গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কি?
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হলো খাদ্যে উপস্থিত শর্করা কিভাবে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রার পরিবর্তন করতে পারে তার মান। গ্লুকোজের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ১০০ ধরা হয় এবং তাকেই ধ্রুবক ধরে অন্যান্য খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ঠিক করা হয়। যে খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত বেশি, সেই খাদ্য ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে বেশি তাড়াতাড়ি গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কত থাকা উচিৎ?
দেখা গেছে যে সব শর্করা জাতিয় খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫৫ এর কম, সে সব খাবার হজম আস্তে হয়, রক্তেও ধীরে ধীরে মেশে এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাও অনেক ধীর গতিতে বাড়ায়।
আর যাদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশির দিকে তারা রক্তের গ্লুকোজ খুব দ্রুত বৃদ্ধি করে। এই ধরণের খাদ্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত নয়। তবে খেলোয়াড় বা যারা অত্যন্ত পরিশ্রম জনক কাজ করেন, তাঁদের দ্রুত শক্তির চাহিদা পূরণ করার জন্য বেশি গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের শর্করা জাতীয় খাদ্য প্রয়োজন। তাছাড়াও হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সময় রক্তের গ্লুকোজ দ্রুত বৃদ্ধির জন্য হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্য খাওয়ানো উচিৎ।
কয়েকটি খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সঃ
ভাত= ৭৩
রুটি= ৫৪
বার্লি= ৩০
কর্নফ্লেক্স= ৮১
বিস্কুট= ৭০
ওটস= ৫৫
আলু= ৮৭
গাজর= ৮১
বিট= ৬১
অন্যান্য সবজী= ৪৮-৫০
সোয়াবিন= ১৬
আপেল= ৩৬
কমলা লেবু=৪৩
কলা= ৫১
আনারস= ৫৯
আম=৫১
তরমুজ= ৭৬
উপরের তালিকার দিকে তাকালে সহজেই বোঝা যাচ্ছে কেন ডায়াবেটিস রোগীদের আলু খেতে বারণ করা হয়। ভাতের থেকে রুটি খাওয়ার উপর কেন বেশি জোর দেওয়া হয়।
তবে সব বেশি গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাদ্য মানেই যে ডায়াবেটিসে নিষিদ্ধ তা নয়। যেমন গাজরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যথেষ্ট বেশি। কিন্তু এর ক্যালোরি ভ্যালু খুব কম।
১০০ গ্রাম গাজরে শর্করা থাকে মাত্র ৫.৭ গ্রাম। তাছাড়াও গাজরে অনেক পরিমাণে ফাইবার ও ভিটামিন থাকে। ১০০ গ্রাম গাজরে ক্যালোরি ভ্যালু মাত্র ২৮।
অন্যদিকে কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স গাজরের থেকে কম হলেও এর ক্যালরি ভ্যালু অনেক বেশি। ১০০ গ্রাম কলা = ৮৯ ক্যালরি। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের কাছে কলার থেকে গাজর বেশি গ্রহণ যোগ্য খাদ্য।
অতএব ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যতালিকা তৈরি করার সময় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ছাড়াও খাদ্যের ক্যালোরি, শর্করা, প্রোটিন ফ্যাটের অনুপাত, খাদ্যে ফাইবার ও নানারকম খাদ্য গুণের উপস্থিতির কথাও মাথায় রাখতে হবে।