মেডিকোর পরে যখন সবচেয়ে প্রচলিত শব্দ লিগাল হয়,
আর হাসপাতালের আগে সব চেয়ে পরিচিত তকমা কর্পোরেট,
তখন ডাক্তারিতে আর সহমর্মিতা থাকে না। নথিতে জড়িয়ে থাকে মামলার ভয়,
টাই পরা হ্যান্ডলার অদৃশ্য বকলসে টান দিয়ে বলে যায় ,
এই মাসে কত টার্গেট।
মেডিকেল কলেজের আগে যখন শতকরা পঞ্চাশে প্রাইভেট কথাটির ছড়াছড়ি,
প্রবেশিকা-উত্তীর্ণ ভাগ্যবানদের মাথায় যখন দুটো কথাই ঘোরে, কোটি আর কোটা,
তখন শুরু থেকেই মেধা লাস্ট বেঞ্চার। এখানে সর্বপ্রকার তেল মাখতে ফেলতে হবে কড়ি,
অথবা দেখাতে হবে নিপীড়িত পূর্বজদের শতাব্দীপ্রাচীন নথি, সাথে ফ্রী সহপাঠীদের খোঁটা।
পেশার শুরুর দিন থেকে যখন প্যাথোলজি সেন্টার আর ওষুধের কোম্পানির ঘুষের ব্ল্যাংকচেক লেখা,
আর উল্টোদিকে জনমোহিনী সস্তা চিকিৎসা-পরিষেবায় দেশের ন্যুনতম মজুরিরও কম ডাক্তারের প্রাপ্য,
সেখানে পরিস্থিতি নেই কোনো নবীন ডাক্তারের সেবা আর সততার বানান শেখার,
এক আদ্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেমে একটা প্রশ্ন করা বারণ,
‘ আমরা আর ঠিক কতটা নিচে নামবো?’
এই মেধার কবরস্তানে, সততা’র মানে বোকামি শেখানো দুনম্বরী যুগ যখন কালো টাকায় বুঁদ,
তখন রোজ হাজার হাজার বোকা অক্লেশে খেঁকিয়ে ফিরিয়ে দেন প্যাথোলজির কমিশন,
আশ্চর্যজনকভাবে গরীব রোগীর জন্য জোগাড় করে ফেলেন হাসপাতালের খরচ আর ওষুধ,
একটু দামী ওষুধ বা মহার্ঘ পরীক্ষা লিখতে আজও এঁরা কুণ্ঠিত ভীষণ।
এতে সিস্টেমের কোনো ভূমিকা নেই, এসবই ওই বোকা মেরুদণ্ডীগুলোর ব্যক্তিগত মূল্যবোধ,
এতে রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্ত্ব বা নজরদারি নেই, স্বচ্ছতার চেষ্টা সেখানে স্রেফ ভণ্ডামির মুখোশ,
স্বপ্ন বহুকাল ভেঙে গেছে , তবুও কেমন করে এঁরা আঁকড়ে রয়েছেন আজও হিপোক্রেটিসের শপথ,
কম রোজগারে ঢিকিয়ে ধ্যাধ্ধেরে সংসার চলে, তবু ঘুষ ছেড়ে দিয়ে নেই আফশোষ।
খুব একটা বিরল নয়,
এখনো দেখা যায় এঁদের চারপাশে। লোকমুখে ঘোরে হাতযশ..
আশা করি জানিয়েছো শুভেচ্ছা তাঁদের কাউকে এই ডাক্তার দিবস।