পুরুষতন্ত্রে পুরুষযন্ত্র পুজো করাটাই দস্তুর।
সাম্যের বোধ থেকে সে ধারণা মোটামুটি লাখ ক্রোশ দূর,
মাঝে মাঝে তবু ভিডিও ছড়ালে লজ্জা পায় সে ভারী,
হাজার পুরুষ সবার সামনে নগ্ন করেছে নারী..
আরে ধ্যাত্তেরি, তুমি কি ভাবছো লজ্জিত ধর্ষণে?
ওটা স্বাভাবিক, নারীই করায় যৌন আকর্ষণে,
লজ্জাটা হলো ভাইরাল হওয়া, সে যে কতখানি হীন,
সেটা যে জানালো পুরুষতন্ত্র তাকে দোষে রাতদিন।
বস্ত্রহরণ শিখে সে নিয়েছে মহাভারতের থেকে,
কাজেই খুঁজছে মহান ভারতে বিদুর রয়েছে কে কে।
ধরা পড়ে গিয়ে পুরুষতন্ত্র পুরুষযন্ত্র লুকিয়ে,
ভাবে আপাতত দিতে হবে কিছু লজ্জার দাম চুকিয়ে।
কাজেই ঘোষণা হয় বড় বড়, ‘ধরবোই সব ব্যাটাকে’
ফাঁসি দেবো বলে হুংকার দিয়ে কেউ চলে যান অ্যাটাকে,
সকলেই জানে প্রমাণিত হলে তবু ফাঁসি এতে নৈব,
জামিনও জুটবে কিছুদিন পরে সহায় থাকলে দৈব,
পুরুষ পুলিশ, পুরুষ উকিল, যেদিকে দেখবে পুরুষই,
পুরুষযন্ত্র নারীর শরীরে চিহ্ন ফেলুক যা খুশি
পুরুষতন্ত্র বরাবরই তাকে ভাববে ভীষণ ফেলনা
মাতা নারী আর বারবধূ নারী, সবই পুরুষের খেলনা,
পুরুষ চাইলে নারীটি মহান, পুরুষ চাইলে নোংরা,
তকমা দেওয়ার অধিকারী সে যে, করবে কি নারী তোমরা?
সুতরাং প্রায় আশি দিন পরে যত কেউ হোক গ্রেপ্তার
দেশ দেখবে না সংখ্যায় কমে দৈনিক ঘটা রেপ তার,
কারণ এখানে ব্রিজভূষণেরা পাবেই জামিন জলদি,
মালা পরে ফটো বাইরে বেরিয়ে, মাথায় তিলক হলদি,
যারাই দেখেছে তারাই বুঝেছে আসলে কী হয় কেসটা,
লুটে নিয়ে মজা মেয়েগুলো বলে ‘শ্লীলতাহানির চেষ্টা’,
আরে বাবা এটা পুরুষধর্ম, যন্ত্র করবে ছোঁকছোঁক,
খামোখা যে কেন মেয়েগুলো সেই প্রেম দেখে ভাবে ধর্ষক!
ওদিকে আবার ‘ভালো’ ব্যবহারে বাবাজী বেরোন প্যারোলে,
না জানি ক’জন ওপরমহলে রয়েছেন তাঁর পে-রোলে,
ভাজা মাছ উনি উল্টে খান না, রাম রহিমের দিব্যি,
আহা ধর্ষিতা, কবে আর তোরা মানুষ চিনতে শিখবি,
ওনার স্পর্শে কত না ক্ষমতা, তোদের নালিশে দম কম,
কেন ধর্ষণ বলে ভাবছিস দেবতার সাথে সঙ্গম,
ওই দেখ আজ বাবাজীর কাছে হাজির হোমরা-চোমড়া,
ওঁর কাছে আছে ভোটে জেতাবার ঈপ্সিত প্রাণ-ভোমরা।
পুরুষতন্ত্র পুরুষযন্ত্র ভারী পবিত্র মানে,
মাঝে মাঝে শুধু ভাইরাল কোনো খবর ঢুকলে কানে,
লজ্জা ঢাকতে দুই একখানা মোরগাকে ধরে আনে।
সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ঘুরে থাকা বিলকিস সেটা জানে।