সাতাত্তর দিন পরে একটা ভিডিও দেখে সবাই জেগে উঠলেন।
রাজ্যের মুখ্য বললেন, ‘ছিঃ!’
রাজ্যের পালক বললেন ‘সে কি!’
বিচারব্যবস্থা বললেন ‘সুও মটো’
বিরোধীরা বললেন ‘ধিক্কার’
দেশের প্রধান বললেন ‘সব ধরা পড়বে’।
ব্যাস, অমনি একহাজার পুতুলের মধ্যে একজন গ্রেপ্তার হয়ে গেলো..
সাতাত্তর দিন যাকে গ্রেপ্তার করার প্রমাণ পাননি পুলিশ,
লহমায় আজ সে হাজতে।
ধ্বস্ত মানবীরা তাঁদের ধর্ষিত সম্মান নিয়ে ধুঁকে বাঁচছিলেন রিলিফ ক্যাম্পে,
নিহত ভাই, নিহত বাবার স্মৃতি বুকে আগলে।
তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাংবাদিকেরা,
তাঁদের কথা জানেন তথ্য অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা,
শুধু কেন জানি পুলিশই বয়ান নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।
সাতাত্তর দিন পরে, শেকলমুক্ত হয়ে অবশেষে তাঁরা চেঁচালেন ‘হালুম!’
সুতরাং হে আমার সহনাগরিকগণ,
সর্বদা দেখে নেবেন আপনাদের মোবাইলের ব্যাটারিতে
যেন চার্জ থাকে।
যে কোনো দুর্ঘটনায়, যে কোনো আক্রমণে,
রাজনৈতিক বা ধর্মীয় অত্যাচারে
নিপীড়িত মানুষের কথা আর কেউ শুনতে চাননা,
তাঁরা প্রমাণ চান।
দেশ এত ভালো আছে,
সেটাই নাকি কিছু মানুষের সহ্য হচ্ছে না।
আপনার কন্যার শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণ হোক।
কিছু তো করতে পারবেন না,
তাই বাধা দেবেন না, ভিডিও করুন।
আপনার বাড়ি দুম করে কিছু দুষ্কৃতী হামলা করুক,
বুড়ো বাপের কপাল ফাটিয়ে দিক মেরে,
কলেজ পড়ুয়া ছেলেটাকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দিক,
টুঁ শব্দ করবেন না। ভিডিও করুন।
এমনকি আপনি নিজে খুন বা ধর্ষিত হলেও মোবাইলে সেই মুহুর্তের ভিডিও করতে ভুলবেন না।
কেমন করে করবেন সেটা আপনার ব্যাপার, কিন্তু করুন।
তাহলে হয় তো সাতাত্তর দিন বা মাসের পরে
কেউ এসে আপনাকে বলবে ‘আহা! কষ্ট হয়েছিলো খুব?,
এখনো কি ব্যথাট্যাথা আছে?’
এই চারটে নড়বড়ে থামের দেশে,
ভিডিও ছাড়া নাগরিকের হাতে অবলম্বন বেঁচে নেই আর।
অবশ্য সেটা বেশিদিনের জন্য নয়, এটাও আপনাদের জেনে রাখা দরকার।
‘শান্তি’ ভঙ্গের জন্য, শুনেছি নোটিস গেছে। ক্ষমা চেয়ে পেছোবেন ঠিক ট্যুইটার।