ে থাকবে। অন্যদিকে সন্দেশখালি বিচ্ছিন্নভাবে একাকী কোন কার্যকর নির্মাণের জায়গায় পৌঁছতে পারেনা।
একদম ঠিক কথা। কিন্তু এখানেই আমাদের অনুসন্ধান বা research question থাকবে যে এই সামগ্রিক পরিবেশ, পরিস্থিতি, প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধ তার মধ্যেই সন্দেশখালিতে কতটা pro – people, sustainable, eco-friendly, inclusive নির্মাণ ও প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব? চিরায়ত প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদ এবং বর্তমান সরকারি সুযোগ ও সংস্থান গুলি কাজে লাগিয়ে কিভাবে এক সৎ ও বিকল্প অর্থনীতি গড়ে গরীব ভূমিহীন জনজাতি, দলিত, মুসলমান, উদ্বাস্তু মানুষগুলিকে সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও শান্তির পরিবেশ দেওয়া যায়?
দুই
এই গঠন, নির্মাণ ও উন্নয়নে স্থানীয় মানুষ থেকে সরকারি দপ্তর গুলি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত, কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সমস্ত stake holders দের সামিল করতে হবে এবং স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এই অঞ্চলে একশো – সোয়াশো বছর আগে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের মুনাফার স্বার্থে তাদের সহযোগী কলকাতাস্থ অনুপস্থিত বাবু জমিদারদের মালিকানায় অত্যাচারী লাটদার প্রমুখরা ছোটনাগপুর থেকে জনজাতি এবং মেদিনীপুর থেকে মাহিস্য ও অন্যান্য দলিত ও পশ্চাদপদ কৃষি শ্রমিকদের এনে জঙ্গল হাসিল করে কৃষি কাজ শুরু করে ফসল ও খাজনা আদায় শুরু করে। এই দুটি সম্প্রদায়ের সাথে দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা ও দেশভাগের কারণে পূর্ববঙ্গর খুলনা প্রভৃতি অঞ্চল থেকে ১৯৪৬ – ৪৭ থেকে আরম্ভ করে উর্দু ইসলামি পূর্ব পাকিস্তানি পর্যায়ে ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধ অবধি ক্রমাগত আসা উদ্বাস্তু হিন্দু দলিত নমশূদ্র প্রভৃতি কৃষিজীবী সম্প্রদায় – এরাই হল এখানকার মূল জনসমাজ। পরবর্তী কালে অর্থনৈতিক কারণে ১৯৭১ এর পর থেকে আজ অবধি বাংলাদেশ থেকে এসে চলা মূলত গরীব মুসলমান কৃষিজীবী সম্প্রদায় এবং ১৯৭৯ তে মরিচঝাঁপি গণহত্যার পর দন্ডকারণ্য থেকে ফেরা পূর্ববঙ্গের দলিত উদ্বাস্তুদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে যাওয়া। এই পাঁচটি জনসমষ্টি, তাঁদের বংশধররা মিলেমিশে এখানকার জনসমাজ।
সঠিকভাবে ভূমি সংস্কার করে গরীব ও ভূমিহীন কৃষক এবং বর্গাদারদের মধ্যে ভূমি বণ্টন করতে হবে। পাটটা দিতে হবে। এবং মাফিয়াদের দখল করা জমি ফিরিয়ে দিতে হবে।
এখানকার এটেল মাটি উর্বর। আর বিগত একশো বছর ধরে আদিবাসী এবং মেদিনীপুর ও পূর্ববঙ্গের দক্ষ কৃষকরা তাঁদের কঠোর পরিশ্রমে এখানকার মাটির নোনাভাব কমিয়ে দু থেকে তিন ফসলি কৃষি জমিতে পরিণত করেছেন। প্রচুর জলাশয় খনন করে বৃষ্টির মিষ্টি জল ধরে পানীয় ও গৃহস্থালির জল ও জলসেচের ব্যবস্থা করেছেন। পাশপাশি মাছ চাষ । পুঁতেছেন প্রচুর দেশজ গাছ। ধান, আলু, সব্জি, নারকেল, সুপারি ইত্যাদি ভালো হয়। এই জলাশয় এবং বৃক্ষ গুলি সমবায়িক ব্যবস্থায় সংরক্ষণ ও সংস্কার করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আরও উন্নত, জৈব ও অর্থকরী চাষ, উৎপন্ন ফসল সংরক্ষন ও হিমঘর জাতকরণ এবং বাজারজাত করণ ও লাভজনক মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
যে জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে ভেড়ি হয়েছে তাতে এখন চাষ হবে না এবং জমির চরিত্র পরিবর্তন করতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাই সমবায় করে লাভজনক মাছ চাষের ব্যবস্থা করতে হবে। তাৎক্ষণিক মুনাফার জন্যে হেভি মেটাল যুক্ত সস্তা দূষিত খাদ্য ও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া বিষাক্ত ভেড়ির জলের বিপরীতে বিজ্ঞানসম্মত ও পরিবেশবান্ধব ভাবে ও জৈব পদ্ধতিতে চাষ করলে জলের মান ভালো থাকবে, উৎপাদন দীর্ঘস্থায়ী হবে ও আন্তর্জাতিক বাজার ধরা যাবে। ভেনামি, বাসা, সংকর মাগুর ইত্যাদির পরিবর্তে সাবেকি বাগদা চিংড়ি, ভেটকি, পার্শে, কৈ, শিং, মাগুর প্রভৃতি চাষে ফিরতে হবে। এর সাথে কাঁকড়া ইত্যাদি।
