একটি শিশুর হৃদযন্ত্রের জটিল অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে অভিষেক ব্যানার্জি প্রচারের আলো পেতে চাইছেন। এতে কিঞ্চিৎ স্থূলরুচির পরিচয় থাকলেও অন্যায় বা অনৈতিক উপাদান খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সত্যিই তো উনি বিপন্ন শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বিষণ্ণ মা-বাবার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। এটা পড়ে চমকে যাবেন না, এটা তৃণমূলে নাম লেখানোর প্রিটেক্সট নয়।
সাধারণ নাগরিক হিসেবে এধরণের চ্যারিটি মার্কা কাজকর্ম আমাদের উলুত-পুলুত করে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাও দুটো প্রশ্ন থেকে যায়।
ওই সাধারণ নাগরিক হিসেবেই প্রশ্ন থেকে যায় যে শিশুসাথী, স্বাস্থ্যসাথী সহ নানান সামাজিক সুরক্ষাজালের যে সুবিপুল আয়োজনের ঢক্কানিনাদ শুনে আমাদের চক্ষুসজল হয়ে ওঠে তার সুযোগ এই শিশুটি পেল না কেন কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই? কা’দের অপদার্থতা?
দ্বিতীয় প্রশ্নটা কিঞ্চিৎ গুরুতর। শ্রেণী রাজনীতির একজন সমর্থক হিসেবে প্রশ্ন জাগে যে এমনটা আদৌ হবে কেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান যে আবিষ্কার করেছে তার সুযোগ সবাই পাবে না কেন। কেন তার প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে অভিষেক বা এক্স ওয়াই জেড বিত্তশালী ক্ষমতাশালী মানুষের দ্বারস্থ হতে হবে ওই শিশুটির মা-বাবার মতো দরিদ্র মানুষদের। কেন তাদের দয়া অনুকম্পা করুণা ভিক্ষে করতে হবে হাত পেতে বারবার। যে সমাজ ব্যবস্থা আমাদের দয়াভিক্ষু বানিয়ে দেয় তার প্রতি একরাশ ঘৃণা কেন জেগে উঠবে না আমাদের মনে। কিসের জোরে, ঠিক কোন বিশেষ যোগ্যতার জোরে অভিষেকদের মতো মানুষজন করুণা বিতরণের জায়গায় বসে আছেন আর কোন অপরাধে ওই শিশুটির মা-বাবা নেই? অভিষেকদের জয়ধ্বনি তোলার সাথে এটাও ভাবুন।