কয়েকদিন আগে এসএসকেএম হাসপাতালে একজন প্রাক্তন মন্ত্রী এসে যে কাজটা করেছেন, সত্যি বলতে মন জিতে নিয়েছেন একজন মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে এসে বেড না পেলে একজন সাধারণ মানুষের যে আক্রোশ সেটাকেই উনি মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেছেন, সেটার জন্যেই ওনাকে কুর্নিশ জানাই
কিন্তু সমস্যা হলো উনি তো বিধায়ক, একজন প্রাক্তন মন্ত্রী- অর্থাৎ উনি সরকারের মুখও। সুতরাং কোনো একজন রোগীর ভর্তি হওয়া বা না হওয়া নিয়ে ওনার এই বিষোদ্গার কি শোভনীয়? বাকি রোগীদের জন্যে ওনার দায়বদ্ধতা কোথায়! উনি কি জানেন না রোজ ঠিক কত সংখ্যায় রোগী সরকারি হাসপাতালে বেড না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ায়? উনি কি জানেন না এখনো সরকারি হাসপাতালের বেড সংখ্যা জনসংখ্যার নিরিখে অপ্রতুল? হয়তো জানেন না, কিন্তু এই রোগীর বাড়ির লোকেরা বিলক্ষণ জানেন, তাই আসার আগে ওনারা প্রাক্তন মন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছেন- বকলমে উনি হয়েছেন ‘দালাল’, যে দালালচক্রের বিরুদ্ধে এত শোরগোল।
Let’s face the fact, সরকারি হাসপাতালে একজন রোগী অন্য কাউকে বঞ্চিত করেই ভর্তি হন। পিজি হাসপাতালের পাশে আরেকটা পিজি দাঁড় করিয়ে দিলেও সব রোগী ভর্তি করা অসম্ভব, এটা একটা open secret- আর এটাকে কেন্দ্র করেই এত আয়োজন।
সরকার সব মানুষের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিক। যে কোনো সময়ে, যে কোনো রোগীর চিকিৎসার সুব্যবস্থা সরকার করুক- এই দাবি তুলে এতগুলো কথা হলে সেটা অবশ্যই সমর্থনযোগ্য হতো। কিন্তু আমার রোগী কেন ভর্তি হলো না, তার জন্য রয়্যাল স্ট্যাগ ‘পড়ে’ আমি মাস্তানি করবো, সেটা মনে হয় বাংলাতেই সম্ভব- কারণ আমরা এগিয়ে
গাছতলায় ভেন্টিলেটেড রোগীর চিকিৎসা হয়না, টিকটক করে সেটা জানা সম্ভব নয়। বিধায়ক কেন রোগী ভর্তির জন্য ‘দালালি’ করতে এসেছেন সেই প্রশ্ন আমরা তুলতে ভুলে গেছি। উপরন্তু এসএসকেএমের যে চিকিৎসকের নামে উনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন, তা নিয়ে উনি হয়তো কিছু বলবেন না, কারণ আমরা জানি কুকুরে কামড়ালে উল্টে কুকুরকে কেউ কামড়ায় না। কিন্তু শত শত ডাক্তারি শিক্ষানবিশের হাতেখড়ি যাঁর হাত ধরে, তাঁর এই অপমান হজম করতে বেশ কষ্টই হলো।
যাইহোক মা-মাটি-মানুষের এগিয়ে থাকা বাংলায় এসব ছোটখাটো ব্যাপার হয়েই থাকে, পরদিন আবার উনি বাধ্য ছেলের মতো চুপটি করে বসেও গেছেন- চামড়াটা পেটের মতোই মোটা কিনা!!