বড় জোত নেই তাই ডেয়ারি শিল্প না হলেও আধুনিক পদ্ধতিতে লাভজনক ছাগল ও শুয়োর পালন এবং পোলট্রি করা যেতে পারে। প্রতিটি বাড়ির ব্যাকইয়ার্ড পোলট্রিগুলির সাথে সরকারি দপ্তর ও বাজারের সংযোগ ঘটাতে হবে এবং হাঁস মুরগির বাচ্চা সরবরাহ, তাদের চিকিৎসা ও বিক্রির সুব্যবস্থা থাকতে হবে। মৌমাছি পালন একটা পেশা হতে পারে। ফুল, ওষধি, রেশম নিয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে। অর্থকরী ভাবে ফল, পান, নারকেল, সুপারি, খেজুর এবং তাদের সহযোগী (যেমন তেল, গদী) ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য (যেমন গুড়) উৎপাদন লাভজনক হতে পারে।
বিদ্যাধরী, বেড়মজুর, কলাগাছি, কালিন্দী, ডানশা, রায়মঙ্গল প্রভৃতি নদী বেষ্টিত এই অঞ্চলের ভূ প্রকৃতি, নদী বিজ্ঞান জানতে হবে। সঠিকভাবে বর্জ্য সংস্থাপন করতে হবে এবং নদী দূষণ রোধ করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট রুট ছাড়া প্রতিটি নদীপথ দিয়ে বাংলাদেশ যাওয়ার জাহাজ বিশেষ করে fly ash ভর্তি বার্জ্ চলা বন্ধ করতে হবে। রামফল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কি প্রভাব পড়ছে তাও দেখতে হবে।
সামগ্রিক বৃক্ষ নিধন ও পরিবেশ দূষণের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন এবং তদজ্জনিত ঝড়, জলস্তর বৃদ্ধি ও বাঁধ ভাঙা দক্ষিণের গোসাবা, বাসন্তী ও দক্ষিণপূর্বের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের মত না হলেও যথেষ্ট। আইলা জীবন্ত উদাহরণ। বাঁধ নিয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের বিভিন্ন মতামত। এর মধ্যে যেটি কার্যকর গ্রহণ করতে হবে। এই প্রসঙ্গে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে দ্য নেদারল্যান্ডস সরকারের সাহায্যে কাজগুলির অভিজ্ঞতা নেওয়া উচিত। আর এই রাজ্যে আবহমান কাল ধরে চলে আসা অসাধু নেতা – আমলা – ঠিকাদার চক্র পরিচালিত প্রতিবছর ভরা বর্ষায় বাঁধ মেরামতির নামে জনগণের অমূল্য অর্থ জলে দেওয়া বন্ধ করতে হবে। আর সব বিশেষজ্ঞই একমত নদীর ধারে ম্যানগ্রোভ ও ভেরিতার ঘাস পুঁতলে ভূমিক্ষয় রোধ হয় এবং ঝড় প্রশমিত হয়। সরকারি থেকে ব্যাক্তিগত স্তর অবধি লক্ষ লক্ষ ম্যানগ্রোভ পুঁতে বড় করে ভরিয়ে দিতে হবে।
এছাড়াও প্রতিটি পঞ্চায়েত অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট অংশের জমিতে সমবায়িক ব্যবস্থায় দেশী বৃক্ষের বনসৃজন করতে হবে। ফলে পরিবেশের উন্নতি হবে এবং কাঠ, মধু প্রভৃতি থেকে আয় হবে। Eco Tourism এবং Eco River Cruise & Eco Forest Tourism আরেকটি আয়ের উৎস হতে পারে। যেমনটি স্থানীয় কুটির শিল্প গুলি। নৌকা ও জলযান তৈরি শিল্প হতে পারে।
সমগ্র সুন্দরবন অঞ্চলের প্রধান তিনটি যানবাহন ভুটভুটি, ভ্যানো ও কাটা তেলের অটো অত্যন্ত পরিবেশ দূষণকারী। এগুলিতে ব্যাটারি প্রতিস্থাপন করতে হবে। সুলভ ব্যাটারি ও পর্যাপ্ত চার্জিং স্টেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অন্তর্গত গৃহে গৃহে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
ক্যানিং ও হাসনাবাদ টার্মিনাল ষ্টেশন দুটির উন্নতি এবং শিয়ালদা – ক্যানিং ও শিয়ালদা – হাসনাবাদ লোকালের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে ধর্মতলা – ধামাখালি ও ধর্মতলা – ন্যাজাট সরকারি বাসের সংখ্যা। ফেরি সার্ভিস ও ফেরি ঘাটের উন্নতি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে। বাস টার্মিনাস, ফেরি ঘাট, রেল ষ্টেশন, বাজার গুলিতে পরিচ্ছন্ন শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিন
একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ অভিবাসন কে অর্থনীতির সূচকের মান্যতা দেয়। যেখানে কৃষি বন্ধ্যা, অর্থনীতি স্তব্ধ, কাজ ও রোজগারের অভাব সেখানে কেরলে দৈনিক মজুরি দু হাজার টাকা পেলে মানুষ যাবেই। ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তর থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নজরদারি রাখতে হবে যাতে সেখানে গিয়ে তাঁরা কোন বিপদে পড়লে বা অসুস্থ হলে তৎক্ষণাৎ সাহায্য করা যায়। আর তাঁরা গৃহে ফিরলেই প্রথমে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে যাতে কোন সংক্রামক রোগ তাঁদের গৃহে ও এলাকায় না ছড়ায়।
পরিবার, সমাজ, পঞ্চায়েত ও প্রশাসন কে অত্যন্ত যত্ন নিতে হবে প্রতিটি কন্যা সন্তানের প্রতি যাতে তাঁরা পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা সম্পূর্ণ করে কোন কাজের সাথে যুক্ত হতে পারে, ১৮ বছরের আগে যেন বিয়ে না হয় এবং কোনভাবেই পাচার না হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানীয় কুটির শিল্প, হাতের কাজ, কারু শিল্প, মুড়ি চিড়া খই চিপস আচার জ্যাম জেলি ইত্যাদি চাল আলু ফল থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নারী স্বনির্ভর গোষ্ঠী ইত্যাদির উপর জোর দিতে হবে।
সম্প্রসারণ ও উন্নতির পাশপাশি বর্তমান স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে হবে সন্দেশখালির প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, আই সি ডি এস সেন্টার, বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কলেজ , গ্রামীণ হাসপাতালে যাতে পানীয় জল, শৌচাগার, বিদ্যুৎ থেকে বুনিয়াদি পরিকাঠামো যাতে ঠিকঠাক থাকে, ওষুধ ও মিড ডে মিল এর খাবার যাতে ঠিকঠাক পাওয়া যায় এবং চিকিৎসক, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিটি পোস্ট যেন পূর্ণ থাকে এবং তাঁরা যেন নিয়মিত উপস্থিত হন প্রশাসনিক ও সামাজিকভাবে নজরদারি ও যত্ন রাখতে হবে। কৃষি কলেজ, কারিগরী বিদ্যালয় ও মহিলাদের বিভিন্ন হাতের কাজ শেখানোর প্রতিষ্ঠানের কথা ভাবা যেতে পারে। প্রত্যন্ত অঞ্চল ও জনজাতি অঞ্চল হিসেবে উপস্বাস্থ্য, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, আই সি ডি এস সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে।
ক্যানিং ও বসিরহাট মহকুমা ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ও পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে যেমন নিশ্চিত করতে হবে সন্দেশখালি ও ঘোষপাড়া গ্রামীণ হাসপাতাল এবং হাটগাছিয়া, ন্যাজাট, কোরাকাঠি ও জেলিয়াখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলির পরিষেবা। এদের পরিকাঠামো ও শয্যা সংখ্যা বাড়াতে হবে। রাত বিরেতে জরুরি রোগী ও প্রসূতি দের জন্যে ফেরিঘাট গুলিতে অ্যাম্বুলেন্স ছাড়াও বোট অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এছাড়াও এই অঞ্চলে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করেন। সরকারি কাজের সাথে তাদের সুষ্ঠ সমন্বয় করতে হবে।
এগুলি হল কয়েকটি প্রাথমিক প্রস্তাব যেগুলি একটা সময়ে নিয়মিত সুন্দরবন ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল গুলিতে গিয়ে এবং ড. কুমুদ নস্কর প্রমুখ সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে সংঘবদ্ধ উদ্যোগ নিলে করা সম্ভব ও উচিত। এবার বিশেষজ্ঞ, ওখানকার বাসিন্দা, বিভিন্ন সংগঠন, পঞ্চায়েত, প্রশাসন এবং সরকার সিদ্ধান্ত নেবেন। আর এই মডেল সফল হলে তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট সহ পার্শ্ববর্তী সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ, গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি, মথুরাপুর, পাথরপ্রতিমা, নামখানা প্রভৃতি ব্লকে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
২৬.০২.২৯২৪